<p>‘ডাকসু নির্বাচন দেখে আমরা অনেকটাই আশাহত। ডাকসুর মতো নির্বাচন আমরা রাকসুয় (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ) চাই না। নির্বাচনের নামে নাটক হয়েছে। আমরা যে সংগঠনই করি না কেন আগে আমরা ছাত্র। তাই রাকসু পুনর্গঠন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এখন ক্যাম্পাসের ছাত্রসংগঠনগুলোকে একত্র হতে হবে এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’ কালের কণ্ঠকে বলছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ফিদেল মনির। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ডাকসু সচলের জন্য যে তৎপরতা শুরু হয়েছিল তা রাকসু পুনর্গঠনে অনেকটাই ইতিবাচক ছিল। কিন্তু ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ ভাটা ফেলেছে রাকসুর হাওয়ায়। রাবি ছাত্রদল ও প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এই হতাশা টের পাওয়া যায়। তবে রাবি ছাত্রলীগের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিতর্কিত করতেই স্বাধীনতাবিরোধী বা অন্য যেসব জোট রয়েছে তারা এসব যড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। </p> <p>ডাকসু নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা। সোমবারও তারা বিক্ষোভ মিছিল করেছিল ক্যাম্পাসে। গতকাল বিকেলে সংগঠনটির কয়েকজন নেতাকর্মী কালের কণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গুণীজন তৈরির কারখানা। অথচ সেখানেই ভোটের বিষয়ে নানা অনিয়ম ঘটল। এমন ঘটনা যে রাকসু নির্বাচনেও ঘটবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এই নেতাকর্মীরা ডাকসু নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানায়।</p> <p>বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত রাকসু নির্বাচন হয়েছে ১৬ বার। ১৯৫৬-৫৭ মেয়াদে প্রথম এবং ১৯৮৯-৯০ মেয়াদে সর্বশেষ ভোট হয়। এর মধ্যে ভিপি ও জিএস পদে সাতজন করে ছাত্রলীগের ১৪ জন, ছাত্র ইউনিয়নের আটজন, ছাত্রমৈত্রী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ও ছাত্র সমিতির দুজন করে প্রার্থী নির্বাচিত হন।</p> <p>রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, ‘ডাকসুয় যা ঘটল তা পুরো নির্বাচনকে কলঙ্কিত করেছে। তাই রাকসু নির্বাচনের জন্য আমাদের নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। ডাকসু নির্বাচনের অনিয়ম ও অগ্রহণযোগ্যতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তার পরই রাকসু নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। সুষ্ঠুভাবে রাকসু নির্বাচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দায়িত্ব নিয়ে ক্যাম্পাসে ছাত্রসংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।’</p> <p>রাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে যা ঘটেছে তা আমাদের জন্য নেতিবাচক। মঙ্গলবার রাকসু সংলাপ কমিটির কাছে আমাদের দাবি জানিয়েছি। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অগ্রগতির ওপর ভিত্তি করেই আমরা পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করব।’</p> <p>তবে ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘রাকসু নির্বাচনের ক্ষেত্রে ডাকসু নির্বাচন কোনো প্রভাব ফেলবে না।’ তিনি বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে ভিপি পদে নুরুল হক জিততে পারতেন না। মূলত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিতর্কিত করতেই স্বাধীনতাবিরোধী বা অন্য যেসব জোট রয়েছে তারা এসব যড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।’</p>