<p>ছবিতে পেছনে পনিটেইলওয়ালা মানুষটা একটা অবিশ্বাস্য কাজ করছেন। আপাতদৃষ্টিতে খুব সাধারণ একটা ছবি, নিজের প্রিয় পোষ্যকে নিয়ে জলে নেমেছেন তার মনিব। খুব সাধারণ ছবি হলেও এর পেছনের ঘটনা সাধারণ নয়। কুকুরটার নাম শেপ। বয়স ১৯ বছর। কুকুরদের বয়স হিসেবে একেবারে থুত্থুড়ে বুড়ো। </p> <p>শেপের আছে আর্থ্রাইটিস, সেই আর্থ্রাইটিসের মাত্রা এতই বেশি যে শেপ তার শরীরের হাঁড়ের কোনো জোড়াই ভাঁজ করতে পারে না, সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় পেছনের পা ভাঁজ করতে গেলে। প্রচণ্ড যন্ত্রণায় শেপ ঘুমুতেও পারত না। অসম্ভব যন্ত্রণা থেকে সারমেয়টিকে মুক্তি দিতে ভেটেরিনারি সার্জনরা লেথাল ইনজেকশন দিয়ে মৃত্যুর কথা বলেছিলেন। তাতে শেপের মনিব জন এনগার একেবারেই রাজি হননি।</p> <p>কী করে রাজি হবেন? এই শেপই জীবনের একটা পর্যায়ে আত্মহত্যার পথ থেকে তাঁকে সরিয়ে এনেছিল। নিয়ে এসেছিল স্বাভাবিক একটা জীবনে। সেই বন্ধুকে ইঞ্জেকশন দিয়ে মেরে ফেলা? অসম্ভব। </p> <p>তাই তিনি প্রতিদিন তাঁর প্রিয় সারমেয় বন্ধুকে নিয়ে লেকের জলে বুক পর্যন্ত নেমে শেপের মাথা অমন করে জড়িয়ে ধরে রাখেন, দাঁড়িয়ে থাকেন জলের মাঝে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা। শেপ তখন নিশ্চিন্তে ঘুমায়। </p> <p>কোনো শব্দ দিয়ে এই ভালোবাসাকে ধরা সম্ভব নয়। যখন সত্যি সত্যি ভালোবাসা এদের দেবেন, তার দশ গুণ তারা ফেরত দেবে। সারমেয়দের ক্ষেত্রে কথাটা বেশি সত্যি।</p> <p>আচ্ছা, জন এনগারের কী প্রতিদিন মনে হয়—<br /> ‘হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা,<br /> হতেও পারে এই গানই শেষ গান...’</p> <p>শেপের আয়ু শেষের দিকে, এ জন্যই কি কোনো আগল না রেখে সবটা দিয়ে একেবারে খোলামেলা নিজের সারমেয়টিকে ভালোবেসে চলেছেন জন? ভালোবাসলে তার মাঝে কোনো আগল রাখতে হয় না, কিছুই লুকোতে হয় না, সব দিতে হয়। জন এনগার সে কথাটিকেই সম্ভবত স্মরণ করে চলেছেন।</p> <p>সূত্র : ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ওয়াইল্ড</p>
