<p>সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী নারী শিক্ষককে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছেন প্রধান শিক্ষক। সম্প্রতি ভুক্তভোগী শিক্ষিকার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন ২৭ মার্চ বিভাগীয় উপপরিচালকের (প্রাথমিক শিক্ষা) অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দেবী শুলটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকের লিখিত অভিযোগে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক তাঁকে নিয়মিত অশ্লীল কথাবার্তা বলা, অশালীন আচরণ, নানা প্রলোভন দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন। লোহাগড়া উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট চারজন শিক্ষক কর্মরত। তার মধ্যে প্রধান শিক্ষকসহ দুজন সহকারী মিলে তিনজনই পুরুষ শিক্ষক এবং অন্যজন হলেন নারী শিক্ষক। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হলেন আবুল আজাদ (৫৫)।</p> <p>উত্ত্যক্তের শিকার ওই নারী শিক্ষক বলেন, ‘২০২০ সালের ১০ মার্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই স্কুল থেকে একজন নারী শিক্ষক বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। এর পর থেকেই প্রধান শিক্ষক আমাকে উত্ত্যক্ত করা শুরু করেন। প্রথমে প্রধান শিক্ষক মাঝেমধ্যে আমাকে কল দিয়ে কথা বলতেন। দিনে-রাতে ৩০ থেকে ৪০ বারও ফোন দিতেন। নিষেধ করলেও তিনি শুনতেন না। এর পর থেকে বিদ্যালয়ে সুযোগ পেলেই আমাকে অশ্লীল প্রস্তাব দিতেন। আমাকে তিনি বোরকা, জমি-বাড়ি, গাড়ি কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেন। প্রতিদিনই বিদ্যালয়ে গেলে উত্ত্যক্ত করেন, বাসায়  ফিরে এলেও দিনে-রাতে ফোনে বিরক্ত করেন।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর মৌখিকভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও  সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করি। এর পরও কোনো ফল পাইনি। তাই চলতি বছর ১০ জানুয়ারি উপজেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবুল আজাদ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চলছে।’ লোহাগড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ১৩ মার্চ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।’ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ভুক্তভোগী শিক্ষকের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন ২৭ মার্চ বিভাগীয় উপপরিচালকের (প্রাথমিক শিক্ষা) অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছি।’</p>