ড্রিম হলিডে পার্ক

সুমন বর্মণ, নরসিংদী
সুমন বর্মণ, নরসিংদী
শেয়ার
ড্রিম হলিডে পার্ক

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ গাছগাছালিবেষ্টিত মনোরম পরিবেশ। সঙ্গে বিনোদনের নানা বৈচিত্র্যের রাইডসের সমাহার। এ দুইয়ের সমন্বয়ে নির্মল আনন্দের তীর্থস্থান নরসিংদী জেলার পাঁচদোনার ড্রিম হলিডে পার্ক। এই পার্কের শুরুর গল্পটা কিন্তু অন্য রকম! শিল্প-কারখানা গড়ার উদ্দেশ্যেই ঢাকার অদূরে নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনায় জমি কিনেছিলেন ফনিক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা।

কিন্তু গ্যাস সংযোগের অভাবে শিল্প-কারখানা করতে না পেরে সেই জমিতে পারিবারিক বিনোদনের জন্য ক্যানেল খনন এবং ফুলের গাছ রোপণ করেন। অবসর সময়ে অবকাশ কাটাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে সময় কাটাতেন বাগানবাড়িতে। ধীরে ধীরে ব্যবসায়িক বন্ধুবান্ধবদের কাছেও প্রিয় হয়ে ওঠে বাগানবাড়িটি। সংযোজন করা হয় বিভিন্ন বয়সের মানুষের উপযোগী রাইডস।
এভাবেই ২০১২ সালের ৩১ আগস্ট মাত্র পাঁচটি রাইডস দিয়ে ড্রিম হলিডে পার্ক নামে যাত্রা শুরু করে। মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে তিনি আজ সফল। পার্কের ব্যাপক সাড়া ওনাকে উজ্জীবিত করেছে।

প্রবীর কুমার সাহা ব্যবসায়িক কাজে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়ান।

সেসব দেশের বিনোদনকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখেন। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি নিজের পরিকল্পনায় স্বপ্নের পার্কটি সাজিয়েছেন। দেশি ও বিদেশি প্রকৌশলীর মাধ্যমে পার্কের সৌন্দর্যবর্ধন ও রাইড সংযোজন করছেন। এখন পার্কে মোট রাইড আছে ৩০টি। এর মধ্যে ড্রামি আইনকন (জায়ান্ট হুইল), ডাইনোসর অ্যাটাক, সুইং কার, হেলিকপ্টার রেসকিউ ও রিভার ক্রুজ, রকিং হর্স, চিলড্রেন ক্যাসেল, জাম্পিং হর্স, সুইং চেয়ার, চাইল্ড টয় ট্রেন, ফ্রি কেসল ফর চিলড্রেন, স্পিডবোট, সোয়ান বোট, বাম্পার বোট, বাম্পার কার, ড্রাগন রোলার কোস্টার, সুইং চেয়ার, বুল রাইড, এয়ার বাইসাইকেল ও ওয়াটার বাম্পার কার অন্যতম।
সঙ্গে আছে নানা জীবজন্তুর সমাহারের ড্রিম সাফারি পার্ক ও ওয়েব ওয়াটার পার্ক। রয়েছে সাতটি পিকনিক স্পট ও কটেজের ব্যবস্থা। শুধু রাইডস নির্ভর পার্ক তৈরি করলে তা হয়ে যাবে একঘেয়েমি ও বাণিজ্যিক। তাই পার্কটি ফুল, ফলদ, বনজ ও সৌন্দর্যবর্ধক গাছের পাশাপাশি চিরসবুজ বাগানে ৩০ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিনোদনকেন্দ্রটিতে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে মনোহর প্রাকৃতিক পরিবেশের নিখুঁত সমন্বয় তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি ভাস্কর্য রেইনবো গেট, ডাইনোসর, চেইনের তৈরি পালকি, রিকশা, ফিশ কর্নার, ক্যানেল, লন্ডন ব্রিজ, হার্ট শেড, ফাউন্টেন, ভূতের বাড়ি, ফানি মিউজিক গ্রুপ, সিডনি ব্রিজ যেকোনো বিনোদনপ্রেমীকে আকৃষ্ট করবে।

প্রবীর কুমার সাহা জানান, এই পার্কে দেশের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকও আসছে। বছরে প্রায় পাঁচ লাখ দর্শনার্থী ড্রিম হলিডে পার্কে আসে। এখানে মুক্তিযোদ্ধা, পাবলিক পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী, এতিম ও প্রতিবন্ধীদের প্রবেশ ফ্রি। স্কুল-কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক পিকনিক এবং হতদরিদ্র ছিন্নমূল মানুষের প্রবেশের ক্ষেত্রে দেওয়া হয় বিশেষ ছাড়।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