<p>ব্যায়াম বা এক্সারসাইজের কথা উঠলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে একদল তরুণের দৌড়াদৌড়ি, জিমে ঘাম ঝরানো বা বয়স্কদের রাস্তায়, মাঠে বা পার্কে হাঁটাহাঁটি বা খালি হাতে ব্যায়ামের কথা। কিন্তু এই তরুণ ও বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদেরও ব্যায়ামের প্রয়োজন, সেটা আমরা মোটেও মনে রাখি না। অথচ সুস্থ শরীরের জন্য সুষম খাবারের পাশাপাশি তাদেরও ব্যায়ামের প্রয়োজন। তবে সব শিশুর জন্য কিন্তু সমান ব্যায়াম নয়। আগে আমরা দু-তিন বছরের শিশুদের ব্যায়াম সম্পর্কে জেনেছি, আজ জানব চার থেকে ১৮ বছর বয়স্কদের জন্য উপযোগী ব্যায়াম সম্পর্কে।</p> <p><strong>চার-পাঁচ বছরের শিশুর ব্যায়াম</strong></p> <p>এই সময়ে শিশুর বয়স বাড়বে। ব্যায়ামে আনতে হবে পরিবর্তন। ভারসাম্য রক্ষা এবং শারীরিক দক্ষতা বাড়ানোর ব্যাপারে মনোযোগী হতে হবে। এ সময় এক ঘণ্টা অনুশীলন আবশ্যক। তবে দুই ঘণ্টা ব্যয় করতে পারলে আরো ভালো। সময়কে দুই ভাগে ভাগ করে অনুশীলন করা ভালো। এক ঘণ্টা পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যায়াম করতে হবে। অন্য সময়টা শিশু যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে।</p> <p>শিশুর শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী ব্যায়াম নির্ধারণ করতে হবে। তবে হাত ও চোখের সমন্বয় বাড়ানোর জন্য ক্যাচ নেওয়া, ভারসাম্য দক্ষতা বাড়ানোর জন্য জিমন্যাস্টিকস ধরনের কিছু করতে হবে। সাঁতার ও সাইকেল চালনা শেখাও যোগ করা যেতে পারে। এ বয়সে প্রতিযোগিতামূলক ক্রীড়ায়ও অংশ নিতে পারে বাচ্চারা। তবে অংশগ্রহণকারী বাচ্চাদের সংখ্যাটা কম হওয়া ভালো।</p> <p><strong>৬-১২ বছরের শিশুর ব্যায়াম</strong></p> <p>এ বয়সের শিশুরা দলীয় খেলায় অংশ নিতে শুরু করে। এ সময় তাদের অন্তত এক ঘণ্টা শারীরিক অনুশীলন করা উচিত। আসলে এটা এমনই সময় যেটা শিশুদের ফিটনেস তৈরির জন্য দারুণ উপযোগী। ঘরে ব্যায়ামের পাশাপাশি এ সময় তারা সপ্তাহে একাধিকবার দলীয় খেলায় অংশ নেয়। তা ছাড়া এ সময় তাদের যোগ ব্যায়ামের ক্লাসে দেওয়া যেতে পারে। এমনকি শিশুদের উপযোগী জিমনেসিয়ামে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।</p> <p><strong>১৩-১৪ বছরের শিশুর ব্যায়াম</strong></p> <p>শিশুদের দৈহিক শারীরিক গঠন বা ব্যায়াম অনুশীলন ঠিক রাখার জন্য এটাই সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বয়স। এ বয়সের বাচ্চাদের দৈনিক এক ঘণ্টা ব্যায়াম আবশ্যক। তাদের ব্যায়ামের জন্য দলীয় খেলাধুলা সবচেয়ে বড় উপায়। আসলে এ বয়সের বাচ্চারা আগেই নিজেদের পছন্দের খেলাটি বেছে নিয়ে থাকে।</p> <p>বাচ্চারা সাধারণত বড়দের দেখেই শিখে থাকে। এ কারণেই তাদের সামনে বড়দের ব্যায়ামের ভালো উদাহরণ তৈরি করতে হবে। যদি আপনি যথেষ্ট অনুশীলন বা ব্যায়াম না করেন তাহলে ছোটদের সামনে তাদের কেন ব্যায়াম করা উচিত তার উপযুক্ত ব্যাখ্যা দাঁড় করানো কঠিন হবে। সুতরাং দেরি না করে এখনই আপনার ব্যায়ামের সূচিতে প্রয়োজনে পরিবর্তন আনতে হবে, এতে শুধু আপনার সন্তান উপকৃত হবে তা নয় আপনিও শারীরিকভাবে উপকৃত হবেন। এ জন্য সন্তানের সঙ্গেই প্রাত্যহিক ব্যায়ামটা আপনি সেরে নিতে পারেন। এতে আপনার ব্যায়াম আরো উপভোগ্য হয়ে উঠবে নিঃসন্দেহে।</p>