<p>বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফায় ভর করেছে দুর্নীতির ভুত। পিএসজি মালিক নাসের আল-খিলাইফি ও সাবেক ফিফা প্রধান জেরম ভাল্কের কীর্তিকলাপ ফাঁস করতে এবার তদন্ত শুরু হলো সুইজারল্যান্ডে। ভাল্কে ছিলেন সেফ ব্লাটারের কাছের লোক। তাদের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন টিভি সংস্থাকে আগামী ফুটবল বিশ্বকাপের সম্প্রচার স্বত্ত্ব পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ এসেছে ফিফার কাছে। সুইস অ্যাটর্নি জেনারেলের (ওএজি) জানিয়েছে, গত মার্চ শুরু হওয়া এই তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ, প্রতারণা, জালিয়াতি-সহ একাধিক অপরাধের অভিযোগ জমা পড়েছে। </p> <p>পিএসজি মালিক নাসের আল-খিলাইফি কাতারে 'বিইন' নামক একটি ক্রীড়া সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের মালিক। এই প্রতিষ্ঠানের ৫টি শাখা উপমহাদেশে ছড়িয়ে আছে। ওএজির সন্দেহ, এই প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েও বহু বেআইনি কাজে যুক্ত ছিলেন আল-খিলাইফি। কিন্তু 'বিইন' তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নাকচ করে বলেছে, 'ওএজির এই অভিযোগ একেবারেই সত্যি নয়। তবে তাদের তদন্তে আমরা সহযোগিতা করব। এই তদন্তের উপর আমাদের আস্থা আছে।'</p> <p>গত আগস্টে সংবাদ শিরোনামে বার বার উঠে আসে ফরাসি ক্লাব পিএসজির নাম। কারণ একটাই- ব্রাজিল সুপারস্টার নেইমারের আগমন। ২২২ মিলিয়ন ইউরোর এই দলবদল নিয়ে অবশ্য কোনো তদন্তের কথা উল্লেখ করেনি ফিফা। বৃহস্পতিবার ভাল্কেকে জেরা করেন সুইস অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতিনিধিরা। তার আইনজীবী স্তিফেন সিকেলদি এই জেরার পরে বলেন, 'তারা সারাদিন ভাল্কের কথা শুনেছেন। উনি নির্দোষ। ভাল্কের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি ওএজি।'</p> <p>এই ঘটনায় আরও একজনকে সন্দেহ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। কিন্তু তার ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। কৌঁসুলিরা বলেছেন, আগামী ৪টি বিশ্বকাপের সম্প্রচার স্বত্ব পাইয়ে দেওয়ার জন্য ভাল্কে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে নানা সুবিধাও আদায় করেছেন। নাসের আল-খিলাইফিও এই একই অপরাধে তার সঙ্গী বলে মনে করেন তদন্তকারী অফিসাররা। ২০১৮ এবং ২০২২ বিশ্বকাপ যথাক্রমে রাশিয়া ও কাতারে অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৬ ও ২০৩০ বিশ্বকাপ কোথায় হবে তা এখনও ঠিক হয়নি।</p> <p>ভাল্কে ফরাসি বংশোদ্ভূত দক্ষিণ আফ্রিকান নাগরিক। তাকে গত বছর ফিফার দুর্নীতির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর তাকে সচিবের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগের পরে তাকে ১০ বছর ফুটবল দুনিয়া থেকে নির্বাসিত করে ফিফা। কিন্তু তাতেও তাকে দমানো যায়নি। একই কাজে মত্ত রয়েছেন আল খিলাইফিও। ২০১১ সালে পিএসজিকে কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট নামের একটি সংস্থা কিনে নেয়। ২২২ মিলিয়ন ইউরো (১৭০৪ কোটি টাকা) ব্যয় করে নেমারের দল বদলের পরে পিএসজি সালের মালিকের উপর সন্দেহ আরও বাড়ে ফিফার। যত দ্রুত সম্ভভ এই দুর্নীতির কালিমা থেকে মুক্ত হতে চায় বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।</p>