<p style="text-align: center;"><strong>সমাস</strong></p> <p><strong>প্রশ্ন : সমাস কাকে বলে? বাংলা ভাষায় সমাসের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করো।</strong></p> <p><strong>উত্তর : </strong></p> <p>সমাস : সমাস একটি সংস্কৃত শব্দ। এর অর্থ একাধিক পদের এক পদে মিলন, সংকোচন বা সংক্ষেপণ। পরস্পর অর্থসংগতিপূর্ণ দুই বা ততোধিক পদ মিলে এক পদে পরিণত হওয়াকে সমাস বলে। যেমন—সিংহ চিহ্নিত আসন = সিংহাসন।</p> <p><strong>বাংলা ভাষায় সমাসের প্রয়োজনীয়তা :</strong> বাংলা শব্দ গঠনে সমাসের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বক্তব্যকে সংক্ষেপ করার মাধ্যমে ভাষায় সৌন্দর্য ও মাধুর্য বৃদ্ধি করে সমাস। বাক্যের মধ্যে অনাবশ্যক পদের ব্যবহার না করে সমাসবদ্ধ পদের ব্যবহারের মাধ্যমে বক্তব্য বিষয়টিকে সুন্দরভাবে প্রকাশ করা হয়। ফলে ভাষা হয় সংক্ষিপ্ত, শ্রুতিমধুর ও প্রাঞ্জল। যেমন—‘চার রাস্তার সমাহার’ না বলে ‘চৌরাস্তা’ বললে তা অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত ও শ্রুতিমধুর হয়।</p> <p>নিচে সমাসের প্রয়োজনীয়তা সহজভাবে আলোচনা করা হলো—</p> <p>১. সমাস বাক্যের অর্থ সাবলীল ও সহজ করে তোলে।</p> <p>২. গুরুগম্ভীর ভাবধারাকে যথার্থভাবে প্রকাশে সমাসবদ্ধ পদ ব্যবহৃত হয়।</p> <p>৩. নতুন শব্দ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সমাসের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।</p> <p>৪. অল্প কথায় অধিক ভাবকে প্রকাশের জন্যও সমাসের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।</p> <p>৫. সহজভাবে উচ্চারণে সমাস সহায়তা করে ও ভাষাকে প্রাঞ্জলতা দান করে।</p> <p>৬. সমাস ভাষায় অর্থদ্যোতনার সৃষ্টি করে বৈচিত্র্যময় দ্যোতনা এনে দেয়।</p> <p>৭. সর্বোপরি ভাষা সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল করাই সমাসের কাজ।</p> <p> </p> <p><strong>প্রশ্ন : সন্ধি ও সমাসের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো।</strong></p> <p><strong>উত্তর :</strong> নিচে সন্ধি ও সমাসের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করা হলো—</p> <p><strong>সন্ধি :</strong></p> <p>১. পাশাপশি দুটি ধ্বনি বা বর্ণের মিলনকে সন্ধি বলে। যেমন—বিদ্যা+আলয়=বিদ্যালয়।</p> <p>২. সন্ধিতে প্রতিটি শব্দের অর্থ বজায় থাকে।</p> <p>৩. সন্ধির মিলন মূলত উচ্চারণগত বা ধ্বনির মিলন।</p> <p>৪. সন্ধিতে পদের বিভক্তি লোপ পায় না, বরং সংকুচিত হয়।</p> <p>৫. সন্ধিতে শব্দগুলো ক্রমপরিবর্তিত না হয়ে যুক্ত হয়।</p> <p>৬. সন্ধিতে দুই বর্ণের মধ্যে যোগ চিহ্ন (+) ব্যবহার করতে হয়।</p> <p>৭. সন্ধি প্রধানত তিন প্রকার। যথা : স্বরসন্ধি, ব্যঞ্জনসন্ধি ও বিসর্গসন্ধি।</p> <p>সমাস :</p> <p>১. পরস্পর অর্থসংগতিপূর্ণ দুই বা ততোধিক পদ মিলে এক পদে পরিণত হওয়াকে সমাস বলে। যেমন—সিংহ চিহ্নিত আসন = সিংহাসন।</p> <p>২. সমাসে কখনো পূর্বপদ, কখনো পরপদ, কখনো উভয় পদ ও কখনো অন্য পদের অর্থ প্রাধান্য পায়। যেমন—চাঁদের ন্যায় মুখ = চাঁদমুখ।</p> <p>৩. সমাসে বাক্যের অন্তর্গত পদগুলোর মধ্যে মিলন ঘটে।</p> <p>৪. সমাসে সাধারণত পূর্বপদের বিভক্তি চিহ্ন লোপ পায়। যেমন—দুঃখকে প্রাপ্ত = দুঃখপ্রাপ্ত।</p> <p>৫. সমাসে পদক্রম বিভিন্ন সময় নানা রূপ ধারণ করে।</p> <p>৬. সমাসে দুই পদের মধ্যে অব্যয় পদ ব্যবহৃত হয়।</p> <p>৭. সমাস প্রধানত ছয় প্রকার। যথা : দ্বন্দ্ব, দ্বিগু, কর্মাধারয়, তত্পুরুষ, বহুব্রীহি ও অব্যয়ীভাব।</p>