<p><strong>সুরা জুমার</strong></p> <p>আগের সুরার শেষের দিকে আদম (আ.)-এর ঘটনা সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করা হয়েছিল। আলোচ্য সুরায় মানবসৃষ্টির সূচনা থেকে সমাপ্তি পর্যন্ত বর্ণনা করা হয়েছে। এই সুরার প্রধান আলোচ্য বিষয় আল্লাহর একত্ববাদ, আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ, কোরআন ও ওহি। কোরআন এসেছে আল্লাহর পক্ষ থেকে—এ কথার মাধ্যমে সুরাটি শুরু হয়েছে। এরপর আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলিতে শিরকের সম্ভাবনা নাকচ করা হয়েছে। আসমান-জমিনের সৃষ্টি, রাত-দিন, চন্দ্র-সূর্য, মাটির বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি বর্ণনা করে আল্লাহর অসীম কুদরতের কথা জানানো হয়েছে। মুমিন ও কাফিরের মধ্যে তুলনামূলক পর্যালোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যখন কোরআন তিলাওয়াত করা হয়, তখন মুমিনের অন্তর বিগলিত হয়ে যায়। কিন্তু কাফিরদের অবস্থা এর ব্যতিক্রম। এরপর কিছু উপমা আনা হয়েছে, যেগুলো শিরকের অসারতা প্রমাণ করে। মহানবী (সা.)-এর মৃত্যু প্রসঙ্গও আনা হয়েছে। কিয়ামতের হিসাব-নিকাশ ও ফায়সালার কথা বলা হয়েছে। সুরাটি শেষ হয়েছে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করার মাধ্যমে। একদল মুমিন, কিয়ামতের দিন তাদের জান্নাতের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে; আরেক দল কাফির, কিয়ামতের দিন তাদের জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।</p> <p> </p> <p><strong>সুরা গাফের বা মুমিন</strong></p> <p>আগের সুরার মূল বিষয় ছিল কিয়ামত। আলোচ্য সুরায়ও একই বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। এটি যেহেতু মাক্কি সুরা, তাই এখানেও আল্লাহর একত্ববাদ ও পরকাল বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। এই সুরায় আরশ বহনকারী ফেরেশতাদের সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। সত্য-মিথ্যার চিরন্তন দ্বন্দ্বের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে কিয়ামতের দিন জাহান্নামবাসী জাহান্নাম থেকে বের হওয়ার আবেদন করবে। কিন্তু তাদের আবেদন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করা হবে। এই সুরায় মুসা (আ.), ফেরাউন, হামান ও কারুন সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। সুরার শেষে মহানবী (সা.)-কে ধৈর্য ধারণ করার উপদেশ দেওয়া হয়েছে, যেভাবে মুসা (আ.) ধৈর্য ধারণ করেছেন।</p> <p> </p> <p><strong>সুরা ফুসসিলাত বা হা-মিম সিজদা</strong></p> <p>এই সুরার সঙ্গে আগের সুরার মিল এভাবে যে উভয় সুরার সূচনা হয়েছে কোরআনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনার মাধ্যমে। উভয় সুরার মধ্যে মাক্কি সুরাগুলোর বিষয়বস্তু আলোচিত হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, অবিশ্বাসীরা কোরআন নিয়ে চিন্তা করে না। আর নবী-রাসুলরা সবাই মানুষ ছিলেন। এই সুরায় আদ ও সামুদ জাতির ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে, পৃথিবীতে শক্তিমত্তায় ও ক্ষমতায় কেউ তাদের সমকক্ষ ছিল না। এই সুরায় সতর্ক করা হয়েছে যে কিয়ামতের দিন মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। এখানে আরো বলা হয়েছে যে কিছু মানুষ কোরআন নিয়ে ব্যঙ্গ করে। কিন্তু শিগগিরই তাদের পরিণতি ভয়াবহ হবে। এই সুরায় মানবচরিত্রের কিছু বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে যে মানুষ সুখের দিনে উদ্ধত হয় আর বিপদের দিনে কান্নাকাটি শুরু করে। এমন ভবিষ্যদ্বাণীর মাধ্যমে সুরাটি শেষ হয়েছে যে প্রতিটি যুগে মানুষকে সৃষ্টিজগতের কিছু কিছু রহস্য উদ্ঘাটন করার ক্ষমতা দেওয়া হবে।</p>