<p>বহুল আলোচিত স্যাংশন এবং ভিসানীতির পর যুক্তরাষ্ট্র এবার দেশের গার্মেন্টসশিল্প নিয়ে নতুন কৌশল অবলম্বন করেছে এবং এর মাধ্যমে সরকার ও দেশের মানুষকে নতুনভাবে চাপে ফেলার চেষ্টা করছে। স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার এবং তাদের মানোন্নয়ন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একটি স্মারকলিপির সূত্র ধরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এই মর্মে সতর্ক করেছেন যে যেসব দেশে শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘন করা হবে, সেসব দেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা এবং বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি এ রকম সতর্কবার্তা জারি করার ক্ষেত্রে সম্প্রতি শ্রমিক আন্দোলনের বিষয়টিকে রেফারেন্স হিসেবে নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ, তাই তারা কারণে-অকারণে বিভিন্ন দেশের ওপর স্যাংশন বা ভিসানীতি প্রয়োগের হুমকি দিতেই পারে। তবে সেটা দেশের গরিব শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার্থে কতটা, আর কতটা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে, সেটাই দেখার বিষয়।<br /> <img alt="পোশাকশিল্প নিয়ে এখনই সতর্ক হতে হবে" height="269" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2023/11.November/24-11-2023/1.jpg" style="float:left" width="323" />আমাদের দেশের তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকদের বেতন বিগত পাঁচ বছরের ব্যবধানে আট হাজার থেকে বৃদ্ধি করে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে অর্থাৎ এই পাঁচ বছরের ব্যবধানে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি চার হাজার ৫০০ টাকা, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ৫৬ ভাগ। বর্তমান অতি দ্রব্যমূল্যের বাজারে এই মজুরি বৃদ্ধি নিশ্চয়ই অপর্যাপ্ত, কিন্তু তার পরও বাস্তবতা হচ্ছে, শ্রমিকদের আন্দোলন ছাড়াই অর্ধেকের বেশি বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। শ্রমিকরা আন্দোলন এবং কারখানা ভাঙচুর করেছে, তাদের সর্বনিম্ন বেতন দ্বিগুণ বা তারও অধিক বৃদ্ধি করার দাবিতে। আমরা যদি দেখার চেষ্টা করি বিগত পাঁচ বছর সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বনিম্ন মজুরি কত বৃদ্ধি পেয়েছে, তাহলে আমাদের হতাশ হওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল লেবেলে সর্বনিম্ন ঘণ্টাপ্রতি মজুরি ছিল মাত্র ৭.২৫ ডলার, যা পাঁচ বছর পরে এসে একই আছে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের কিছু রাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ করা আছে এবং তার পরিমাণ ফেডারেল নির্ধারিত সর্বনিম্ন মজুরি থেকে বেশি হলেও বিগত পাঁচ বছরে বৃদ্ধির পরিমাণ মোটেই উল্লেখ করার মতো নয়। কানাডায় ২০১৮ সালে সর্বনিম্ন মজুরি ছিল ঘণ্টাপ্রতি ১৪ কানাডিয়ান ডলার, যা ২০২৩ সালে এসে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে মাত্র ১৬.৫৫ কানাডিয়ান ডলার অর্থাৎ মাত্র ১৮ শতাংশ। এখন অনেকেই ভাবতে পারে যে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার মতো দেশে এত সামান্য বেতনে মানুষ উন্নত জীবন যাপন করছে কিভাবে। বিষয়টি আমার কাছেও এক বড় রহস্য।<br /> আমাদের দেশের শিল্প-কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে শ্রমিক-কর্মচারীদের কম বেতন দেওয়া বা বেতন বৃদ্ধি না করার অভিযোগ যেমন আছে, তেমনি এটাও বাস্তবতা যে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা কথায় কথায় শ্রমিক-কর্মচারী ছাঁটাই করে নিজেদের মুনাফার পরিমাণ ঠিক রাখার চেষ্টা করেন না। মুনাফা হ্রাস পাওয়া তো অনেক পরের কথা। ব্যবসায় ক্ষতি হবে জেনেও বা ব্যাংকঋণের পরিমাণ বেড়ে চলেছে- এ রকম অবস্থায়ও আমাদের দেশের বেশির ভাগ ব্যবসায়ী তাঁদের শ্রমিক-কর্মচারী ছাঁটাই করার উদ্যোগ নেন না। নেহাতই বিপদে না পড়লে, বিশেষ করে ব্যবসা বন্ধের উপক্রম না হলে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা তাঁদের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাঁটাই করতে চান না। দু-একজন ব্যতিক্রম থাকলেও থাকতে পারেন, কিন্তু  বেশির ভাগ ব্যবসায়ী খুব সহজে ছাঁটাই করতে চান না। পক্ষান্তরে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার মতো উন্নত দেশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লাভের