<div>প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ-গাগলাজুর সড়কের ঝিমটি বাজার হইতে নওগাঁ পর্যন্ত সাড়ে ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ডুবো সড়কটির পুন:নির্মাণের কাজ শেষ হতে না হতেই সড়কটির বিভিন্ন স্থান ভেঙে ছোট-বড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।</div> <div> </div> <div><span style="font-size:16px">এতে করে ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচলকারী শত শত যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়াও চলতি বোরো মৌসুমে ডিঙ্গাপোতা হাওর থেকে বোরো ধান আনতেও এলাকার কৃষকরা মারাত্মকভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।</span></div> <div> </div> <div><span style="font-size:16px">এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ সড়কটির পুন:নির্মাণ কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণেই ঠিকাদার নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে যেনতেনভাবে কাজ করায় সড়কটি এভাবে ভেঙে যাচ্ছে।</span></div> <div> </div> <div><span style="font-size:16px">উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মোহনগঞ্জ হইতে গাগলাজুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ডুবো সড়কটির ঝিমটি বাজার হইতে নগাঁও গ্রাম পর্যন্ত সাড়ে ৫ কিলোমিটার সড়ক বর্ষার পানির তোরে ভেঙে যায়। পরে সড়কের ওই স্থানটি পুন:নির্মাণের জন্য উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের অধীনে ও হাওরাঞ্চলের বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের (এইচএফএমএল পি) অর্থায়নে গত ২০১৬ সালের আগস্ট মাসের প্রথম দিকে ১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এ ডুবো সড়কটি পুন:নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হয়। পরে দরপত্র অনুযায়ী এ কাজের দায়িত্ব পান নেত্রকোনার সমীরণ চৌধুরী নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। আর গত ২০১৬ সালের আগস্ট মাসের শেষের দিকে কাজ শুরু করে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে এ সড়কের পুন:নির্মাণের কাজ শেষ করার জন্য প্রথম দফায় ঠিকাদারকে সময়মীমা বেঁধে দেওয়া হয়। তবে গত বছর আগাম বন্যায় এ ডুবো সড়কটি তলিয়ে যাওয়ায় ঠিকাদার এ কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করতে না পারায় এলজিইডি কার্যালয় থেকে দ্বিতীয় দফায় এ কাজের সময়সীমা বাড়িয়ে চলতি বছরের আগস্ট মাসের মধ্যে শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়। কিন্তু ঠিকাদার এবার ওই সড়কের কাজে নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে কাজটি গত প্রায় ১ মাস আগে সম্পন্ন করার পরপরই সড়কটির বিভিন্ন স্থান ভেঙে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এলাকাবাসীকে  চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।</span></div> <div> </div> <div><span style="font-size:16px">মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে ওই সড়কের দেওরাজান নামক স্থানে গিয়ে দেখা যায় সড়কের প্রায় ১০০ গজের মধ্যেই ৬টি ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর ওইসব গর্তের পাশে যাত্রী ও মালামাল বোঝাই অনেক ট্রাক, হ্যান্ড-ট্রলি, লেগুনা, অটোবাইক ও ভটভটি গাড়ি আটকা পড়েছে।</span></div> <div> </div> <div><span style="font-size:16px">এ সময় চাল বোঝাই করা একটি হ্যান্ড-ট্রলির চালক আবুল বাশার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কন্টেক্টর (ঠিকাদার) এই রাস্তার কামডাতে (কাজে) পাথল-পাথলা রড, মরা পাথর আর কম সিমেন্ট দেওয়ার কারণেই তো নয়া রাস্তাডা এইভাবে ভাইঙ্গা গেছে। তিনি আরো বলেন, হুনছি এই রাস্তাডা ঠিক করবার লাইগা সরকার ২ কোটি টাকা দিছে। কন্টেক্টরতো (ঠিকাদার)  রাস্তা ঠিক করছে না,পাবলিকের বিপদ আরো বাড়াইয়া দিছে।</span></div> <div> </div> <div><span style="font-size:16px">একই ধরনের কথা বলেন, ওই স্থানে আটকেপড়া যাত্রী বোঝাই একটি লেগুনার চালক সোহেল মিয়া, আবু তাহের, অটোরিকশা চালক মমিনূল ইসলাম দিপু ও লেগুনায় বসে থাকা যাত্রী হিমেল মিয়া, আতিক মিয়া, আবু তালেবসহ অনেকেই। </span></div> <div> </div> <div><span style="font-size:16px">নেত্রকোনার সমীরণ চৌধুরী নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের এ কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, আমি ওই রাস্তার পুন:নির্মাণের কাজ উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলীদের উপস্থিতিতে যথাযত নিয়ম মেনেই সম্পন্ন করেছি। তবে এবার রাস্তার কাজ শেষ হতে না হতেই ১০ টন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন এ রাস্তা দিয়ে হাওরের বাঁধে মাটি কাটার জন্য ২৫-৩০ টন ওজনের এক্সকেভেটর বোঝাই করে লরি চলাচল করায় রাস্তাটির কিছু স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেগুলোও পুনরায় মেরামত করা হবে।</span></div> <div> </div> <div><span style="font-size:16px">এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মাহাবুবুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, এ রাস্তাটির কাজে আমাদের তদারকির কোনো ধরনের ঘাটতি ছিল না। ঠিকাদার সঠিক নিয়মেই এ কাজ সম্পন্ন করেছেন। তবে আমাদের উপজেলার এলজিইডির অধীনে যে সকল রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে সব কয়টি রাস্তার ধারণক্ষমতা ১০ টন। আর ওই সব রাস্তা দিয়ে ২৫-৩০ টন ওজনের ট্রাক-বা লরি চলাচল করলে রাস্তার কিছু ক্ষতি হবেই। তিনি আরো বলেন, আমি ওইসব রাস্তা দিয়ে ২৫-৩০ টন ওজনের ট্রাক বা লরি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্য গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর বরাবরে লিখিতভাবে জানিয়েছি।</span></div>