<p>অবৈধ কর্মকাণ্ডের দায়ে লাইসেন্সধারী ইন্টারনেট সেবাদানকারী ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে (আইএসপি) ২০ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এর বাইরে অজ্ঞাতপরিচয় চার-পাঁচজনসহ ১৪-১৫ জনের বিরুদ্ধে চারটি পৃথক মামলা করা হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে। বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে অবৈধভাবে ইন্টারনেট সেবা বন্ধে বিটিআরসির পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।</p> <p>নির্ধারিত এলাকার বাইরে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া, লগ সার্ভার স্থাপন না করা, লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানকে ব্যান্ডউইডথ প্রদান ও লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানকে ইন্টারনেট সেবা দিতে বাধাদান, লাইসেন্স ছাড়াই ইন্টারনেট সেবা দেওয়া—এসব কারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের জরিমানা ও মামলা করা হয়।</p> <p>খুলনার শিববাড়ীর প্রভা ভবনের জুবায়ের আইটি এক্সপার্টের জুবায়ের ইসলাম, ঢাকার ইসলামবাগের মমতাজ টাওয়ারের আরিফুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভুলতায় আওয়াল মার্কেটের মো. সেলিম ও কামাল হোসাইন এবং ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের মো. আশরাফুজ্জামান, মো. শরিফ, মো. কবির, মো. তানভির, মো. সাব্বির, ডিশ আফজাল, মো. সবুজসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।</p> <p>আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জরিমানা করা হয়েছে—রংপুর সদরের উইমস অনলাইনকে ৫০ হাজার টাকা, মায়া সাইবার ওয়ার্ল্ডকে ৫০ হাজার, স্টারগেট কমিউনিকেশনকে এক লাখ, ঢাকার আশুলিয়ার সাইবার নেট কমিউনিকেশনকে ৫০ হাজার, সার্কেল নেটওয়ার্ককে পাঁচ লাখ, রাজধানীর পান্থপথের ঢাকা ফাইবার নেটকে এক লাখ, মহাখালীর জেএফ অপটিক্যাল সার্ভিসকে এক লাখ, লালবাগের জেএক্স অনলাইনকে ৫০ হাজার, ওয়ারীর নেট ক্যাফেকে পাঁচ হাজার, বাড্ডার ট্রায়াঙ্গল কমিউনিকেশনকে দুই লাখ, উত্তরার মিডিয়া অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়াকে তিন লাখ, কাঁঠালবাগানের মেগাসিটি লিংককে এক লাখ, মোহাম্মদপুরের এশিয়া নেটকে এক লাখ, লালবাগের জেএস নেটওয়ার্ককে পাঁচ হাজার, কলাবাগানের স্পিড লিংককে ১০ হাজার এবং কামরাঙ্গীর চরের রাফিন স্যাটেলাইটকে তিন লাখ টাকা।</p> <p>বিটিআরসির পক্ষ থেকে গত সোমবার গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কয়েক দিন আগেই বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিটিআরসির উপপরিচালক প্রকৌশলী রোখসানা মেহজাবীন স্বাক্ষরিত অবগতিপত্রে বলা হয়েছে, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে যে বিভিন্ন এলাকায় নামে/বেনামে কিছু ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে এবং ওই সব ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিটিআরসি থেকে নিয়মিত অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে। তবে দুঃখজনক বিষয় হলো, এসব অবৈধ ব্যবসায়ীর ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ বৈধ কিছু আইএসপি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়া সব লাইসেন্সধারী আইএসপি প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় আইপি লগসহ সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি যথাযথভাবে সংরক্ষণের নির্দেশনা প্রতিপালন করছে না।</p> <p>ইন্টারনেট সেবা নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগে বিটিআরসি গত ২০ মে একটি নির্দেশনা জারি করে। এতে অনিয়মগুলোর মধ্যে অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে ফাইবার ভাড়া, ভাগাভাগি করা, কেবল টিভি অপারেটরদের মাধ্যমে আইএসপি ব্যবসা করা, গ্রাহকের বিলের কপি ও ফরম সংরক্ষণ না করা এবং নিয়মিত কর পরিশোধ না করার বিষয় উল্লেখ করা হয়।</p> <p>এদিকে আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে সম্প্রতি অভিযোগ করা হয়, লাইসেন্স থাকার পরও তারা দেশের সব এলাকায় নিজেরা সেবা দিতে পারছে না। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় বাধ্য হয়েই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদের সহযোগিতা নিতে হচ্ছে।</p> <p>আবার ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও আবেদন করেও নানা জটিলতার কারণে সহজে লাইসেন্স না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিটিআরসি সম্প্রতি বিভিন্ন ক্যাটাগরির আইএসপি লাইসেন্সের জন্য ৮২টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা সরকারের অনুমোদনের জন্য ডাক ও টেলিযোযোগ বিভাগে পাঠনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।</p>