<article> <p style="text-align: justify;">আমাদের শরীরের মূল অঙ্গগুলোর একটি হলো কিডনি, যা সুস্থ দেহের জন্য তথা বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গ ঠিকঠাক কাজ না করলে হতে পারে নানা বিপত্তি। বিস্তারিত জানাচ্ছেন-</p> <p style="text-align: justify;"><b>অধ্যাপক ডা. হারুন-আর-রশিদ</b></p> <p style="text-align: justify;">প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি</p> <p style="text-align: justify;">কিডনি ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ</p> <p style="text-align: justify;">কিডনি প্রধানত রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ, অতিরিক্ত পানি এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক পদার্থ শোধন করে। এই টক্সিনগুলো প্রথমে মূত্রাশয়ে জমা হয়, যা পরে প্রস্রাব আকারে বের হয়। এ ছাড়া রক্তের পটেনশিয়াল অব হাইড্রোজেন ব্যালান্স (পিএইচ) বজায় রাখে, যা সুস্থ থাকার জন্য খুব জরুরি।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এ ছাড়া কিডনির কাজ হলো লবণ ও পটাসিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, হরমোন তৈরি করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, লাল রক্ত কোষের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ, ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করা ইত্যাদি।</p> <p style="text-align: justify;">মানবদেহে মোট দুটি কিডনি থাকে, আকৃতিতে অনেকটা শিমের বিচির মতো। শরীরে নাভি বরাবর পেছনের দিকে মেরুদণ্ডের দুই পাশে কিডনির অবস্থান।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">প্রতিটি কিডনিতে আট থেকে ১২ লাখের মতো ছাঁকনি রয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;"><b>কিডনি রোগের কারণ</b></p> <p style="text-align: justify;">অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওষুধজনিত, বংশগত, বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি কিছু অসুখের কারণে কিডনির ক্ষতি হতে পারে বা কিডনির রোগ হতে পারে। কিডনি রোগের কারণে দুর্বল হাড়, স্নায়ুর ক্ষতি, অপুষ্টিসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যাও তৈরি হতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রোগটি আরো খারাপ হলে কিডনি তার কাজ পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে পারে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;"><b>কিডনির যত রোগ</b></p> <p style="text-align: justify;">কিডনি পাথর, গ্লুমেরুলোনফ্রাইটিস (কিডনির ফিল্টার স্ফীত হয়ে দাগ পড়া), পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজ (বংশগত), মূত্রনালির নিম্নাংশ আক্রান্ত হওয়া বা সিস্টাইটিস, মূত্রনালির ঊর্ধ্বাংশ আক্রান্ত হওয়া বা পায়লোনেফ্রাইটিস ইত্যাদি হলো কিডনির কিছু রোগ।</p> <p style="text-align: justify;">নীরবে ক্ষতি করে</p> <p style="text-align: justify;">কিডনির রোগ নীরব ঘাতক। কেননা জটিলতা তৈরি হওয়ার আগে এই রোগের প্রাথমিক তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। সাধারণত দুটি কিডনির ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ কার্যকারিতা নষ্ট হওয়ার পরই কিছু উপসর্গ যেমন—ক্ষুধামন্দা, খাবারে অরুচি, রাতে প্রস্রাব করার প্রবণতা, বমি বমি ভাব বা বমি, শরীর ক্রমান্বয়ে ফ্যাকাসে হওয়া, শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। এ ছাড়া কোনো রকম চর্মরোগের উপসর্গ ছাড়াই শরীর চুলকায়, অতিরিক্ত হেঁচকি ওঠে এবং অনেক ক্ষেত্রে খিঁচুনি হতে পারে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">শেষ পর্যায়ে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, ঝিমানো ভাব হয়, এমনকি রোগী জ্ঞানও হারিয়ে ফেলতে পারে।</p> <p style="text-align: justify;"><b>করণীয়</b></p> <p style="text-align: justify;">কারোর কিডনি রোগ হোক বা না হোক, কিডনির কার্যকারিতা ঠিক আছে কি না তা জানা দরকার। এ জন্য বছরে অন্তত একবার সিরাম ক্রিয়েটিনিন, ইউরিন আর/ই ও আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করাতে হবে। ফলাফলে যদি দেখা যায় কিডনির কার্যকারিতা লোপ পেয়েছে তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।</p> </article>