<p style="text-align: center;"><strong>সৃজনশীল প্রশ্ন</strong></p> <p style="text-align: center;"><strong>দ্বিতীয় অধ্যায়</strong></p> <p style="text-align: center;"><strong>সমাজবিজ্ঞানের বৈজ্ঞানিক মর্যাদা</strong></p> <p>উদ্দীপক : খাসিয়া, চাকমা, গারো, রাখাইনসহ বেশ কিছু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন বাংলাদেশে বসবাস করে। তাদের জীবনযাপন পদ্ধতি ও সংস্কৃতি যেমন বৃহৎ বাঙালি জনগোষ্ঠী থেকে আলাদা, তেমনি আন্ত উপজাতীয় সংস্কৃতির মধ্যে রয়েছে ব্যাপক বৈচিত্র্যতা। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি উপজাতি সম্পর্কে ভালোভাবে গবেষণা করা প্রয়োজন।</p> <p>ক) বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির স্তর কয়টি?</p> <p>খ) গবেষণা সমস্যা বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনধারা সম্পর্কে গবেষণা করার জন্য</p> <p>সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানীরা কোন পদ্ধতি ব্যবহার করেন এবং কেন? আলোচনা করো।</p> <p>ঘ) সমাজ গবেষণায় ওই পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধাগুলো আলোচনা করো।</p> <p>উত্তর :</p> <p>ক) বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির স্তর ছয়টি।</p> <p>খ) গবেষণার সমস্যা বলতে যে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করা হবে, তাকে বোঝায়।</p> <p>সমাজ গবেষণার প্রথম পর্যায়ের কাজ হচ্ছে কোনো একটি গবেষণার বিষয়কে নির্বাচন করা। এপর্যায়ে গবেষক সমাজবিজ্ঞানের আওতায় পড়ে</p> <p>এমন কোনো একটি বিষয়কে গবেষণার জন্য নির্বাচন করেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে পরিবার পরিকল্পনার প্রতি গ্রামবাসীর মনোভাব হচ্ছে গবেষণার বিষয়। আর এ বিষয়টিই হচ্ছে গবেষণার সমস্যা।</p> <p>গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনধারা সম্পর্কে গবেষণা করার জন্য সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানীরা অংশগ্রহণমূলক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন।</p> <p>অংশগ্রহণমূলক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিটি মূলত সামাজিক নৃবিজ্ঞানীরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে থাকেন। এ পদ্ধতিতে গবেষক কোনো একটি বিশেষ সমাজের সংস্পর্শে আসেন। একজন আবাসিক নৃবিজ্ঞানী হিসেবে তিনি ওই সমাজের একজন অতিথি সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন বসবাস করেন। এর ফলে তিনি ওই সমাজের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং ওই সমাজের ভাষা আয়ত্ত করে সেখান থেকে তাঁর গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি সংগ্রহ করে থাকেন। আমাদের দেশে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন বসবাস করে। এদের সংস্কৃতি ও জীবনযাপন পদ্ধতি বাঙালি জনগোষ্ঠী থেকে আলাদা। এদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করার জন্য সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানীরা অংশগ্রহণমূলক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন। কারণ এ পদ্ধতির মাধ্যমে তাঁরা ওই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনগণের সঙ্গে বসবাস করে তাদের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রা প্রত্যক্ষ করেন। এর ফলে তাঁরা বাস্তবমুখী তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হন।</p> <p>ঘ) সমাজ গবেষণায় অংশগ্রহণমূলক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি বহুল প্রচলিত একটি পদ্ধতি। এ পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো জনগোষ্ঠীর সম্পর্কে বাস্তবমুখী তথ্য সংগ্রহ করা যায়। তবু পদ্ধতিটির বেশ কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে।</p> <p>অংশগ্রহণমূলক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির দ্বারা অতি সহজে সমাজের যেকোনো সমস্যার</p> <p>গভীরে প্রবেশ করা যায়। এ ক্ষেত্রে গবেষক নিজেই পুরো গবেষণাটি পরিচালনা করতে পারেন। এর ফলে তিনি অধিক বাস্তবমুখী তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। সরাসরি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বসবাস করে তথ্য সংগ্রহ করা হয় বলে তাঁদের জীবনযাত্রার প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে জানা যায়। গবেষক</p> <p>নিজেই গবেষণা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ করে বলেন, এতে তথ্য সংগ্রহ নির্ভুল হয়। কিছু কিছু সমাজবিজ্ঞানী নৃবিজ্ঞানের এ পদ্ধতিটির উপযোগিতা অনুধাবন করেন এবং সমাজ গবেষণায় কেউ কেউ এ পদ্ধতিটির প্রয়োগ করে থাকেন। এ পদ্ধতির অসুবিধা হলো—পদ্ধতিটি দীর্ঘ, সময়সাপেক্ষ ও শ্রমসাধ্য। এতে গবেষণার জন্য দীর্ঘ সময় দিতে হয়। ফলে গবেষণা বিলম্বিত ও ব্যয়বহুল হয়। তা ছাড়া এর পুনরাবৃত্তি সম্ভব নয়।</p> <p>পরিশেষে বলা যায়, বেশ কিছু অসুবিধা থাকলেও অংশগ্রহণমূলক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিটি অত্যন্ত কার্যকর একটি গবেষণা পদ্ধতি।</p>