<p>পুলিশের হেফাজতে থাকা ডেসটিনির বাগানের গাছ কাটতে গিয়ে পুলিশের তাড়া খেলেও পরদিন বিনা বাধায় সাবাড় হয়েছে বাগান। খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় এ ঘটনা ঘটে।</p> <p>জানা যায়, উচ্চ আদালতের নির্দেশে সারা দেশে ডেসটিনির বাজেয়াপ্ত সম্পদগুলোর মধ্যে দীঘিনালায় রয়েছে ডেসটিনির বাগানবাড়ি। যা পুলিশি হেফাজতে আছে। তবে তা দেখভালের জন্য পুলিশ ইজারা দিয়েছে। দীঘিনালার বাগানের ইজারাদার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আজহার ওরফে আলি রাজা মেম্বার।</p> <p>পুলিশি হেফাজতে থাকা রসিকনগর এলাকার ওই বাগানের গাছ কাটা শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে। বন্ধ হয়ে যায় গাছকাটা। কিন্তু পরদিন শুক্রবার একই শ্রমিকরা একই বাগানের গাছ কাটেন কোনো বাধা ছাড়াই। আর সেই গাছগুলো রাতভর গাড়িতে পাচার করা হয়।</p> <p>গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, কাটা গাছের অবশিষ্টাংশ পড়ে রয়েছে বাগানে। আর স্থানীয় দরিদ্র মহিলারা লাকড়ির জন্য ডালপালাগুলো কেটে নিচ্ছেন। স্থানীয়রা জানান, ডেসটিনির বাগান; পুলিশে নিষেধ করার পরও মানুষে কেটে নিয়ে গেল। তাই তারা শুধু লাকড়িগুলো সংরক্ষণ করছেন।</p> <p>পুলিশ জানায়, তাঁরা নিষেধের পর গাছ কাটা বা রাতে গাছ পাচারের বিষয়টি পুলিশ জানে না। স্থানীয় সাইফুল ইসলাম, ইউছুফ আলি ও আলেয়া বেগম জানান, যে বাগানে গাছ কাটা হয়েছে সেটি একটি আগরবাগান।</p> <p>বাগানটি ডেসটিনি সৃজন করেছে বলেই তাঁরা জানেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার গাছ কাটা শুরু করলে পুলিশ এসে ধাওয়া দেয়। তখন গাছ কাটায় নিয়োজিত শ্রমিকরা পালিয়ে যান। কিন্তু একই শ্রমিকরা পরের দিন বিনা বাধায় গাছ কাটলেন এবং রাতে কয়েক দফায় গাড়ি ভরে নিয়েও গেলেন। তাঁরা বলেন, শুরু থেকে শেষে পর্যন্ত গাছ কাটা কার্যক্রম তদারক করেন স্থানীয় সিরাজ নামের এক ব্যক্তি।</p> <p>বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের নেতৃত্বে ছিলেন দীঘিনালা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন। তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে কাটা কিছু গাছ পাওয়া গেলেও জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তখন স্থানীয়দের কাছ থেকে তিনি জেনেছিলেন, গাছ কাটার জন্য শ্রমিক নিয়োগ করেছেন জনৈক সিরাজ। জড়িত কাউকে না পেয়ে পার্শ্ববর্তী সবাইকে বলে দেওয়া হয়েছে জায়গার কাগজ-পত্র না দেখিয়ে যেন কেউ এ এলাকা থেকে গাছ না কাটে। পরের দিন গাছ কাটার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।</p> <p>ওই এলাকায় ডেসটিনির বাগান পুলিশের কাছ থেকে ইজারা নিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আজহার আলি ওরফে রাজা মেম্বার।</p> <p>তিনি জানান, প্রথমদিন অবৈধভাবে গাছ কাটার খবর পুলিশকে তিনিই দিয়েছিলেন। এর পর পুলিশ এসে গাছ কাটা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু পরের দিন গাছ কেটে বিক্রির বিষয়ে তাঁর জবাব, ‘যারা গাছ কাটছে তারা গরিব মানুষ। তাই আমরা কেউ ওই খবর রাখিনি।’</p> <p>অভিযুক্ত সিরাজ মিয়া বলেন, ‘বাগান আমার তবু ডেসটিনির বাগান বলে পুলিশকে জানানোর কারণে গাছ কাটা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। পরে অবশ্য কে বা কারা গাছ কাটলো নাকি রাতে কাটা গাছগুলো নিয়ে গেলো সেটিই বুঝতে পারছি না।’</p> <p>দীঘিনালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞা এবং পুলিশ হেফাজতে থাকা জায়গার গাছ কেটে বিক্রি করা অবশ্যই বেআইনি। বৃহস্পতিবার গাছ কাটার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। তখন কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। তবে গাছ না কাটতে স্থানীয়দের বলে দেওয়া হয়েছে। এর পরও গাছ কাটার খবর পুলিশ জানে না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p>