<p>ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় মাছ রান্না না করায় মাকে ধারাল দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ ছেলে মো. রাহাত হোসেনকে (৩০) আটক করেছে। নিহতের নাম নাছিমা বেগম (৫০)। তিনি উপজেলার গঙ্গাপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জয়া গ্রামের দুলাল হাওলাদেরের ছেলে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত একই গ্রামের নাজু মৃধার স্ত্রী জাহানারা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।</p> <p>সোমবার (২৫ মার্চ) দিবাগত রাতে ওই এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।</p> <p>ইলিশ মাছ রান্না না করায় দা দিয়ে নির্মমভাবে মাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে পাষণ্ড ছেলে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো একজন। তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।</p> <p>স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাহাত হোসেন স্ত্রীসহ তার বাবাকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন। সোমবার সকালে রাহাত একা ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। সন্ধ্যায় ইফতারের পর রাহাত তাঁর মাকে ঢাকা থেকে নিয়ে আসা ইলিশ মাছ রান্না করতে বলে। তাঁর মা জানায়, বাড়িতে কেউ নেই, তিনি একা সংসারের অন্যান্য কাজ শেষ করে মাছ রান্না করতে পারবেন না। এরপরও রাহাত তাঁর মাকে ইলিশ মাছ রান্না করতে বারবার অনুরোধ করে। এরই মধ্যে মায়ের সঙ্গে মাছ রান্না নিয়ে রাহাতের মনোমালিন্য ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।</p> <p>একপর্যায়ে রাহাত দা দিয়ে তাঁর মাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে লাশের পাশে বসে থাকে। এ সময় জাহানারা বেগম নামে পার্শ্ববর্তী এক নারী রাহাতকে বাধা দিলে তাকেও কুপিয়ে জখম করে রাহাত। বর্তমানে আহত জাহানারা আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই বাংলা (শেবাচিম) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি ঘাতক ছেলে রাহাত হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ।</p> <p>তবে আটক রাহাত ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে জানায়, ছোটবেলা থেকে সে ঢাকায় কাজ করে সংসারের হাল ধরেন। কিন্তু মা-বাবা জমি বিক্রি করে তাকে ও তার ছোট ভাইকে বঞ্চিত করে সেই টাকা বোন শিউলী বেগমকে দেয়। এ নিয়ে সে ক্ষুব্ধ ছিলেন। সে ঢাকায় ব্যবসা করেন। সেখান থেকে সোমবার বাড়ি ফিরলে মা তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী বলে কবিরাজের কাছে নিয়ে যেতে চান। তিনি কবিরাজের কাছে যেতে রাজি হননি। সন্ধ্যার পর তার মাকে ঢাকা থেকে নিয়ে আসা ইলিশ ও চিংড়ি মাছ রান্না করতে বলেন। তার মা তা না করে বাইরের দুজন লোকের মাধ্যমে তাকে জোর করে অটোরিকশায় তুলে কবিরাজের কাছে নিতে চাইলে ক্ষোভে এ ঘটনা ঘটায় সে।</p> <p>বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক ছেলেকে আটক করা হয়েছে। ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।</p>