ঢাকা, শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫
২৭ আষাঢ় ১৪৩২, ১৬ মহররম ১৪৪৭
সরেজমিন : চাঁপাইনবাবগঞ্জ

জমি হারিয়ে দেশান্তরি হচ্ছে ক্ষুদ্রজাতি

বিপ্লব রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ফিরে
বিপ্লব রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ফিরে
শেয়ার
জমি হারিয়ে দেশান্তরি হচ্ছে ক্ষুদ্রজাতি
‘১৯৭২ সালে ৪৫ বিঘা জমির জন্য সন্ত্রাসীরা আমার নানা বুধরাই টুডু ও নানি বালে হাসদাকে রাতের বেলা ঘরে ঢুকে গুলি করে খুন করে। আমার মা তখন নেহাতই শিশু। ওই রাতেই আমার মামা-মাসিরা প্রাণ ভয়ে নওগাঁর ঠাকুরহাটের গ্রাম থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেন নেয়ামতপুরে খাসজমিতে। তাঁরা আর কোনো দিনও পৈতৃক জমির দখল পাননি।
সেই থেকে সবাই ভূমিহীন। দিনমজুরি করে কোনো রকমে বেঁচে আছেন।’ বেদনার্ত স্বরে কথাগুলো বলছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের øাতকের ছাত্র কমল হেমরম।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, শুধু কমলের পরিবারই নয়, স্বাধীনতার পর থেকে উত্তরবঙ্গের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬টি জেলায় বসবাসকারী সাঁওতাল, ওঁরাও, মুণ্ডা, মাহাতোসহ ২৭টি ভাষাগত সংখ্যালঘু তথা ক্ষুদ্রজাতির প্রায় ১৭ লাখ মানুষ ক্রমেই ভূমিহীন হয়েছে।
জমিজমার বিরোধ নেই, ক্ষুদ্রজাতির এমন পরিবার এখন খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর। প্রতিনিয়ত উচ্ছেদ আতঙ্ক। জমি দখলের জন্য সন্ত্রাসীদের মামলা-মোকদ্দমা, জাল দলিল, জবরদখল, খুন, ধর্ষণ, হুমকি-ধমকি লেগেই আছে। জীবন বাঁচাতে অনেকেই একে একে পাড়ি জমাচ্ছে ভারতে।
ক্ষুদ্রজাতির জমির লড়াইকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের জিনারপুরে প্রকাশ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন একজন ওঁরাও নারীনেত্রী। তিনি একই সঙ্গে পার্বতীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। এখনো জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর। পুলিশ এ মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করলেও প্রধান আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন কালের কণ্ঠকে বলেন, জমিজমা কেড়ে নেওয়ার জন্যই ক্ষুদ্রজাতির ওপর এত নির্যাতন।
জমির জন্য খুন-ধর্ষণ, মামলা-হামলা ইত্যাদি লেগেই আছে। প্রশাসন সব সময়ই সন্ত্রাসীদের পক্ষ নেয়। এ কারণে ক্ষুদ্রজাতির লোকজন বিচার পায় না। অনেকেই বাধ্য হয়ে দেশান্তরি হচ্ছে। ওপারে যে তারা খুব ভালো আছে, তাও নয়। সেখানে তারা দিনমজুরি করে আধপেটা খেয়ে আছে ঠিকই, কিন্তু হামলা-মামলা, খুন-ধর্ষণের ভীতি থেকে তো বেঁচেছে। অন্যদিকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেও নেমে আসে চরম নির্যাতন। এ ছাড়া রয়েছে জাতপাতের বৈষম্য।
একই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সবিন মুণ্ডা বলেন, ক্ষুদ্রজাতির জমি রক্ষার দাবিতে ওঁরাও নেত্রী ২০১২ সালের ২-৩ অক্টোবর দুই বছরের শিশুসন্তানকে গামছা দিয়ে পিঠে বেঁধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন পদযাত্রা কর্মসূচিতে। ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদযাত্রাটি ছিল রাজশাহীর নাচোল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কাঁকনহাট পর্যন্ত। তখন থেকেই তিনি দুষ্কৃতকারীদের রোষানলে পড়েন। তাঁর নিজস্ব ২২ বিঘা জমি কেড়ে নিতেও সন্ত্রাসীরা তৎপর। এ কারণেই তাঁকে সম্ভ্রম হারাতে হলো। এ মামলার প্রধান আসামিরা সরকারি দলের। তাই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ক্ষুদ্রজাতির লোকেরা হতদরিদ্র ও সহজ-সরল। তাই নির্যাতন করে তাদের জমিজমা কেড়ে নেওয়া সহজ। এ কারণে ভূমিদস্যুদের সহজ শিকার হচ্ছে তারা। তবে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সময়ই তাদের আইনি সহায়তা দিতে চেষ্টা করি। সচেতনতার অভাবে তারা আমাদের কাছে খুব একটা আসে না।’
