সাত দাবিতে সারা দেশে কর্মবিরতির ঘোষণা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সাত দাবিতে সারা দেশে কর্মবিরতির ঘোষণা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির
সাত দফা দাবিতে ষষ্ঠ দিনের মতো গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।ছবি : কালের কণ্ঠ

বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে আজ মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাত দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচির ষষ্ঠ দিনে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম।

এদিকে আন্দোলনরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গতকাল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেছেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মচারীরা ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করছেন। তাঁরা কোনো অন্যায় করছেন না।

তাঁরা রাস্তা বন্ধ করছেন না, জনদুর্ভোগও সৃষ্টি করছেন না। নতুন বাংলাদেশে কোনো বৈষম্য চলতে পারে না। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন দীর্ঘদিন বৈষম্যের শিকার। তাঁরা যে দাবিতে আন্দোলন করছেন তা যৌক্তিক ও ন্যায্য।
তাঁদের দাবি মেনে নিন, নয়তো আঙুল বাঁকা করতে বাধ্য হব।

অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন, হয়রানি বন্ধ, মামলা প্রত্যাহারসহ সাত দফা দাবিতে সারা দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গত ২১ মে থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চলমান আন্দোলন বৈষম্যহীন একটি সুন্দর ও আধুনিক বিতরণব্যবস্থা বিনির্মাণের আন্দোলন, যেখানে সারা দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর অংশগ্রহণ রয়েছে। পক্ষান্তরে আরইবি (বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড) আগের মতো সরকারের কাছে ভুল বার্তা দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারের এই যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে।

অথচ এখানে হাজার হাজার পল্লী বিদ্যুতের কর্মী সমবেত হয়েছেন স্বেচ্ছায় এবং স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে, যাঁরা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের শোষণ, বৈষম্য, নির্যাতন ও নিপীড়ন থেকে মুক্তি চান। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের সঙ্গে অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা দেশের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমাদের বিরোধ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সঙ্গে, যা সমাধানে আমরা এই কর্মসূচি পালনে বাধ্য হয়েছি।

সম্মেলনে আরো জানানো হয়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথম চার দিন অবস্থান কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালনের পর সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে পঞ্চম দিনে আরইবির বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়। আজ ষষ্ঠ দিনের মতো বিদ্যুৎ সেবা স্বাভাবিক রেখে কর্মসূচি পালিত হলেও সরকারের পক্ষ থেকে সমস্যা সমাধানে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ছুটি ঘোষণা

শেয়ার
ছুটি ঘোষণা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি তবে বিশেষ ব্যবস্থায় কালের কণ্ঠের সব বিভাগ খোলা থাকবেসম্পাদক

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
উপদেষ্টা মাহফুজ আলম

এক-এগারোর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে

বিবিসি বাংলা
বিবিসি বাংলা
শেয়ার
এক-এগারোর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, এক-এগারোর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পোস্টে তিনি লেখেন ১/১১-এর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ফেসবুকে প্রথমে এক লাইনের এই পোস্টটি দেন। এর কিছুক্ষণ পর আবার সেই পোস্টটি এডিট করে আরো একটি লাইন যুক্ত করেন।

সেখানে তিনি লেখেন, ১/১১-এর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে! তবে জুলাই জয়ী হবে। জনগণের লড়াই পরাজিত হবে না।

পোস্টটি দেওয়ার ঘণ্টাখানেক পর কেন তিনি এই মন্তব্য করেছেন তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। ওই ফেসবুক পোস্টেরই কমেন্ট বক্সে তিনি লেখেন, ১/১১-এর পদধ্বনির কথা কেন বলসি? জুলাইয়ের শক্তিগুলোর ঐক্য নাই এবং এ ঐক্য ধরে না রাখার ক্ষেত্রে আমাদের যতটা দায়, তার   চেয়ে বেশি পুরাতন ১/১১ শক্তিগুলোর অন্তর্ঘাতী কর্মকাণ্ড দায়ী।

