ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ক্যাম্পাসে ঢোকার পথে হামলার শিকার ছাত্রদল

  • ► লাঠি, স্টাম্প ও রড নিয়ে হামলা, আহত ১৫
    ► কাল ছাত্রসমাবেশ করবে ছাত্রদল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
ক্যাম্পাসে ঢোকার পথে হামলার শিকার ছাত্রদল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকতে গেলে গতকাল ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে। ছবি : কালের কণ্ঠ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢোকার পথে হামলার শিকার হয়েছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার নীলক্ষেত মোড় থেকে ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় স্যার এ এফ রহমান হলের সামনে তাঁদের ওপর এই হামলা করা হয়। হামলায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালান বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রদল।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ অনুযায়ী গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নীলক্ষেত মোড় দিয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দিতে উপাচার্য কার্যালয়ে রওনা হন। ক্যাম্পাসে ঢোকার পথে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাঁদের বাধা দেন। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ এফ রহমান হল থেকে লাঠি, স্টাম্প ও রড নিয়ে হামলা করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পিছু হটে নীলক্ষেত মোড়ে গিয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নীলক্ষেত মোড়ে কিছুক্ষণ অবস্থান নেন।  স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘যে ছাত্রসংগঠনের উচ্চপদস্থ নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে, তাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সেটাকে শক্তহাতে দমন করবে।’

ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টার আগে ছাত্রদলের ৩০ থেকে ৩৫ জন নেতাকর্মী নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেন। সেখানে ছাত্রদল ঢাবি শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারহান আরিফ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংক্রান্ত দাবি আদায়ে ভিসি স্যারের কাছে যাচ্ছি। আমরা এখানে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে আসিনি। আমরা মিষ্টি আর ফুল নিয়ে এসেছি।

আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কার্যক্রম শেষ করতে চাই।’

এদিকে হামলার ঘটনার পর গতকাল সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদল। এতে সংগঠনটির সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ হামলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সময় চাইলে ভিসি ও প্রক্টর আমাদের নির্ধারিত সময় বেঁধে দেন। এর পরে মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা ছাত্রলীগের কর্মসূচির বিষয়টি জানতে পারলে প্রক্টরকে এ বিষয়ে জানানো হয়। তখন তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি যাদের পদায়ন হয়েছে তাদের যেতে বলেন এবং পূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দেন। আমরা স্যারের কথায় নির্ভর করে ক্যাম্পাসে গেলে মারধরের শিকার হই। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন আচরণে উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন শ্রাবণ। এ ছাড়া এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় নয়াপল্টনে বিএনপির পার্টি অফিসের সামনে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে একক ছাত্রসমাবেশের ঘোষণা দেন তিনি।

ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন থেকে গুরুতর আহতদের পরিচয় তুলে ধরা হয়। তাঁরা হলেন ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল আমিনুল, মাসুম বিল্লাহ, আরিফুর রহমান, নাছির উদ্দীন শাওন, রাজু আহমেদ, সুপ্রিয় দাশ শান্ত, নাজমুস সাকিব, সহসাধারণ সম্পাদক মুন্সি সোহাগ, প্রচার সম্পাদক ইমাম আল নাসের মিশুক, আন্তর্জাতিক সম্পাদক জসিম খান, বিজয় একাত্তর হলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাইফ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকিব জাভেদ রাফি এবং কবি জসীমউদ্দীন হলের কর্মী জোসেফ আল জুবায়ের।

ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘ছাত্রদলের সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগ কোনো দায়ভার বহন করবে না। আজ ক্যাম্পাসে যেটি ঘটেছে সেটি ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ। ছাত্রদলের রাজনীতি মানেই সাংগঠনিকভাবে সন্ত্রাসের চর্চা করা। তাদের কমিটি নিয়ে পক্ষ বিপক্ষের যে কোন্দল চলছে আজ সেটিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।’

এদিকে নিরাপত্তা ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ছাত্রদল উপাচার্যের সাথে দেখা করতে সময় চেয়েছিল, তা দেওয়া হয়েছিল। একই সময়ে দুটি সংগঠনই অবস্থান গ্রহণ করেছিল এবং ক্যাম্পাসের পরিবেশ স্বাভাবিক ছিল। এর মধ্যে আমরা হঠাৎ তথ্য পাই, নীলক্ষেতে একটা ঝামেলা হয়েছে। আমরা ওখানে দ্রুত যাই এবং কী হয়েছে তা জানার চেষ্টা করি। বর্তমানে আমরা ওখানে কী হয়েছিল, সেটি জানার জন্য একটি প্রতিবেদন তৈরি করছি।’

