<p>রাজধানীর শাহজাহানপুরে রেলের পরিত্যক্ত নলকূপে পড়ে শিশু জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় প্রকৌশলী ও ঠিকাদারসহ ছয় আসামির সাজা হবে কি না তা জানা যাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি। দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে আজ বুধবার ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামান এ দিন ঠিক করে দেন।</p> <p>এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি শওকত আলম জানান, জিহাদের মৃত্যুর ঘটনাটি আলোচিত ও স্পর্শকাতর হওয়ায় সম্ভব হলে ফেব্রুয়ারিতেই রায় দিতে পারে আদালত।</p> <p><br /> প্রসঙ্গত, গত ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শাহজাহানপুর রেল কলোনিতে খোলা থাকা কয়েকশ ফুট গভীর এক নলকূপের পাইপে পড়ে যায় শিশু জিহাদ। প্রায় ২৩ ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অভিযানের পর পাইপে জিহাদের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। ওই সন্দেহ রেখেই উদ্ধার অভিযান স্থগিতের ঘোষণা দেয় ফায়ার সার্ভিস। এর কয়েক মিনিটের মধ্যে কয়েকজন তরুণের তৎপরতায় তৈরি করা যন্ত্রে পাইপের নিচ থেকে উঠে আসে অচেতন জিহাদ। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, শিশুটি বেঁচে নেই। পরে জিহাদের মৃত্যুর ঘটনাটি সারাদেশে আলোড়ন তোলে। এর জন্য দায়ীদের শাস্তিরও দাবি ওঠে। এরপর জিহাদের বাবা নাসির ফকির অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যুর অভিযোগ এনে শাহজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।</p> <p>মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহানপুর থানার পরিদর্শক আবু জাফর ২০১৫ সালের এপ্রিল যে অভিযোগপত্র দেন তাতে শাহজাহানপুর রেল কলোনিতে পানির পাম্প বসানোর প্রকল্প পরিচালক রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপ সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেএসআর এর মালিক প্রকৌশলী আব্দুস সালামকে আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ‘অপরাধজনক প্রাণনাশের’ অভিযোগ আনা হয়। পরে বাদীর নারাজি আবেদনে গত বছরের ৩১ মার্চ আরও চারজনকে যুক্ত করে নতুন করে অভিযোগপত্র দেন গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মিজানুর রহমান। এতে জাহাঙ্গীর ও সালাম ছাড়াও বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, কমলাপুর রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন, ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার আবু আহমেদ শাকি, সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) দিপক কুমার ভৌমিককে আসামি করা হয়।</p> <p>অভিযোগপত্রে বলা হয়, রেল কলোনির একটি পানির পাম্পে লোহার পাইপ দিয়ে কূপ খনন করা হয়। কূপে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না করে মুখ খোলা অবস্থায় দীর্ঘদিন পরিত্যক্তভাবে ফেলে রাখা হয়। ফলে বাদীর ছেলে জিহাদ কূপের পাশে খেলার সময় পড়ে মারা যায়।</p> <p>এরপর ২০১৬ সালের ৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামান। এ মামলায় বাদীপক্ষে মোট ১০ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আর আসামিপক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনজন।</p>