তিনি লেখেন, জুলাইয়ের শক্তিগুলোর আত্মতুষ্টির সুযোগে পুরাতন ১/১১পন্থীদের বিভাজন এবং অন্তর্ঘাতের সুযোগ বৃদ্ধি। আওয়ামী লীগকে স্বাভাবিকীকরণ এবং জুলাইয়ের ছাত্র-জনতাকে ভিলিফিকেশন মূলধারা হয়ে উঠসে। পুরাতন অর্থনৈতিক ও কালচারাল বন্দোবস্ত ফিরিয়ে আনার তোড়জোড়, যার পথ ধরে লীগকে ফিরিয়ে আনার পথ প্রশস্ত হবে। এই পোস্ট দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম গত বছরের ২ আগস্ট দেওয়া তাঁর একটি পুরনো পোস্ট শেয়ার দিয়ে লেখেন, যখন সবাই এক দফা দিয়ে হাসিনাকে পতনের কথা বলছিল, ২ তারিখ রাতে সমন্বয়কদের চাপের মুখে এক দফা দিতে বলা হচ্ছিল, তখন আমরা অসহযোগের কথা বলছিলাম।
অনেকের সমালোচনার মুখেও অসহযোগ আন্দোলনকে কর্মসূচি বানানো হইছিল।

মন্তব্য
সালাহউদ্দিন আহমদ

বর্তমান সরকারকে সাংবিধানিক বৈধতা দেবে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বর্তমান সরকারকে সাংবিধানিক বৈধতা দেবে বিএনপি
সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, জাতীয় ঐক্য কমিশনের পক্ষ থেকে জুলাই জাতীয় সনদের যে খসড়া বিএনপিকে দেওয়া হয়েছে, তাতে যেকোনো সময় আমরা স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত। এতে কোনো দ্বিমত নেই। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, দেশের ঐতিহ্য অনুযায়ী বিএনপি বর্তমান সরকারকে (রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলে) সাংবিধানিক বৈধতা দেবে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশানের নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সনদের খসড়া যেটা আমাদের দেওয়া হয়েছে, সেই অনুযায়ী যদি সনদ আগামীকাল আমাদের কাছে প্রেরণ করে, তাহলে তা আমরা কালকেই সই করব। যেকোনো মুহূর্তে সই করতে রাজি। এ বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, কিছু কিছু বিষয়ে নোট অব ডিসেন্টসহ, সেই কাগজ যখনই আমাদের দেবে তখনই আমরা সই করে দেব।

সেই অঙ্গীকারনামা আমরা দিয়েছি। এটা নিয়ে কোনো বিভ্রান্তির সুযোগ নাই। তবে এগুলো বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে কেউ যদি আলোচনা করতে চান, তাহলে তাতেও আমরা যাব।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া ঐকমত্য কমিশন থেকে আমাদের কাছে যা পাঠানো হয়েছে এটার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত পোষণ করে আমাদের পক্ষ থেকে উত্তর দিয়েছি।

৩০ জুলাই দিয়েছি। ৩১ জুলাই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এখন এটার বাস্তবায়নের জন্য আইনি ভিত্তি থাকতে হবে বলে যে কেউ কেউ বলছে, সেই প্রক্রিয়ায় যদি আলোচনা করতে চায়, আমাদের আহবান জানালে সেখানেও আমরা যাব।

তিনি বলেন, সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে। কিছু দলের রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতা থেকে অনেক কথা তাঁরা বলতে পারেন।

এগুলো নিয়ে আলোচনা হলে আমরা অংশ নেব। কিন্তু এগুলো নির্বাচন পেছানোর কৌশল কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শুধু সংবিধান সংশোধনের বিষয় বাদে বাকি সব বিষয় বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বাস্তবায়ন হচ্ছে। কোনো আইনি বৈধ প্রক্রিয়া বা সংসদ ছাড়া কোন বৈধ প্রক্রিয়ায় সংবিধান সংশোধন করা যায়? সেটি কোন প্রক্রিয়ায় সেটা যদি তারা বলতে পারে, যদি বৈধ হয় তাহলে জাতি মেনে নেবে। তবে নির্বাচিত সংসদ ছাড়া প্রতিশ্রুত সংবিধান সংশোধন বাঞ্ছনীয় নয়।