এদিকে ওই হামলার প্রায় ১৫ মিনিট আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের নানা সংকট নিরসনে উপাচার্য বরাবর ৩০ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেয়।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

যাত্রীছাউনি

শেয়ার
যাত্রীছাউনি
বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে তৈরি করা হয়েছে যাত্রীছাউনি। কিন্তু প্রায় সব যাত্রীছাউনিই হকারদের দখলে চলে গেছে। তাঁরা বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে রীতিমতো মার্কেট বানিয়ে ফেলেছেন। গতকাল বিমানবন্দর সড়কের খিলক্ষেতে। ছবি : লুৎফর রহমান
মন্তব্য

৩৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
৩৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

এক নারীসহ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩৯ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল পৌনে ৭টায় একটি বিশেষ সামরিক বিমানে (সি-১৭) করে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়। দীর্ঘ ৬০ ঘণ্টার অবর্ণনীয় ক্লান্তি আর যাত্রা শেষে ঢাকার মাটিতে পা রেখে তাঁরা কেউ হন বিমর্ষ, কেউ বা বাকরুদ্ধ। দেশে ফেরার পর ব্র্যাকের পক্ষ থেকে তাঁদের পরিবহন সহায়তা দেওয়া হয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

ফেরত আসা বাংলাদেশিদের অভিযোগ, দীর্ঘ বিমানযাত্রার পুরোটা সময় তাঁদের হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়। ফেরত আসা একজন বলেন, আমরা অপরাধী নই, আমরা তো আশ্রয় চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সঙ্গে বন্দির মতো আচরণ করা হয়েছে। ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্মের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান বলেন, আমরা যতটা জেনেছি ঘরবাড়ি বিক্রি করেছেন, ধারদেনা করে এঁরা কেউ ৩০ লাখ, কেউ ৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করে মেক্সিকো বা দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ হয়ে অনিয়মিত পন্থায় পাড়ি জমিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে।

এরপর আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আদালত ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষ তাঁদের সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপর তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন প্রশাসন।

মন্তব্য
এনসিপি-ছাত্রদলের সমাবেশ আজ

দুই দলেরই বড় জমায়েতের লক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দুই দলেরই বড় জমায়েতের লক্ষ্য

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আজ রবিবার জাতীয় শহীদ মিনারে বড় সমাবেশ করবে। অন্যদিকে ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ এবং আহতদের স্মরণ ও সম্মানে বড় সমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এই সমাবেশ ঘিরে শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হতে পারে। দুই পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে নগরবাসীর কাছে আগাম দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।

রাজধানীর শাহবাগ ও শহীদ মিনারে এই দুই সমাবেশ হবে। এতে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, সায়েন্স ল্যাব, দোয়েল চত্বর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ব্যাপক জনসমাগম ঘটবে  বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার পাঠ করবে এনসিপি : শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ৩ আগস্ট শহীদ মিনার থেকে সরকার পতনের এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের এক দফা দাবি ঘোষিত হয়েছিল।

যে এক দফার মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবি জানিয়ে এসেছিলাম। আমরা পদযাত্রার মধ্যেও তা স্পষ্ট করেছি, ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হলেও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পতন হয়নি। ফলে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বা নতুন বাংলাদেশের বিনির্মাণের যে লড়াই, সেটি আমাদের এখনো চালিয়ে যেতে হচ্ছে। সে নতুন বাংলাদেশের জন্য আমাদের যে কর্মসূচি ও যে রাষ্ট্র ভাবনার রূপকল্প রয়েছে, সেটি আমরা আগামীকাল (রবিবার) প্রকাশ করব।
সেখানে আমাদের নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার পাঠ করা হবে।

গতকাল জাতীয় নাগরিক পার্টির সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ বলেন, আমরা পয়লা জুলাই থেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশব্যাপী দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা নামক কর্মসূচি পালন করেছি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে ৫৯টি জেলায় আমাদের পদযাত্রাটি হয়েছে। আমরা প্রতিটি জায়গায় গিয়েছি, মানুষের কথা শুনেছি। গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া পরিবারের সঙ্গে আমরা সাক্ষাৎ করেছি।

আহত যোদ্ধা, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। আমরা গণমানুষের কাছে গিয়েছি। গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা, দেশ নিয়ে তাদের ভাবনা এবং একটা নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের কাছে তাদের প্রত্যাশা আমরা শুনেছি।

