<p>৯ ম্যাচের সাতটিতে জিতে সুপার লিগে এক পা দিয়ে রেখেছে মাহিদুলের দল মোহামেডান। সমানসংখ্যক ম্যাচ খেলে ৬৪.৭১ গড়ে ৪৫৩ রান করেছেন মাহিদুল। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় তাঁর ওপরে আছেন শুধু প্রাইম ব্যাংকের ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন (৫৪৯)। সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও ছয় ফিফটি আছে মাহিদুলের। সর্বোচ্চ ৯৪ রান। </p> <p>সচরাচর অতি আবেগ কিংবা অতি উচ্ছ্বাস কোনোটাই কাজ করে না মাহিদুল ইসলাম অংকনের। নিজের মধ্যে থাকতে পছন্দ তাঁর। তবে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে সেদিন আউটের পর কিছুটা ভেঙেই পড়েছিলেন। ইনিংসের এক বল বাকি থাকতে রান আউট, উইকেটে বসে থাকলেন কিছুক্ষণ। হতাশা কাটেনি বাউন্ডারি সীমানার বাইরে গিয়েও। হাঁটু গেড়ে তাঁর মুষড়ে পড়া মুখাবয়বের দিকে তাকানো যাচ্ছিল না। সতীর্থদের সান্ত্বনাও যেন কাজ হচ্ছিল না। শেষ ওভারে ১৩ রানের হিসাব মেলাতে না পেরে মোহামেডান যে রোমাঞ্চ জাগানিয়া লো-স্কোরিং ম্যাচটা ততক্ষণে তিন রানে হেরে গেছে।</p> <p>মাহিদুলের হতাশার বড় কারণ ৯৪ রানের ইনিংসে প্রায় একার হাতে জেতানোর অবস্থা থেকে ম্যাচটা হেরে যাওয়া নিয়ে।<br /> ৯ ম্যাচের সাতটিতে জিতে সুপার লিগে এক পা দিয়ে রেখেছে মাহিদুলের দল মোহামেডান। সমানসংখ্যক ম্যাচ খেলে ৬৪.৭১ গড়ে ৪৫৩ রান করেছেন মাহিদুল। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় তাঁর ওপরে আছেন শুধু প্রাইম ব্যাংকের ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন (৫৪৯)।</p> <p>সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও ছয় ফিফটি আছে মাহিদুলের। সর্বোচ্চ ৯৪ রান। মিডল অর্ডারে তিনি যে জায়গায় ব্যাটিং করেন, দায়িত্ব থাকে দলের ইনিংস টেনে নেওয়ার। সেই কাজে এখন পর্যন্ত তাঁকে সফল বলা যায়। এ নিয়ে সন্তুষ্টির সঙ্গে আরো ভালো করার প্রত্যয়ই শোনা গেল মাহিদুলের কণ্ঠে, ‘মোহামেডান দলে আমি যে জায়গাটায় ব্যাটিং করি, আমার ওপর একটা নির্দিষ্ট দায়িত্ব থাকে।</p> <p>ইনিংসটা যেন গড়ে দিতে পারি, দলের প্রয়োজন অনুযায়ী যাতে খেলতে পারি। এখন পর্যন্ত বলব না যে আমি আমার সেরাটা খেলতে পারছি। তবে হ্যাঁ, যতটুকু খেলতে পেরেছি, সেটা নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ। আমার আরো ভালো করার সুযোগ আছে।’</p> <p>অনেক রান আর প্রয়োজন অনুযায়ী খেলার বাইরে চিন্তার যদি জায়গা থাকে, সেটা স্ট্রাইক রেট। এখন পর্যন্ত ৭১.৯০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন মাহিদুল। বর্তমান সময়ের ক্রিকেটের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিতে পারছেন না হয়তো। স্ট্রাইক রেটে উন্নতির জায়গা যে আছে, বিষয়টি তিনিও বিনা বাক্য ব্যয়ে মেনে নিয়েছেন। সঙ্গে এবারের প্রিমিয়ার লিগে উইকেটের বাস্তবতাও উঠে এসেছে তাঁর কথায়, ‘আমি প্রিমিয়ার লিগ খেলছি চার বছর ধরে। চার বছরের তুলনায় এবার উইকেট একটু ভিন্ন। আগে ১০ ম্যাচের ৯টাতে ফ্ল্যাট উইকেট পাওয়া যেত। কিন্তু এই বছর উইকেট একটু চ্যালেঞ্জিং বেশি মনে হয়েছে। কারণ অন্তত প্রিমিয়ার লিগে এই গরমের মধ্যে বল টার্ন করবে, বলের বাউন্স এদিক-সেদিক হয়, এটা খুব কম পেয়েছি। এদিক থেকে চিন্তা করলে দলের কৌশল অনুযায়ী স্ট্রাইক রেট ঠিক আছে বলব। কিন্তু সুদূরপ্রসারী ভাবনা থেকে দেখলে আমার স্ট্রাইক রেটে আরো উন্নতি করা উচিত। আমার বিশ্বাস, আমি সেটা পারব।’</p> <p>এবারের ঢাকা লিগ মাহিদুলের কাছে অন্য রকম চ্যালেঞ্জের। নিজেকে আরেকটু পাদপ্রদীপের আলোয় নিয়ে আসার। যুবদলের ২০১৮ ব্যাচের জাকির হাসান, আফিফ হোসেন, হাসান মাহমুদ, তাওহিদ হৃদয়, মোহাম্মদ নাঈম শেখরা এর মধ্যে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন। একই দলের সঙ্গী মাহিদুল একটু পিছিয়েই আছেন। অবশ্য এ নিয়ে তাঁর মনে কোনো হতাশা নেই, ‘আমি ওভাবে চিন্তা করি না। আমার মনে হয়, সব ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার আলাদা। ওরা ওই পর্যায়ে যেতে পেরেছে পারফরম্যান্স দিয়ে। আমার পারফরম্যান্সের গ্রাফ আরো ওপরে যাওয়া উচিত। পারফরম্যান্সের তো শেষ নেই। আমি যদি ভালো করতে থাকি সুযোগ আসবেই। মন খারাপ হয় না। ওদের দেখলে অনুপ্রাণিত হই। ওরা পারলে আমিও পারব- এভাবে ভাবি।’</p> <p>আপাতত তাঁর সব ভাবনাজুড়ে মোহামেডান। দলটির হয়ে টানা দ্বিতীয় মৌসুম খেলছেন ২৪ বছর বয়সী উইকেটকিপার-ব্যাটার। এবার টুর্নামেন্টের শুরু থেকে বেশ গোছালো দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। মাহিদুল মনে করেন, দলসংশ্লিষ্টদের সমর্থনও তাঁদের সাহস জোগাচ্ছে। এই কারণে লিগ পর্ব, সুপার লিগ হয়ে মোহামেডানকে ঘিরে এবার মাহিদুলদের দৃষ্টি আরো বিস্তৃত। নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মঞ্চ মাহিদুলের নিজেরও।</p>