বিএনপি বর্তমান সরকারকে সাংবিধানিক বৈধতা দেবে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা লিখিতভাবে দলের অবস্থান পরিষ্কার করেছি। ২৪-এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থান রাষ্ট্রীয় এবং সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। সেটা কোথায় প্রদান করা হবে সেটা পরিষ্কার করেছি। যেহেতু এটা গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার, নির্বাচিত সরকার নয়। সাংবিধানিক নিয়ম-কানুন মেনে যদিও এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার পরও তাকে সাংবিধানিকভাবে বৈধতা দেওয়ার জন্য পুনরায় আমাদের ঐতিহ্যমাফিক চতুর্থ তফসিলে সেটার বর্ণনা থাকবে। সেই জায়গায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পথ ধরে এই যে সরকার প্রতিষ্ঠা হলো তার সব কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়ার একটা বর্ণনা থাকতে হয়। এটাই আমাদের ট্র্যাডিশন। সে অনুসারে আমরা সেখানে স্বীকৃতি দেব, সেটা আমরা বলেছি। রাষ্ট্রীয় এবং সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে এই ঘোষণাপত্রে। এখন সেই ঘোষণাপত্র প্রধান উপদেষ্টা উচ্চারণ করবেন কি না সেটা দেখার বিষয়।

দ্বিতীয় রিপাবলিকের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এরই মধ্যে একটা রিপাবলিকের মধ্যেই আছি। আমাদের একটা রাষ্ট্র আছে, সংবিধান আছে। আমাদের এই সংবিধান বিভিন্নভাবে রোগাক্রান্ত হয়েছে। অগণতান্ত্রিকভাবে বিভিন্ন সময় সংশোধন করা হয়েছে। সে জন্যই তো সংস্কার প্রস্তাবগুলো ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বসে আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরা সংস্কার করছি। এগুলোর বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে আমরা সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো পাব। এ জন্যই এই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছি।

 

মন্তব্য

তিন খুন : উপদেষ্টা আসিফের বাবাকে গ্রেপ্তারের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
তিন খুন : উপদেষ্টা আসিফের বাবাকে গ্রেপ্তারের দাবি

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেন এখন খুনিদের মদদ দিচ্ছেন। আমার মা, ভাই ও বোনকে পরিকল্পিতভাবে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সেদিন আমাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করে খুনিরা। কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাই।

এখন মামলা করলেও প্রধান আসামি উপদেষ্টার বাবার নাম বাদ দিয়ে পুলিশ ইচ্ছামতো আসামিদের নাম দেয়। গ্রেপ্তার না হওয়ায় তারাই এখন আবার আমাদের পরিবারের সবাইকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন গত ৩ জুলাই কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গারা থানাধীন কড়ইবাড়ি গ্রামে একই পরিবারের তিনজনকে হত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত রুখসানা আক্তার রুবির দ্বিতীয় সন্তান রুমা আক্তার। গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা আকরম খাঁ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে আবেগতাড়িত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন নিহত রুবির স্বামী সৌদিপ্রবাসী খলিলুর রহমান, রিক্তা আক্তার ও নিহত রাসেলের স্ত্রী মিম আক্তার। তাঁরা সবাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের দাবি জানান।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবা বিল্লাল মাস্টারকে খুনিদের মদদদাতা  দাবি করে তাঁকে আইনের আওতায় আনার দাবি করে রুমা বলেন, একজন উপদেষ্টার বাবা হয়ে তিনি কিভাবে এমন নির্মম হত্যার নির্দেশ দিতে পারেন? তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় থেকে অন্যতম খুনি শিমুল চেয়ারম্যানসহ অন্যরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।

রুমা আক্তার জানান, ঘটনার দিন আওয়ামীপন্থী দোসর, স্থানীয় সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারী পরিবারের তিনজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।  ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন রুকসানা আক্তার রুবি, তাঁর ছোট সন্তান জোনাকি আক্তার ও বড় ছেলে রাসেল।

ঘটনায় বাকিরাও আহত থাকায় আমার বোন রিক্তা আক্তার মামলায় আসামিদের নাম সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেননি দাবি করে রুমা বলেন, এখন মামলার পুনর্বিন্যাস করতে হবে। হত্যাকাণ্ডে সেই সময় অপরাধীদের অনেকের নামই বাদ পড়েছে, সেগুলো নতুন করে যুক্ত করতে হবে।

রুমা বলেন, আজকের পর থেকে আমাদের ওপর আর কোনো আঘাত এলে এর জন্য সব দায় থাকবে উপদেষ্টা আসিফ ও তাঁর বাবা বিল্লাল হোসেনের।