জেলা সদর হাসপাতালে কথা হয় গণধর্ষণ ও মারধরে গুরুতর আহত ওঁরাও নেত্রীর সঙ্গে। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘গোমস্তাপুরের জিনারপুর গ্রামে আমার মোট ৪৮ বিঘা জমির মধ্যে ২২ বিঘা বিরোধপূর্ণ বলে সরকারের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। বাকি জমির একাংশে আমি একটি শিশুশিক্ষার স্কুল ও কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছি। এখন আমার নিজস্ব প্রায় ২২ বিঘা জমিও সন্ত্রাসীরা কেড়ে নিতে চায়।’ তিনি ৪ আগস্ট নির্যাতনের রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘সেদিন আমরা কয়েকজন মেয়ে জমিতে কাজ করছিলাম। দুপুর ১২টার দিকে ৩০-৩৫ জন সন্ত্রাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করতে আসছে দেখে আমি অল্প বয়স্ক মেয়েদের পালিয়ে যেতে বলি। তাঁরা সরে গেলেও আমরা কয়েকজন পালাতে পারিনি। ওদের হামলার মূল লক্ষ্যই ছিলাম আমি। সন্ত্রাসীরা আমাকে লাঠি ও রড দিয়ে মারছিল। আমি দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করছিলাম। আমার চোখ দিয়ে এক ফোঁটা পানিও পড়েনি। আমি ওদের বলছিলাম, তোরা আমাকে মেরে ফেল। আমাকে বাঁচিয়ে রাখলে তোরা কেউই বাঁচবি না।’
ওঁরাও নেত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘এরপর মনিরুল ইসলাম, আবুল কালাম ও আক্তার টেনেহিঁচড়ে ফাঁকা মাঠের আইলের কিনারে নিয়ে আমাকে ধর্ষণ করে। ওরা আমার পাওয়ারটিলার, মোষ ও চাষের যন্ত্রপাতিও লুট করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় আমার স্বামী লোকজন ডেকে আমাকে উদ্ধার করেন। রাত ১২টার দিকে আমি থানায় গিয়ে মামলা করি। ওই রাতেই পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করি লুট হওয়া মালামাল। সে রাতে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পরদিন আমার ডাক্তারি পরীক্ষা হয় দুপুর দেড়টার দিকে। অনেক দেরিতে পরীক্ষা করায় মেডিক্যাল রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া মামলার প্রধান আসামি মনিরুল ইসলাম (৪৮), আবুল কালাম, আক্তার, আফজাল হোসেন, আব্দুল হামিদ (৪৫), আব্দুস সালাম, তরিকুল ইসলাম ও শেরপুর গ্রামের আক্তার (৪০) এখনো ধরা পড়েনি।’
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার বশির আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা ওই মামলার আসামিদের ধরতে তৎপর আছি। এরই মধ্যে আটজনকে ধরা হয়েছে। কিন্তু প্রধান আসামিরা সবাই গা ঢাকা দিয়েছে। এর পরও আমরা বিভিন্ন স্থানে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছি। কোনো রাজনৈতিক প্রভাব ও চাপের মুখে আমরা পিছু হটব না। এ মামলায় ন্যায়বিচার করেই ছাড়ব।’ প্রায় ২৫ ঘণ্টা পর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে বলে ধর্ষণের আলামত নষ্ট হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ধর্ষিত নেত্রী সন্ধ্যার দিকে থানায় এসেছিলেন। আমরা ওই রাতে ডাক্তারি পরীক্ষার চেষ্টা করেছি। কিন্তু রাতে সাধারণত এমন পরীক্ষা হয় না। তাই হাসপাতালে তাঁকে ভর্তির পর পরদিন সকাল সোয়া ১১টায় পরীক্ষা করা হয়েছে। মেডিক্যাল রিপোর্টেও সময় উল্লেখ আছে।’ এসপি বশির আরো বলেন, ‘মেডিক্যাল রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া না গেলেও ধর্ষিতার জামাকাপড়ও পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। এতে নেতিবাচক ফল পাওয়া গেলেও সন্ত্রাসীদের নিস্তার পাওয়ার কোনো উপায় নেই। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা মতে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে তাদের ধরা হবে।’
