<p>কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর সরকারি কলেজে শিল্পী মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম দুলালের তিনদিনের একক চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১২ থেকে ১৪ এপ্রিল নববর্ষের রাত পর্যন্ত চলা এ প্রদর্শনীতে শিল্পীর আঁকা ২৫টি চিত্রকর্মের বিষয়বস্তু ছিল হাওর-জনপদের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি। নতুন প্রজন্মের মধ্যে মননশীলতার চর্চা ও শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে প্রলুব্ধ করতেই বসুন্ধরা-শুভসংঘ বাজিতপুর শাখা এ উৎসবের আয়োজন করে।</p> <p>‘তুলির টানে হাওরনামা’ শিরোনামের প্রদর্শনীর পাশাপাশি চলে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, নৃত্য, সঙ্গীত ও কবিতা পাঠ। ছবির এ উৎসবে হাওর বিষয়ক সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখায় দৈনিক কালের কণ্ঠের হাওরাঞ্চলের নিজস্ব প্রতিবেদক নাসরুল আনোয়ারকে সম্মাননা দেওয়া হয়।</p> <p>গত ১২ এপ্রিল কলেজের এক নম্বর শ্রেণীকক্ষে তৈরি গ্যালারিতে ফিতা কেটে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাজিতপুর কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ, শিক্ষাবিদ আ. কা. মো. গোলাম মোস্তফা। প্রতিদিনই প্রদর্শনীর মূল মঞ্চে গান পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী মইনুল ইসলাম মনির, রুবেল আহমেদ ও দিয়া দাস। তবলায় ছিলেন সুনীল দাস ও শিশু তবলাবাদক আর্দ্র ইসলাম অর্ণব। নাচে অংশ নেয় মুনিয়া আক্তার ও জুঁই রানী দাস। নিজের কাব্যগ্রন্থ ‘ভেঙে বের হও’ গ্রন্থ থেকে নির্বাচিত কবিতা আবৃত্তি করেন কবি মো. সুমন মিঞা।</p> <p>প্রদর্শনীর সমাপনী দিনে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। প্রথম পুরস্কার পায় মো. মুরসালিন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার লাভ করে যাথাক্রমে আতিক মুস্তাকিম ও মুনিয়া আক্তার।</p> <p>সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রদর্শনীতে শিল্পী দুলালের আঁকা চিত্রকর্ম দেখতে গ্যালারিতে দর্শনার্থীরা ভিড় জমায়। নারী ও পুরুষ মিলিয়ে অগণিত দর্শক তাঁর চিত্রকর্ম ও অনুষ্ঠানমালা তিন দিনই উপভোগ করেন। প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী গ্যালারি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত ছিল।</p> <p>উদ্বোধনের পর মূল মঞ্চে নাসরুল আনোয়ারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা হয়। এতে অংশ নেন প্রবীণ শিক্ষক, রাজনীতিবিদ ও লেখক সাইফুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ আ. কা. মো. গোলাম মোস্তফা, ডা. এস. এ. খান নোমান, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মো. কবির হোসেন, শিল্পী মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম দুলাল, ঢাকার বসুন্ধরার গেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষক শরীফুল হক পিয়াস, মো. আসাদুজ্জামান ও শিল্পীকন্যা অন্তউড়ি মেঘদূত।</p> <p>আলোচনা পর্বসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদি সঞ্চালনা করেন শিল্পী তমালিকা পারভীন নিমনি।</p> <p>শিল্পী মুহম্মদ শহীদুল ইসলাম দুলাল তাঁর আলোচনায় একক চিত্র প্রদর্শনী ও সাংবাদিককে সম্মাননার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন। এরপর শিল্পী নিজের আঁকা সাংবাদিক নাসরুলের একটি পোর্ট্রেট আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর হাতে তুলে দেন।</p> <p>শিল্পী মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম দুলাল জানান, দেশের সমৃদ্ধ জনপদ হাওরাঞ্চলের জীবন-জীবিকা, সংস্কৃতি, কৃষি অর্থনীতিতে নির্ভরশীলতা ও প্রাণ-প্রকৃতিই ছিল তাঁর ছবির উপজীব্য। তিনি আরো বলেন, হাওর জনপদকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত করাবার পেছনে সাংবাদিক নাসরুল আনোয়ার বিগত ৩৩ বছর নিরলস শ্রম দিয়েছেন। অবদানের স্বীকৃত হিসাবে তাঁরই পোর্ট্রেট এঁকে তাঁকে সম্মানিত করা হয়েছে।</p> <p>জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিচালনা কমিটির সভাপতি, ইমেরিটাস অধ্যাপক শিল্পী হাশেম খান ও শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির চেয়ারম্যান শিল্পী অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক এ চিত্র প্রদর্শনী উপলক্ষে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন।</p> <p>উদ্বোধক আ. কা. মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘অবক্ষয়ের এ সময়ে এসে বসুন্ধরা-শুভসংঘ সাংস্কৃতিক কার্যক্রম হাতে নিয়ে নতুন প্রজন্মকে আলোর দিশা দেখাল। শুভসংঘ এ তৎপরতা অব্যাহত রাখুক’।</p>