তিনি বলেন, এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি এবং আমাদের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা আমরা তৈরি করেছি। শহীদ মিনারে আমরা সেই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা এবং আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করব। বিকেল ৪টায় শহীদ মিনারে জনসমাবেশের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হবে। আমরা সাধারণ মানুষকে আহবান জানাচ্ছি, আগামীকাল (রবিবার) ঢাকার এই সমাবেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের জন্য।

জুলাই ঘোষণাপত্রে উদ্যোগ নেওয়ায় সরকারকে সাধুবাদ জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা জানতে পেরেছি যে, সরকারের পক্ষ থেকে ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সব শক্তি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা করতে যাচ্ছে। আমরা সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। পাশাপাশি আমাদের দাবি ছিল, ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদের বিষয়টিও যাতে সুরাহা হয়। জুলাই সনদে বেশির ভাগ জায়গায় ঐকমত্য হয়েছে, কিছু জায়গায় দ্বিমত রয়েছে। ঐকমত্য কমিশন থেকে এখনো জানানো হয়নি যে বিষয়গুলো নিয়ে দ্বিমত রয়েছে, সে বিষয়গুলো নিয়ে তাদের পরিকল্পনা কী। এটার বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়েও ঐকমত্য কমিশন কথা বলেনি। ফলে বাস্তবায়ন পদ্ধতির সুরাহা হয়ে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা হবে। আমরা বলেছি যে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে। জুলাই সনদের ভিত্তিতেই পরবর্তী নির্বাচনটি হতে হবে। আমরা নির্বাচিত সংসদের ওপরই সংস্কার কার্যক্রম ছেড়ে দিব না। বরং জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামীর সংসদ গঠিত হবে, গণপরিষদ গঠিত হবে। এবং এই অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ই জুলাই সনদটি কার্যকর করতে হবে। আমাদের জুলাই সনদের দাবিও থাকবে আমাদের আগামীকালকের কর্মসূচিতে। বিচার-সংস্কার এবং নতুন সংবিধানের দাবিও থাকবে। সরকার যাতে ৫ আগস্টের মধ্যেই জুলাই সনদের বিষয় একটা সুরাহা করে। জুলাই সনদ রচিত হয়। এটি সারা দেশের মানুষের দাবি। গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে আমাদের এই পরিবর্তনের রূপরেখাটি আমরা যাতে একসঙ্গে সবাই উদযাপন করতে পারি।

নতুন বাংলাদেশের ইশতেহারে কী থাকছে, জানতে চাইলে এনসিপির এই নেতা বলেন, আমরা আগামীকাল তরুণদের নিয়ে পরিকল্পনা, অর্থনীতি নিয়ে পরিকল্পনা এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা পুলিশ-প্রশাসন নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা ইশতেহারের মাধ্যমে জানাব। গত এক বছরের সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে আমরা কথা বলব। একই সঙ্গে আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে যে পরিকল্পনা রয়েছে, সে পরিকল্পনাও আমরা প্রকাশ করব।

 

ছাত্রদলের বড় সমাবেশের আয়োজন

২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণ ও সম্মানে বড় সমাবেশের আয়োজন করেছে ছাত্রদল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রধান বক্তার বক্তব্য দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ছাত্রদলের পক্ষে জানানো হয়েছে, সংগঠনটির দেশের সব ইউনিটের নেতাকর্মীরা যেন উপস্থিত থাকেন। নিজ নিজ সুবিধা মতো তাঁরা যেন উপস্থিত হন, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কিছু কঠোর নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরা ট্রেন ভাড়া করে ঢাকায় আসবেন। দেশের অন্য বিভাগগুলো থেকে নেতাকর্মীরা ইউনিটভিত্তিক সুবিধামতো পরিবহনে আসবেন। সমাবেশ নিয়ে ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল কালের কণ্ঠকে বলেন, মঞ্চ তৈরি করা হবে শাহবাগ থেকে বাংলা মটরের দিকে যাওয়ার মুখে। আর শাহবাগ থেকে কাটাবন, শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন ও শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেবেন। আশা করছি, এই পুরো জায়গায় নেতাকর্মী ভরে যাবে। কয়েক লাখ লোকের সমাগম হবে বলে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এ দিন আমরা শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছিলাম। সেখান থেকে এক দফা ঘোষণা করা হয়েছিল। একই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে যাঁরা শহীদ হয়েছিলেন, আমাদের পক্ষ থেকে তাঁদের স্মরণ করে সম্মান জানানো হবে।

