<p>সম্প্রতি ইতালিতে অনলাইনে বিক্রির জন্য এক ব্রিটিশ নারী মডেলকে অপহরণ করা হয়। পরে ধরা পড়ে সেই চক্র। উদ্ধার করা হয় ক্লো অ্যালিং নামের মডেলকে। তা আইনজীবী জানান, মধ্যপ্রাচ্যে 'যৌনদাসী' হিসেবে বিক্রির জন্য হয়তো ইতালির মিলান শহর থেকে মিস অ্যালিংকে অপহরণ করা হয়েছিল।</p> <p>২০ বছর বয়সী ক্লো অ্যালিং বন্দি থাকা অবস্থায় কী আচরণ করেছেন, কী ভেবেছেন- তা আইনজীবী ফ্রান্সেসকো পেসকি বিবিসিকে জানিয়েছেন। দুই দিন আগেই ইতালির পুলিশ ব্রিটেনের এই মডেলকে উদ্ধার করে জানায় যে অপরাধীরা তাকে অনলাইনে নিলামে বিক্রির উদ্দেশ্যে অপহরণ করেছিল। ওই মডেল একটি ফটোশুটে অংশ নেওয়ার জন্য মিলানে গিয়েছিলেন।</p> <p>উদ্ধারের পর মিস অ্যালিং বলেছেন তিনি মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন।</p> <p>'ব্ল্যাক ডেথ' নামে একটি গ্রুপ ব্রিটিশ এই মডেলকে অপহরণ করে ছয় দিন আটকে রাখে। মিলানের উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়ার ২৬ দিন পর রবিবার নিজ বাড়িতে ফিরেছেন ক্লো অ্যালিং। তাকে উদ্ধারের পর ইতালির পুলিশ জানিয়েছিল, মিলানে নামার পরই দুই ব্যক্তি তাকে মহিলাকে আক্রমণ করে এবং নেশার ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে। এরপর একটি ব্যাগের ভেতর ঢুকিয়ে তাকে গাড়ির বুটে তোলা হয় এবং টুরিন শহরের কাছে এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়।</p> <p>ইতালির পুলিশ এই অপহরণের জন্য লুকাস হেরবা নামে এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশের তদন্ত বিভাগ বলছে, অপহরণকারীরা বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নারীদের অনলাইনে নিলামে তোলে।</p> <p>সাইটগুলিতে প্রতিটি নারীর ছবির সাথে তাদের বর্ণনা এবং প্রাথমিক মূল্য দেওয়া ছিল। তবে ছবিতে দেওয়া নারীদের সবাইকে একই ব্যক্তিরা অপহরণ করেছে কি না, তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি বলে মিলান পুলিশ বলছে।</p> <p>কর্মকর্তারা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা জানিয়েছে যে তারা 'ব্ল্যাক ডেথ গ্রুপ' নামে একটি অপরাধী চক্রের সদস্য যাদের মূল ব্যবসা হচ্ছে নারী পাচার।</p> <p>আইনজীবী পেসকি জানাচ্ছেন যে তার 'মক্কেলকে মধ্যপ্রাচ্যে যৌনকর্মের জন্য কারো কাছে বিক্রির পরিকল্পনা করছিল অপহরণকারীরা। মিস অ্যালিং অপহরণকারীদের সঙ্গে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন কারণ তাকে মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তাকে বলা হয়েছিল, আশেপাশে অনেকে তার গতিবিধি নজরে রাখছে। যদি পালানোর চেষ্টা করে বা কোনো চালাকি করে তাহলে তাকে মেরে ফেলার জন্য প্রস্তুত তারা। তাই তিনি ভাবলেন অপহরণকারীদের সঙ্গে যাওয়াই হবে সবচেয়ে ভালো কাজ। অপহরণকারী এক ব্যক্তি মিস অ্যালিংকে বলেছিল যে সে তাকে মুক্ত করতে চায় তা যেভাবেই হোক।</p> <p>মিস অ্যালিং ওই ঘটনাকে জীবনের 'ভয়াবহ অভিজ্ঞতা' হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, প্রত্যেক মুহুর্তে তিনি তাঁর জীবন নিয়ে শঙ্কার মধ্যে ছিলেন। বলেন, আমি ইতালি ও যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ, তাদের কারণেই আমি নিরাপদে বেঁচে ফিরেছি। </p> <p>এই ঘটনাটি নিয়ে ইতালি, পোল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যে যৌথভাবে তদন্ত চলছে। সূত্র : বিবিসি বাংলা</p>