পরিমাণ কমার আশঙ্কা দেখলেই কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাঁটাই শুরু করে দেয়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার অনেক কম্পানি লোকবল ছাঁটাই করতে শুরু করেছে। কারণ আগামী বছর অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে তাদের মুনাফা হ্রাস পেতে পারে- এ রকম ধারণা থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাঁটাই শুরু হয়ে গেছে। অনেকেই ভাবতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের দেশের তুলনার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। আমরা সেই তুলনা করতেও চাই না। আমরা না চাইলেও যুক্তরাষ্ট্রের বাস্তবতা এ রকমই এবং এ রকম বাস্তবতায় দাঁড়িয়েই যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মতো দেশকে কখনো ভিসানীতি আবার কখনো নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এখন দেশের গার্মেন্টসশিল্পের শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করেছে।<br /> দেশের পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নে কোনো রকম সতর্কতা জারি করার প্রয়োজন নেই। সামান্য একটি পদক্ষেপ নিলেই তো কাজটি অনেক সহজ হয়ে যায়। যেসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ক্রয় করে, তারা প্রতি পিস কাপড়ের মূল্য দুই ডলার বাড়িয়ে দিয়ে সেই বর্ধিত দুই ডলারের পুরোটাই শ্রমিকদের বেতন হিসেবে দিয়ে দেওয়ার শর্ত জুড়ে দিতে পারে। যদি কোনো রপ্তানিকারক শর্ত অনুযায়ী বর্ধিত দুই ডলার শ্রমিকদের বেতন হিসেবে না দেয়, তখন সেই কম্পানির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু এত সহজ পথে না গিয়ে শুধু ভিসানীতি বা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে আসল সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। বিগত দুই বছরে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় প্রতিটি ভোগ্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে অস্বাভাবিক হারে। দুই বছর আগে আমরা যে কাপড় ২০ ডলার দিয়ে কিনতে পারতাম, সেই কাপড় এখন কিনতে হয় ৩৫ থেকে ৪০ ডলার দিয়ে। জানি না, পোশাকের এ রকম মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের দেশের তৈরি পোশাকের রপ্তানিমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে কি না। আমার জানামতে তেমনটি হয়নি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পোশাকের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও সেই বৃদ্ধির পরিমাণ একেবারেই উল্লেখ করার মতো নয়। বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের দেশে নামমাত্র বেতনে শ্রমিকদের উৎপাদিত পোশাক সস্তায় উন্নত বিশ্বে রপ্তানি হচ্ছে আর সেই পোশাক বেশি মূল্যে আমরা ক্রয় করছি। দেশে শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় কম বেতন পেয়ে, আর আমরা বেশি মূল্যে সেই পোশাক ক্রয় করে ক্রেডিট কার্ডের ঋণের দায়ে জর্জরিত হই। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা এখান থেকে কিছুটা লাভবান হলেও সবচেয়ে বেশি লাভবান হয় যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার বৃহৎ রিটেইল স্টোরের মালিকরা, যারা সস্তায় আমাদের দেশ থেকে তৈরি পোশাক এনে বেশি দামে বিক্রি করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মুনাফা করছে। অথচ দুর্ভাগ্য হচ্ছে, যে দেশের ব্যবসায়ীরা আমাদের দেশের শ্রমিকদের স্বল্প বেতনে সবচেয়ে বেশি লাভবান, সেই দেশই আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়ে আসছে।<br /> আজ যুক্তরাষ্ট্র পোশাকশিল্প নিয়ে নিষেধাজ্ঞার যে হুমকি দিতে পারছে, তার কারণ আমরা এই শিল্পকে আজ পর্যন্ত সেভাবে দাঁড় করাতে পারিনি। পোশাকশিল্পের অগ্রযাত্রার চার যুগ অতিবাহিত হয়েছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত আমরা আমাদের দর-কষাকষির জায়গা তৈরি করতে পারিনি। আমরা আমাদের নিজস্ব মার্কেটিং ব্র্যান্ড সৃষ্টি করতে পারিনি। আজও আমরা নিজেরা রপ্তানি বাজার ধরার পরিবর্তে অপেক্ষায় বসে থাকি যে কখন উন্নত বিশ্বের ব্যবসায়ীরা এলসি নিয়ে এসে হাজির হবে তৈরি পোশাক আমদানি করার জন্য। তা ছাড়া উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের বাইরে আমরা সেভাবে রপ্তানি বাজার বিস্তৃত করতে পারিনি। ফলে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ইউরোপ ভালো করেই জানে যে বাংলাদেশের এই প্রধানতম রপ্তানি খাত অনেকটাই তাদের ওপর নির্ভরশীল। তাই তারা সামান্য আমদানি কমিয়েই বাংলাদেশকে বড় ধরনের চাপে ফেলার সুযোগ নিতে পারে। আজ যদি বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ১৫ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলারের বাজার যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ইউরোপের বাইরে থাকত, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র এই খাতে ভিসানীতি প্রয়োগ বা নিষেধাজ্ঞা জারির হুমকি দিতে পারত না। কেননা এই হুমকিতে আমাদের দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি খাত যত ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাদের দেশের বৃহৎ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের। কেননা তাদের সস্তায় তৈরি পোশাক আমদানির সুযোগ কমে যাবে। ফলে তাদের মুনাফা হ্রাস পাবে।<br /> দেশের গার্মেন্টসশিল্পের শ্রমিকদের স্বার্থকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা মূলত তাদের নতুন এক কৌশল। এই কৌশল মোকাবেলা করতে হবে সতর্কতার সঙ্গে। কেননা আগামী নির্বাচনের সময় এবং এমনকি নির্বাচনের পরেও এই কৌশল বিভিন্নভাবে দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া আগামী বছর উন্নত বিশ্বের অর্থনীতি যে অবস্থায় যাবে, তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে সব ভোগ্য পণ্যের চাহিদা প্রায় ৩০ শতাংশ হ্রাস পাবে। তাই তৈরি পোশাকের চাহিদাও একইভাবে হ্রাস পাবে এবং সেই অনুপাতে তৈরি পোশাক রপ্তানির আদেশও কমতে পারে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ইউরোপের মতো বিশাল বাজার ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন রপ্তানি বাজারের প্রসার ঘটাতে হবেই। লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকার কিছু দেশ, পূর্ব ইউরোপ এবং এশিয়ার অনেক দেশে তৈরি পোশাকের ব্যাপক চাহিদা আছে। পার্থক্য হচ্ছে সেসব দেশে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ইউরোপের মতো প্রভাবশালী বৃহৎ কম্পানি বা চেইন স্টোর নেই, যে তারা প্রভাব খাটিয়ে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের অর্ডার দিয়ে পণ্য নিয়ে আসবে। আমাদের দেশের রপ্তানিকারকদের সেসব দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে তাঁদের কাছে রপ্তানি পণ্য পৌঁছানোর উদ্যোগে নিতে হবে। রপ্তানিমূল্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধান করার জন্য যে নতুন পদ্ধতির প্রচলন শুরু হয়েছে, তা আমাদের দেশেও চালু করার উদ্যোগ নিতে হবে।<br /> আমাদের দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠনের একটি শক্তিশালী এবং কার্যকর গবেষণাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে সেখানে মেধাবী এবং উদ্যমী ব্যক্তিদের নিয়োজিত করতে হবে। এই গবেষণাকেন্দ্রের কাজ হবে এসব নতুন রপ্তানি বাজারের সন্ধান করা, খুঁজে বের করা, বাজারের আকার নির্ধারণ করা, সম্ভাব্য বার্ষিক রপ্তানির পরিমাণ, রপ্তানি পণ্যের গড়মূল্য, রপ্তানির ধরন এবং মাধ্যম প্রভৃতি তথ্য সংগ্রহ করে তা বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখা। সে অনুযায়ী সেসব দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে রপ্তানি আদেশ সংগ্রহ করা এবং সেই রপ্তানি পণ্য নিজ উদ্যোগে তাঁদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা। এসব উদ্যোগ এখন থেকেই গ্রহণ করা প্রয়োজন। তা না হলে দেশের ডলার সংকটের মতো যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে হতে পারে এবং সেখান থেকে উতরানো খুব সহজ হবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে যে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচন-পরবর্তী সময় এবং উন্নত বিশ্বের অর্থনীতির অনিশ্চয়তা- সব মিলিয়ে আগামী দুটি বছর মোটেই ভালো মনে হচ্ছে না। আর এ রকম সময় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গার্মেন্টসশিল্প নিয়ে তাদের নতুন কৌশল গ্রহণ করতেই পারে। তবে সেই কৌশল মোকাবেলায় আমাদেরও যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হাবে এবং সেই সঙ্গে থাকতে হবে আমাদের নিজেদের কৌশল।</p> <p> লেখক : সার্টিফায়েড অ্যান্টি মানি লন্ডারিং স্পেশালিস্ট<br /> ও ব্যাংকার, টরন্টো, কানাডা<br /> nironjankumar_roy@yahoo.com</p>
