<p>সাফল্যর নতুন মাইলফলকে পৌছল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদালয় (বিএসএমএমইউ)। প্রথমবারের মতো এখানে সফলভাবে সম্পন্ন হলো অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বা বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট। বিএসএমএমইউর হেমাটোলজি বিভাগের উদ্যোগে জটিল এই চিকিৎসার প্রথম রোগী রংপুরের চিলমারির ৪৮ বছর বয়স্ক ইফতে আরা যিনি মাল্টিপল মায়োলামা (রক্তে থাকা প্লাজমা-সেলের টিউমার) রোগে ভুগছিলেন। প্রথমে তাকে কেমোথেরাপি দেয়া হয় কিন্তু তাতে তেমন কাজ হয়নি বলে পহেলা এপ্রিল তার দেহে 'অটোলোগাস' পদ্ধতিতে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হয়। গত বুধবার তিনি বাড়ী ফিরে গেছেন। দুই সপ্তাহ পর তিনি ফলোআপ চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউতে আসবেন বলে জানা গেছে।</p> <p>সফল এই অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন টিমের নেতৃত্ব দেন বিএসএমএমইউর হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম। তার সঙ্গে ছিলেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. রফিকুজ্জামান, ডা. শাহ সালাউদ্দিন, ডা. মুজাহিদা, ৬ জন নার্সসহ ১২ জনের একটি টিম। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে প্রায় তিন সপ্তাহের মতো সময় লেগেছে যাতে খরচ হয় আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার মতো। <img alt=\"\" src=\"https://scontent.fdac10-1.fna.fbcdn.net/v/t1.15752-9/30742232_10156108044131063_677621238012575744_n.jpg?_nc_cat=0&oh=aacd8a0c6a2440a3a934d852767f64e7&oe=5B53A459\" style=\"float:left; height:467px; margin-bottom:3px; margin-top:3px; width:700px\" /></p> <p>বিএসএমএমইউয়ের হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদককে বলেন, 'কোনো রকম অনুদান ছাড়াই বিএসএমএমইউয়ের নিজস্ব অর্থায়ানে আমরা সাফল্যের সঙ্গে 'অটোলোগাস' পদ্ধতিতে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। শিগগিরই আমরা 'এলোজেনিক' পদ্ধতির ট্রান্সপ্ল্যান্টে যাবো যাতে থ্যালাসেমিয়া, লিম্ফোমা, এপ্লাস্টিক এনিমিয়ার রোগীরাও সুস্থ্য হবার সুযোগ পাবেন। তবে সবার আগে দরকার প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি তথা সরকারী অনুদান'।</p> <p>গত ২০ মার্চ এই বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিটটির উদ্বোধন করেন বিএসএমএমইউর সদ্য বিদায়ী ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান। তিনি বলেন, 'আমার স্বপ্ন ছিলো বিএসএমএমইউতে একটি পূর্ণাঙ্গ বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইউনিট স্থাপনের। আমি সত্যিই আনন্দিত যে, অল্পদিনের ব্যবধানে তা সাফল্যের মুখ দেখছে।'</p> <p>উল্লেখ্য, ব্লাড ক্যান্সার, লিম্ফোমা, মাল্টিপল মায়োলোমা, এপ্লাস্টিক এনেমিয়া, থ্যালাসেমিয়া, কনজেনিটাল ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম ইত্যাদি নানা রোগের শেষ চিকিৎসা বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন বা অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন। এটি বিদেশে অনেক ব্যয়বহুল। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতেই খরচ হয় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকার মতো। তবে ২০১৪ সালের ১০ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট শুরু হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ও বেসরকারী অ্যাপোলে হসপিটালস্ ঢাকায় বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট হচ্ছে। এই তালিকায় নতুন করে যোগ হলো বিএসএমএমইউ।</p>