ঢাকাবাসীর প্রতি ছাত্রদলের দুঃখ প্রকাশ : সমাবেশকে কেন্দ্র করে যে যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ জন্য ঢাকাবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে ছাত্রদল। গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত জুন মাসে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করি। শুরুতে জাতীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের অনুরোধে সমাবেশের স্থান শহীদ মিনার থেকে পরিবর্তন করে শাহবাগে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্যস্ত রাজধানীতে কর্মদিবসে সমাবেশের জনভোগান্তি সম্পর্কে আমরা অবগত। যেকোনো ধরনের জনদুর্ভোগের জন্য আগাম দুঃখ প্রকাশ করছি। সম্মানিত নগরবাসী বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করবেন।

 

মন্তব্য

রিয়াদ চাঁদাবাজিতে জড়িত : অপু

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
রিয়াদ চাঁদাবাজিতে জড়িত : অপু
জানে আলম অপু

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপির বাসায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির মামলায় জানে আলম অপুর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তারের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের এ আদেশ দেন। তবে শুনানি চলাকালে আসামি অপু বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক (বহিষ্কৃত) আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। আমরা কেউ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত না।

অপুকে গতকাল বিকেল ৩টায় আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক মোখলেছুর রহমান তাঁর ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদনে বলা হয়, আসামিরা সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ দলের সদস্য। তাঁরা দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে এই মামলার বাদীসহ বিভিন্ন মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চাঁদা নেন।
এরই মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের এ রকম কার্যকলাপ প্রচারিত হচ্ছে। এ ছাড়া ভুক্তভোগী আরো কিছু মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় চাঁদা দাবি করেছেন মর্মে বিভিন্ন থানায় অভিযোগ আছে বলে জানা যায়। এ আসামিকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডে এনে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মামলার মূল রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনায় জড়িত অপরাপর আসামি ও তাঁদের গডফাডারদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। এ ছাড়াও বাদীর কাছ থেকে গত ১৭ জুলাই গ্রহণ করা চাঁদার টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
পরে বিকেল ৩টা ২৮ মিনিটে অপুকে কাঠগড়ার নেওয়ার জন্য হাজতখানা থেকে বের করা হয়। তাঁর মাথায় হেলমেট, বুলেটপ্রুভ জ্যাকেট ও হাতে হাতকড়া ছিল। পরে তাঁকে লিফটে করে আদালতের কাঠগড়ায় নেওয়া হয়। তখন তিনি অঝোরে কাঁদতে থাকেন। পরে তাঁর উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানি শুরু হয়।
এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী সাজিদুল ইসলাম রুবেল ও শাহ আলম অভি জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর কাইয়ুম হোসেন নয়ন জামিনের বিরোধিতা করেন। আসামি অপু বিচারকের উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে বলেন, আমি কিছু বলতে চাই। তখন বিচারক বলেন, আপনার আইনজীবীরা যা বললেন তার সঙ্গে কি আপনি একমত, নাকি এর বাইরে কিছু বলার আছে? তখন আসামি অপু বলেন, আরো বলতে চাই। তখন আসামি অপু বলতে থাকেন, এই মামলায় অলরেডি পাঁচজন গ্রেপ্তার আছে। তাঁদের মধ্যে রিয়াদ বাদে বাকি চারজন চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত না। আমিও জড়িত নই। রিয়াদ বিপদে পড়েছিল বলে আমাদের তখন ডেকেছিল। রিয়াদ বলেছিল, তোরা দ্রুত আয়। আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে। আমরা সবাই গিয়ে ফেঁসে গেছি। অপু বলেন, ঘটনার দিন ২৬ জুলাই রাতে আমরা তার ডাকে গুলশানের ওই বাসায় যাই। যখন শুনি চাঁদাবাজির ঘটনা, তখনই আমি চলে আসি। এর আগে রিয়াদ যে চাঁদাবাজি করেছে, তার কিছুই জানতাম না। তিনি আরো বলেন, আমাদের লোকেশন ট্র্যাকিং করে দেখেন। আমরা কোথায় ছিলাম, আমাকে কেন রিমান্ডে নেওয়া হবে? রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। রিয়াদ বাদে বাকি চারজন নাবালক। তাদের রিমান্ডে নিয়ে উল্টাপাল্টা স্বীকারোক্তি নেবে। আমাকেও এ জন্য রিমান্ডে নিতে চায়।

গতকাল শুনানি শেষে আদালত আসামির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত শুক্রবার রাজধানীর ওয়ারী থেকে অপুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।

এ মামলায় গত ২৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক (বহিষ্কৃত) আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব ও মো. ইব্রাহিম হোসেনের  সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পুলিশ জানায়, রিমান্ড শেষে আজ রিয়াদসহ চারজনকে আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। গত ২৬ জুলাই শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফর বাদী হয়ে গুলশান থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেছিলেন।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