<p>ভূত্বকের অভ্যন্তরে খনিতে প্রাপ্ত হাইড্রোকার্বন, যা স্বাভাবিক চাপ ও তাপে গ্যাস বা বাষ্পাকারে থাকে, তা-ই প্রাকৃতিক গ্যাস। এর প্রধান গুরুত্বপূর্ণ উপাদান মিথেন। শতকরা ৯৭.৩৩ ভাগ মিথেন প্রাকৃতিক গ্যাসে থাকে। এ ছাড়া বাকি অংশে ইথেন, প্রোপেন ও অন্যান্য উপাদান ছাড়াও প্রচলিত অপদ্রব্যের মধ্যে নাইট্রোজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড ও হাইড্রোজেন সালফাইড অন্তর্ভুক্ত। ভূত্বকে প্রাকৃতিক গ্যাস স্বয়ংসম্পূর্ণভাবেও থাকতে পারে আবার তেল সহযোগেও থাকতে পারে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিয়ানমার, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া গেছে।</p> <p>আসাম রেলওয়ে ও ট্রেডিং কম্পানি সর্বপ্রথম ১৮৮৩ সালে হাইড্রোকার্বন ও গ্যাস অনুসন্ধানের লক্ষ্যে ড্রিলিং শুরু করে। ১৯১১ সালের দিকে সিলেটের সুরমা বেসিন ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে তৈল ও গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করে আসাম অয়েল কম্পানি। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কম্পানি মিলে এ পর্যন্ত মোট ৬২টি কূপ খনন করেছে। ফলে আমরা মোট একটি তেল ও ২৩টি গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছি। দেশে আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে সিলেট, ছাতক, তিতাস, রশিদপুর, কৈলাসটিলা, হবিগঞ্জ, ফেনী, জালালাবাদ, নরসিংদী, মেঘনা, মৌলভীবাজার প্রভৃতি স্থানে প্রাপ্ত গ্যাসক্ষেত্র উল্লেখযোগ্য।</p> <p>বর্তমানে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের ৪৫ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে, ৩৫ শতাংশ সার উৎপাদনে এবং ২০ শতাংশ অন্যান্য শিল্প-কারখানা ও রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়।</p> <p>গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উৎপাদনের পর তা পাইপলাইনের মাধমে সরবরাহ করা হয়। সরবরাহ ও চাহিদা অনুসারে পাইপলাইন স্থাপন করা হয়ে থাকে। এ উদ্দেশ্যে সঞ্চালন ও বিতরণ কম্পানি গঠন করা হয়েছে। শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং গৃহস্থালি ভোক্তার কাছে গ্যাস সরবরাহের জন্য বাংলাদেশে আছে বিস্তৃত ও দীর্ঘ গ্যাস পাইপলাইন নেটওয়ার্ক।  প্রতিবছর ১৩.৪ শতাংশ হারে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণামতে, ২০৩১ সালের মধ্যে মজুদকৃত গ্যাস শেষ হয়ে যাবে। তাই আমাদের সবার উচিত প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারে আরো সাশ্রয়ী হওয়া।</p> <p><strong>ইন্দ্রজিৎ</strong> <strong>মণ্ডল</strong></p>