গত বুধবার (২৭ আগস্ট) হাসপাতালে ওঁরাও নেত্রীকে দেখতে যান রাঙামাটির সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, ঐক্য ন্যাপের আহ্বায়ক পঙ্কজ ভট্টাচার্য, জনসংহতি সমিতির দীপায়ন খীসা প্রমুখ। ঊষাতন তালুকদার বলেন, ‘ওঁরাও নেত্রীর ওপর এ ধরনের বীভৎস নির্যাতন কল্পনাও করা যায় না। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। পাশাপাশি দাবি জানাই, ক্ষুদ্রজাতির ওপর সব নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধে সরকার যেন তাদের পাশে দাঁড়ায়।’ তিনি ওঁরাও নেত্রীর চিকিৎসার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।  ওঁরাও নেত্রীর ওপর হামলা ও ধর্ষণের প্রতিবাদ, ক্ষুদ্রজাতির মৌলিক অধিকারসহ ৯ দফা দাবিতে ওই দিন সকালে গোমস্তাপুরের আড্ডা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কার্যালয় অভিমুখে গণপদযাত্রার আয়োজন করে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ। এতে অংশ নেয় ক্ষুদ্রজাতির হাজার হাজার নারী-পুরুষ।  
দেশান্তরি হচ্ছে ক্ষুদ্রজাতি : স্থানীয় একাধিক সূত্রে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, জমিজমা হারিয়ে একে একে উজাড় হচ্ছে ক্ষুদ্রজাতির গ্রাম। জমিদার শোষণের বিরুদ্ধে ইলা মিত্রের নেতৃত্বে ১৯৫০ সালের ৫ জানুয়ারি বিদ্রোহ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের সাঁওতালরা। তখন তারাই ছিল সেখানকার প্রধান বাসিন্দা। এ ছাড়া নাচোল অঞ্চলে ব্যাপক সংখ্যায় বাস ছিল বর্মণ, মাহাতো, সিং, ওঁরাও, মুণ্ডাসহ অন্যান্য ক্ষুদ্রজাতির। সে সময় ওই অঞ্চলে বাঙালি ছিল মাত্র পাঁচটি গ্রামে। কিন্তু জমিজমার দখল হারিয়ে এখন সেখানে মাত্র সাত-আট হাজার সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর বসত রয়েছে। বাকিরা পাড়ি জমিয়েছে ভারতে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী অঞ্চলে গত চার বছরে প্রায় ২৫০ ক্ষুদ্রজাতি পরিবার দেশান্তরি হয়েছে। আরো অনেকে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ ছাড়া জমির জন্য খুন-খারাবি, জনবসতিতে হামলা, মারধর ইত্যাদি লেগেই আছে। রয়েছে উচ্ছেদ আতঙ্কও। দিনাজপুরের নবাবপুর উপজেলার কচুয়া গ্রামের ফাগু সরেনের ৩৩ একর জমি ছিল। ওই জমি হাতিয়ে নিতে ১৯৬৫-৬৬ সালের দিকে তাঁকে খুন করে ভূমিদস্যুরা। এরপর ওই জমির জন্যই নিহত ব্যক্তির বড় ছেলে গোসাই সরেন খুন হন ২০১১ সালে। সব শেষে জমিটির উত্তরাধিকারী ছোট ছেলে ধুডু সরেনও একই কারণে খুন হন এ বছরের ২ আগস্ট। জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে ২০০৬ সালে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের খালিপপুরে (৯ নম্বর কুশদহ ইউনিয়ন) শ্বাস রোধ করে খুন করা হয় সরকার টুডু ও সোম হাসদা নামের দুজনকে। ২০১২ সালের মে মাসে নওগাঁর মান্দার চকগোপাল গ্রামে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে কুপিয়ে খুন করা হয় একসঙ্গে চারজন সাঁওতাল ক্ষেতমজুরকে।
সম্প্রতি বন বিভাগের উচ্ছেদ নোটিশের কারণে আতঙ্কে রয়েছে রংপুরের লোহানীপাড়া চড়কডাঙ্গা গ্রামের সহস্রাধিক ভূমিহীন সাঁওতাল পরিবার।
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

