<p>আমাদের আশপাশে ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় রয়েছে এমন সব খাবার, যার অনেকগুলোর গুণের কথা আমরা জানি না। যদিও এসব খাবারের অনেকগুলোরই রয়েছে অসাধারণ সব গুণ। এ লেখায় রয়েছে প্রাকৃতিক ১০টি খাবারের কথা, যেগুলোর রয়েছে জীবাণুনাশক গুণ। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।<br /> <strong>১. আম</strong><br /> যারা আমকে শুধু চিনিবোঝাই ফ্যাট মনে করেন তাদের ভুল এখনই ভাঙানো দরকার। কারণ আমের রয়েছে নানা গুণ। কাঁচা আম হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা করতে আপনাকে প্রয়োজনীয় শক্তি যোগাবে। অন্যদিকে পাকা আম সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর। এটি ঠাণ্ডা প্রতিরোধ, রাইনাইটিস ও সাইনাসাইটিস সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে। আমে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ, যা ডিপথেরিয়া ও গলার সংক্রমণও প্রতিরোধে কার্যকর।<br /> <strong>২. বাঁধাকপি</strong><br /> বাঁধাকপি প্রায়ই অবমূল্যায়নের শিকার হয়। যদিও এ সবজির রয়েছে নানা গুণ। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল ও আলকালাইন লবণ। বাঁধাকপি এইচ পাইলরি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেও পারদর্শী, যা পেটের আলসারের জন্য দায়ী। এটি জন্ডিস ও ব্লাডারের রোগের বিরুদ্ধেও কার্যকর। ওষুধ হিসেবেও বাঁধাকপি ব্যবহার করা যায়। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে ক্ষতিকর কীটনাশকমুক্ত বাঁধাকপি গ্রহণ করতে পারলে তা স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ভালো হয়।<br /> <strong>৩. গাজর</strong><br /> গাজর বেটা ক্যারোটিনযুক্ত একটি উপকারি সবজি। এটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও দেহের দূষিত পদার্থ পরিষ্কারক হিসেবে পরিচিত। এছাড়া গাজরে রয়েছে ভিটামিন এ, যা শেুধু চোখের জন্যই ভালো নয় এটি ক্যান্সার প্রতিরোধেও কার্যকর। এটি দেহের এসিড-আলকালাইন ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়তা করে। গাজরের জুস গলার, চোখের ও সাইনাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর। এছাড়া এটি পেটের কৃমি ও পরজীবীদের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়তে পারে।<br /> <strong>৪. সজনে</strong><br /> সবজি হিসেবে সজনে শুধু মজারই নয়, এটি দেহের সংক্রমণ প্রতিরোধেও কার্যকর। চিকেন পক্স রোগীরা সজনে খেলে দ্রুত আরোগ্য লাভ করেন। একইভাবে বিভিন্ন সংক্রমক রোগের বিরুদ্ধেও এটি প্রতিরোধ গড়তে পারে।<br /> <strong>৫. নিমপাতা</strong><br /> কাচা নিম জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি চর্মরোগ ও ত্বকের নানা সংক্রমণ দূর করে। এছাড়া এটি অ্যান্টি-ফাংগাস হিসেবেও কার্যকর। ব্যাকটেরিয়া ছাড়াও কৃমির মতো দেহের নানা পরজীবীর বিরুদ্ধে নিমপাতা কার্যকরভাবে প্রতিরোধ গড়তে পারে।<br /> <strong>৬. হলুদ</strong><br /> হলুদ জীবাণুর বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকর একটি উপাদান। হাড়ের সমস্যায় এটি চুনের সঙ্গে মিশিয়ে লাগিয়ে দেওয়া হয়। তবে ত্বকের নানা সমস্যায় সরাসরি হলুদের রস মাখিয়ে উপকার পাওয়া যায়। হলুদ ঠাণ্ডা সমস্যাতে কিংবা গলার সংক্রমণ প্রতিরোধ কার্যকর। এটি দেহের সংক্রমণ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কার্যকর।<br /> <strong>৭. আদা</strong><br /> আদা বহুকাল আগে থেকেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি ঠাণ্ডা সমস্যা, কাশি, ডায়রিয়া ও বুকের সংক্রমণের চিকিৎসায় কার্যকর ওষুধ। তাজা আদার জুস চূর্ণ মেথি ও মধুর সঙ্গে মিশিয়ে ঠাণ্ডার ওষুধ হিসেবে তৈরি করা হয়।<br /> <strong>৮. মধু</strong><br /> আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে মধু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি জীবাণু প্রতিরোধেও কার্যকর। গলার সংক্রমণ প্রতিরোধেই শুধু মধু ব্যবহৃত হয় না, দেহের অনান্য অংশের সংক্রমণ প্রতিরোধেও এটি ব্যবহার করেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা। মুখের আলসার, কানের সংক্রমণ ইত্যাদি নিরাময়ে মধু ব্যবহৃত হয়।<br /> <strong>৯. লেবু</strong><br /> লেবু কলেরার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এছাড়া আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে হালগা গরম পানিতে লেবু, চিনি ও লবণ মিশিয়ে ডায়রিয়া রোগীদের খেতে দেওয়া হয়। গলার সংক্রমণে লেবুর পানি ও মধুর মিশ্রণ ব্যবহৃত হয়। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে লেবুর পানির কার্যকারিতা রয়েছে।<br /> <strong>১০. দই</strong><br /> দইতে রয়েছে প্রো-বায়োটিকস। এটি শুধু পেটের স্বাস্থ্যই ঠিক রাখে না, এটি সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দেহের প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। দইতে রয়েছে ল্যাকটিক এসিড ও বাটারমিল্ক। এটি অ্যাপেনডিসাইটিস, ডায়রিয়া ও আমাশয়ের জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে।</p>