<p>ছেলের মেডিক্যালে পড়ার খরচ কিভাবে জোগাবেন, তা নিয়ে বিপাকে পড়া কেশবপুর উপজেলার জাহানপুর গ্রামের সেই মা দুশ্চিান্তামুক্ত হলেন। বসুন্ধরা শুভসংঘ ফরহাদের মেডিক্যালে পড়ার দায়িত্ব নেওয়ায় হাসি ফুটেছে পরিবারটিতে।</p> <p>গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) কালের কণ্ঠে ‘মেডিক্যালে পড়া নিয়ে অনিশ্চয়তা’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়। কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন ওই খবরের সূত্র ধরে অসহায় মায়ের ছেলে ফরহাদ হোসেনের খোঁজখবর নেন। বসুন্ধরা শুভসংঘ ফরহাদ হোসেনের মেডিক্যালে লেখাপড়ার দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানায়। </p> <p>মেধাবী ফরহাদ হোসেন যশোরের কেশবপুর উপজেলার জাহানপুর গ্রামের মনিরুজ্জামান ও হোসনেয়ারা খাতুন দম্পতির ছেলে। তিনি এ বছর কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ পান। ছেলেকে মেডিক্যালে ভর্তির পর লেখাপড়ার খরচ কিভাবে জোগাবেন, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন ফরহাদের মা হোসনেয়ারা খাতুন। </p> <p>ফরহাদ যখন সপ্তম শ্রেণির ছাত্র তখন তাঁর বাবা মনিরুজ্জামান স্ট্রোক করে কর্মক্ষমহীন হয়ে পড়েন। এ সময় হোসনেয়ারা খাতুন কাঁথা সেলাই করে চার সদস্যের সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালান। এলাকাবাসীর কাছ থেকে পাওয়া জাকাতের টাকা এবং ভাইদের সহযোগিতায় ছেলেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করেন। ভর্তির পর থেকে ছেলের মেডিক্যালে লেখাপড়ার খরচ কোথায় পাবেন তা নিয়ে বিপাকে পড়েন ফরহাদের মা। বসুন্ধরা শুভসংঘ ফরহাদ হোসেনের মেডিক্যালে লেখাপড়ার দায়িত্ব নিতে চাওয়ার বিষয়টি বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামানের কাছ থেকে জানতে পরে কালের কণ্ঠ’র এই প্রতিনিধি ওই বাড়িতে উপস্থিত হন। ফরহাদের অসহায় মা-বাবা বিষয়টি জানতে পেরে আনন্দে কেঁদে ফেলেন। হোসনেয়ারা খাতুন এ সময় বলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘ তাঁর ছেলের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলে তিনি সারা জীবন বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য দোয়া করে যাবেন। </p> <p>বাবা মনিরুজ্জামান বলেন, তাঁদের পক্ষে কোনোভাবে ছেলের মেডিক্যালে লেখাপড়ার খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। </p> <p>ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় মেডিক্যালে পড়ে ডাক্তার হতে পারলে সারা জীবন অসহায় মানুষের পাশে থেকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাব।’ </p> <p>ফরহাদ হোসেনের চাচি জোহরা খাতুন বলেন, ‘ফরহাদ ছোটকাল থেকেই লেখাপড়ায় ভালো। ছেলেটি কখনো বই পড়া বাদ দিয়ে অহেতুক ঘোরাফেরা করেনি। যে কারণে এলাকার সব মানুষ তাকে খুব ভালোবাসে। মেডিক্যালে পড়ার খরচ পেলে সে একদিন ডাক্তার হয়ে অসহায় গরিব মানুষের সেবা করতে পারবে।’</p>