চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় দেশসেরা ফল অর্জন করেছে নরসিংদীর নাছিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল অ্যান্ড হোমস। এ বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি থেকে ৩২০ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩২০ জনই জিপিএ ৫ পেয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় অনলাইনে এসএসসির ফল ঘোষণার পর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইমন হোসেন।
প্রতিষ্ঠানটির ধারাবাহিক সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল কাদির মোল্লা ও নাছিমা মোল্লা।
এর আগে ২০২২, ২০১৭ ও ২০১৫ সালে শতভাগ পাসসহ শতভাগ জিপিএ ৫ পেয়ে দেশসেরা ফল অর্জন করেছিল এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নাছিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল অ্যান্ড হোমস ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে পিইসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় টানা শতভাগ পাসসহ ফলের ভিত্তিতে প্রায় প্রতিবছরই দেশসেরার স্থান দখল করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৩১৭ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে তিনজন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ মোট ৩২০ শিক্ষার্থীই জিপিএ ৫ পেয়েছে। এর আগে ২০২৪ সালে ২৯৪ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২৯৩ জনই জিপিএ ৫ পেয়েছিল।
২০২৩ সালে ২৭৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৭০ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল। ২০২২ সালে ২৬৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৬৬ জনই জিপিএ ৫ পেয়েছিল। এ ছাড়া ২০২১ সালে ২৪৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৩৭ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল। ২০২০ সালে ২১৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২০০ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল। ২০১৯ সালে ১৭১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ১৬৮ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল। ২০১৮ সালে ১৩৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ১৩৭ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল এবং ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ১৬৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই জিপিএ ৫ পেয়েছিল।
গতকাল বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পাওয়া তানভীর আহমেদ সামী কালের কণ্ঠকে বলে, ‘মহামারি করোনার কারণে আমাদের সবাই অটোপাস বলে অপবাদ দিত। এ ছাড়া গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কারণে পড়ালেখার অনেক ব্যাঘাত ঘটেছিল। এসব কিছুর মধ্যে শিক্ষকদের কঠোর পরিশ্রমে আজ আমাদের দেশসেরা ফলে সেই অপবাদ মুছে যাবে।
’
নাছিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল অ্যান্ড হোমসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও থার্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বরাবরই ভালো ফল করছে। এবার শতভাগ পাসসহ শতভাগ জিপিএ ৫ পেয়ে দেশসেরা ফলের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে। সারা দেশের সার্বিক ফল বিশ্লেষণ করলে আশা করছি, আমরা দেশসেরা অবস্থানে থাকব। মূলত নরসিংদীর মতো মফস্বল শহরে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের অঙ্গীকার নিয়েই আমি ও আমার সহধর্মিণী নাসিমা বেগম স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আমি সব সময় চেয়েছি, সুশিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মানবসম্পদে পরিণত হোক; যাতে আমাদের সমাজে সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত বেকার তৈরি না হয়।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইমন হোসেন বলেন, ‘একটি বিদ্যালয়ের ভালো ফলের মূল মন্ত্র হচ্ছে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে সমন্বয়। আর আমাদের মূলমন্ত্র হচ্ছে আবদুল কাদির মোল্লা। স্যারের ইনোভেটিভ চিন্তা-চেতনা, সময়োপযোগী সঠিক দিকনির্দেশনায় আমাদের এই ফল অব্যাহত আছে। এ ছাড়া আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এত কঠোর পরিশ্রম করে, যেখানে ভালো ফল অর্জন করা খুবই স্বাভাবিক। আমরা শুধু একাডেমিক ফলে নয়, কো-অ্যাক্টিভিটি কারিকুলামেও দেশসেরা স্থান অর্জন করে আসছি।’