<p>তফসিল ঘোষণার পর যশোর-৪ নির্বাচনী এলাকায় (বাঘারপাড়া-অভয়নগর ও বসুন্ধিয়া ইউনিয়ন)  শুরু হয়েছে নানা হিসাব-নিকাশ। বিশেষ করে এ আসনে কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি কিংবা কার গ্রহণযোগ্যতাই বা কেমন-এমন প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে এ নির্বাচনী এলাকার অফিস-আদালত, হাট-বাজারের চায়ের দোকানসহ সর্বত্র। তবে নতুন করে আলোচিত হচ্ছে ‘হঠাৎ প্রার্থী’ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে। যারা আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নামে সোনার হরিণটি ধরতে টিকিট সংগ্রহ করেছেন। যাদেরকে দেখা যায়নি তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রচারণায় অংশ নিতে। অনেকে আবার চেহারাও দেখেননি অতিথি পাখিদের কারো কারো।</p> <p>তবে এ বিষয়টি ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন কেউ কেউ। কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ৭৫ পরবর্তী সময়ে দল করি এমন লোক ছিল না। তবে এখন সময় পাল্টেছে। সারা বিশ্ব এখন বাংলাদেশকে চিনেছে অর্থনীতিতে প্রভূত উন্নতি হওয়ার কারণে। এখন নেতার সংখ্যা বেড়েছে। তাই বেশী প্রার্থী হওয়া খারাপ কিছু না। তাছাড়া ৩০ হাজার টাকা করে বিক্রি হয়েছে মনোনয়ন পত্র। এতে উপকৃত হয়েছে দল।</p> <p>যশোরের ৬ টি সংসদীয় আসনের মধ্যে এ নির্বাচনী এলাকার জন্য সর্বোচ্চ সংখ্যক ১৯ জন কিনেছেন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন। এর মধ্যে পাশ্ববর্তী মাগুরা জেলার বাসিন্দাও রয়েছেন।</p> <p>দীর্ঘ এ তালিকায় রযেছেন বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য রনজিৎ রায়, অভয়নগরের বাসিন্দা সাবেক হুইপ শেখ আব্দুল ওহাব, অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এনামুল হক বাবুল, একই সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক, সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম শাহ হাদীউজ্জামানের ছেলে শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর, অলিয়ার রহমান, নওয়াপাড়া পৌরসভার কাউন্সিলর রবিন অধিকারী ব্যাচা, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, বাঘারপাড়ার বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম কাজল, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগ নেতা আমজাদ হোসেন, বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান হোসেন, সাবেক ছাত্রনেতা এস এম আলমগীর হোসেন, বাঘারপাড়ার রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর রশিদ স্বপন, জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজিব ইখতেখার, এস এম জাকির হোসেন, যশোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরজাহান ইসলাম নিরা, জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান লাইজু জামান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়কার মন্ত্রী মরহুম সোহরাব হোসেনের ছেলে, মাগুরা জেলার বাসিন্দা রকিবুল আনোয়ার, জনৈক আব্দুল কবির ও বিভাষ চন্দ্র বিশ্বাস।</p> <p>এর মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য রনজিৎ রায়, শেখ আব্দুল ওহাব, এনামুল হক বাবুল, নাজমুল ইসলাম কাজল, এস এম আলমগীর হোসেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি হিসাবে জোর প্রচারণা ও ২/১ জনকে মাঝে মাঝে প্রচারণা চালাতে দেখা গেলেও বাকিদের প্রচারণা লক্ষ্য করা যায়নি। এমনকি কারো কারো পরিচিতিও নেই এ নির্বাচনী এলাকায়।</p> <p>এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এনামুল হক বাবুল বলেন, এমপিদের ক্ষমতা বেশী, তাই সবাই এমপি হতে চায়। যারা মনোনয়ন কিনেছেন তারা সবাই যোগ্য বলে মনে করেন তিনি।</p> <p>অপরদিকে বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলী জুলাই জানান, যারা আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন তাদের আনেককেই তিনি চিনেন না।</p> <p>এদিকে নওয়াপাড়া পৌরসভার কাউন্সিলর রবিন অধিকারী ব্যাচার দাবি এ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সবার চেয়ে তিনিই বেশী গণসংযোগ করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে ব্যাচা বলেন‘ রাস্তা বন্ধ করে কিংবা যানজট সৃষ্টি করে প্রচারণা নয়, আমি তৃনমূলের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময়সহ রাজনৈতিক নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছি দীর্ঘদিন ধরে’। যে কারণে দল তাকেই মনোনয়ন দেবেন বলে মত তার।</p>