৪৮তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষা নিয়ে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বিজ্ঞপ্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
৪৮তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষা নিয়ে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বিজ্ঞপ্তি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার)-এর স্বাক্ষরসংবলিত একটি ভিত্তিহীন প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে, যা কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে জানিয়েছে পিএসসি।

গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিএসসি বলেছে, এ রকম কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন থেকে দেওয়া হয়নি। এ ধরনের তথ্যে বিভ্রান্ত না হয়ে সঠিক তথ্যের জন্য কমিশনের মূল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি ও নোটিশ অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

এ ধরনের বানোয়াট তথ্য প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

মন্তব্য

ভারতের ত্রিপুরা গেল প্রধান উপদেষ্টার উপহারের আম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
শেয়ার
ভারতের ত্রিপুরা গেল প্রধান উপদেষ্টার উপহারের আম

উপহার হিসেবে ভারতের ত্রিপুরায় ৩০০ কেজি আম পাঠিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য উপহার হিসেবে পাঠানো রংপুরের বিখ্যাত হাঁড়িভাঙ্গা আম গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যায়।

জানা যায়, গতকাল বিকেলে আমভর্তি কাভার্ড ভ্যান স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। ৬০টি কার্টনে করে মোট ৩০০ কেজি হাঁড়িভাঙ্গা আম পাঠানো হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কার্গোওয়ার্ল্ড লজিস্টিকস নামের একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার এই উপহার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম আম পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাষ্ট্রীয়  বিবেচনায় সকল প্রকার ফি ও আদায়যোগ্য কর ছাড়াই আমগুলো ছাড়করণ করা হয়। এ সময় দুই দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 

প্রতিবছর ত্রিপুরার রাজ্য সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য উপহারসামগ্রী হিসেবে আম পাঠায় বাংলাদেশ।

বিপরীতে উপহার হিসেবে আসে ত্রিপুরার বিখ্যাত রসালো কুইন জাতের আনারস। আম-আনারস বিনিময় ছাড়াও প্রতিবছর দুর্গাপূজায় ভারতীয়দের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে সীমিত সময়ের জন্য ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়।

 

 

মন্তব্য

১৮ বিচারককে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
১৮ বিচারককে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার

বিচারক বিকাশ কুমার সাহাসহ ১৮ বিচারককে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁদের অবসরে পাঠিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ। জানা গেছে, গত ৩ জুলাই আইন ও বিচার বিভাগ সুপ্রিম কোর্টে ওই প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট গতকাল তা আইন ও বিচার বিভাগে পাঠিয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের ওই ১৮ সদস্যের চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে জনস্বার্থে তাঁদের ২০১৮ সালের চাকরি আইনের ৪৫ ধারার বিধান মতে চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হলো।

অবসরে পাঠানো বিচারকরা হলেন বিকাশ কুমার সাহা, শেখ মফিজুর রহমান, মো. মাহবুবার রহমান সরকার, শেখ গোলাম মাহবুব, মো. মজিবুর রহমান, মো. এহসানুল হক, মো. জুয়েল রানা, মো. মনির কামাল, সহিদুল ইসলাম, আল মাহমুদ ফায়জুল করীম, মো. নাজিমোদ্দৌলা, এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী, ফজলে এলাহী ভূইয়া, আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান, মো. রুস্তম আলী, মো. নুরুল ইসলাম, এ কে এম এনামুল করিম ও মোহাম্মদ হোসেন।

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের ওই সদস্যরা বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সুবিধা পাবেন।

 

 

মন্তব্য

এনবিআরের প্রথম সচিব বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এনবিআরের প্রথম সচিব বরখাস্ত

অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব তানজিনা রইসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আদেশে বলা হয়েছে, তানজিনা রইসের বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ৩(খ) এবং ৩(গ) অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যেহেতু সরকারি কর্মচারী বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ১২ অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ তাঁকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা প্রয়োজন ও সমীচীন মনে করে, সেহেতু ওই বিধিমালার বিধি ১২(১) অনুযায়ী প্রথম সচিব তানজিনা রইসকে (পরিচিতি নম্বর ৩০০১৫৮) চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, তিনি ছুটি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পর আর দেশে ফিরে আসেননি। তাঁকে মেইলে বারবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।

তানজিনা রইসের ব্যাচমেট ও ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারা জানান, তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন এবং সেখানে একটি চাকরি করছেন। তাঁর আর দেশে ফিরে এসে চাকরিতে যোগ দেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই।

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