যেমনআমাদের বাবা জুয়েলকে কয়েক দিন আগে আসিফ মাহমুদের লোকজন তুলে নিয়ে জোরপূর্বক ভিন্ন বক্তব্য দিতে বাধ্য করিয়েছেন। এ সময় রুমা শিমুল চেয়ারম্যান, কাশিমপুর গ্রামের আনু মেম্বার, বাছির, শরীফ, রানা, আবু বকর, রবিউল, জহর আমিন, বাচ্চু মেম্বার, রফিক, বিল্লাল বাবুর্চি, ভাড়াটে খুনি গোলাপ মিয়া, সাদ্দামসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবার বিচার দাবি করেন।

ঘটনায় মামলা করলেও প্রধান আসামি উপদেষ্টার বাবার নাম বাদ দিয়ে পুলিশ ইচ্ছামতো আসামিদের নাম দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, ঘটনার দিন ট্রিপল নাইনে ফোন দিয়েও প্রতিকার পাইনি।

তিনি বলেন, আমরা শুনেছি এবং আমাদের বিশ্বাস শিমুল চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টার ছেলে আসিফের বাসাতেই লুকিয়ে রেখেছেন তাঁর বাবা।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবা বিল্লাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে রুমা বলেন,  উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। শিমুল চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আসামিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। রুমা আক্তার বলেন, আজকের পরে আমাদের কারো কোনো ভিন্ন বক্তব্য সামাজিক মাধ্যম বা কোথাও দেখলে আপনারা ধরে নেবেন, আসিফ মাহমুদের লোকজন জোরপূর্বক আমাদের দিয়ে সেগুলো বলিয়ে মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন। সর্বশেষ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কাছে একটা নিবেদন, আমাদের পরিবারের মা, ভাই, বোন সবাইকে হারিয়ে আমরা নিঃস্ব। আমাদের আর নিঃস্ব করবেন না। আমরা বাঁচতে চাই। দয়া করে আমাদের বাঁচতে দিন।

রুমা বলেন, আমার মা ছিলেন জনপ্রিয়। স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে মা দুবার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনও করেছিলেন। বিএনপি সমর্থিত হওয়ায় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এই সন্ত্রাসীরা আমার মাকে বিজয়ী হতে দেননি। উল্টো জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তখন থেকেই হয়রানি করার জন্য বিভিন্ন মামলাও দিয়ে আসছিল।

মব তৈরি করে যেভাবে হত্যাকাণ্ড : হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে রুমা বলেন, ঘটনার একদিন আগে মোবাইল চুরির ঘটনা নিয়ে শুরু হয় হট্টগোল। মোবাইল চুরির কারণে একটা ছেলেকে আমাদের গ্রামের রবিউলের বাড়িতে মারধর করা হলে তার বাবা কোনোভাবেই তার ছেলেকে বাঁচাতে না পেরে আমার মায়ের কাছে এসে সাহায্য চায়। তখন আমার মা সেখানে গিয়ে তাদের বলে, চোরটা যদি মরে যায় তাহলে তো আমরা আশপাশের সবাই ফেঁসে যাব। হয় তাকে ছেড়ে দাও, না হয় পুলিশে দাও। এই কথা বলার  সঙ্গে সঙ্গে সেখানে থাকা বাচ্চু মেম্বার, রবি, শরিফ, বাছিদ, রফিক, আবু বক্কর, হারুনরা একযোগে বলে উঠে এই তুই চোরের পক্ষ ধরে আসছিস কেন?

রুমা আক্তারের বক্তব্য অনুযায়ী, তার মা একটি বিল্ডিং নির্মাণ করার কারণেই মূলত স্থানীয় লোকদের প্রতিহিংসার শিকার হন।

রুমা আক্তার বলেন, কী  নির্মমভাবে ওরা আমার চোখের সামনেই প্রথমে আমার মাকে, এরপর আমার ভাই ও বোনকে মেরে ফেলে, যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না! ঘটনাস্থল থেকে বাঙ্গরা বাজার থানার দূরত্ব সর্বোচ্চ ১০ মিনিটের পথ হলেও পুলিশ আসে পরিবারের সবার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর, প্রায় ৩ ঘণ্টা পর।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