<p>যেমনটি আশঙ্কা করা হয়েছিল, ঠিক তা-ই ঘটেছে। সিটিং সার্ভিস বন্ধ হলেও বন্ধ হয়নি অতিরিক্ত ভাড়া আদায়। বেশির ভাগ বাস কম্পানি আসনের অতিরিক্ত দাঁড়ানো যাত্রী নিলেও বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়া নেয়নি। এমনকি পরিবহন মালিকদের নেতার পরিবহন কম্পানিও নতুন নিয়ম মানেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার যেসব বাস লোকাল হিসেবে চলাচল করে, সেগুলোতেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে রাজধানীতে যাত্রীদের সঙ্গে বাস শ্রমিকদের বচসা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। বিআরটিএ ও মালিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করায় অনেক পরিবহন কম্পানি বাস কমিয়ে দিলে দিনের শুরু ও শেষে যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ভাড়া কমানোর নীরব প্রতিবাদ হিসেবে মালিকদের ইশারায় শ্রমিকরা বাস চালানো থেকে বিরত থাকে বলে খবরে প্রকাশ।</p> <p>রাজধানীর গণপরিবহনে সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। গত ৪ এপ্রিল সভা করে ১৬ এপ্রিল থেকে সব ধরনের সিটিং সার্ভিস বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয় মালিকদের পক্ষ থেকে। মালিকদের সংগঠন ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতি বিষয়টি নিয়ে বিআরটিএর সঙ্গেও বৈঠক করেছে। তবে মালিকদের এই সিদ্ধান্তকে কৌশল হিসেবে দেখেছেন কেউ কেউ। প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনে চালকদের যে শাস্তি তথা জেল-জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে, তা কমাতে সরকারের সঙ্গে দর-কষাকষি করতেই মালিকরা এ কৌশল নিয়েছে বলে অনেকের অভিমত। রাজধানীর পরিবহন মালিকরা বরাবরই যাত্রীস্বার্থ উপেক্ষা করে আসছে। সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির বাসও বেসরকারি মালিকদের চাপের মুখে রাস্তায় চলাচল করতে পারে না। নিজেদের মতো করে সার্ভিস চালু করে নিজেদের নির্ধারিত ভাড়া এত দিন আদায় করা হচ্ছিল। মালিকদের জন্য লাভজনক এই সার্ভিস নিজেদের উদ্যোগে বন্ধ করার পেছনে অন্য কোনো কূটকৌশল থাকতে পারে—এমন ধারণা অনেকের।</p> <p>গত দুই দিনে রাজধানীর গণপরিবহনের চিত্র মোটেও সুখকর নয়। সিটিং সার্ভিস বন্ধ হলেও যাত্রীদের দুর্ভোগ কমেনি। ভাড়া নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। রাজধানীর কয়েকটি স্পটে বাস শ্রমিকরা যাত্রীদের ওপর চড়াও হয়েছে। যাত্রীস্বার্থ বিবেচনা করে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। শুধু সিটিং সার্ভিস বন্ধ করা নয়, ফিটনেস সনদবিহীন সব ধরনের যান চলাচলে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করতে হবে। পাশাপাশি রাজধানীর সব রুটে বিআরটিসির বাস সার্ভিস চালু করা গেলে বেসরকারি মালিকদের একচ্ছত্র আধিপত্য বন্ধ করা সম্ভব হবে। সরকারের উচিত সব রুটে বিআরটিসির বাস সার্ভিস চালু করা। সেই সঙ্গে সিটিং সার্ভিসের নামে যাত্রী হয়রানি বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।</p>