<p>সৌরজগতের ক্ষুদ্রতম এবং সূর্যের নিকটতম গ্রহ বুধ। সূর্য থেকে বুধ গ্রহের সর্বনিম্ন দূরত্ব ৪৭ মিলিয়ন কিলোমিটার। অন্যদিকে পৃথিবী থেকে সূর্যের সর্বনিম্ন দূরত্ব ১৪৭ মিলিয়ন কিলোমিটার। অর্থাৎ পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্বের এক তৃতীয়াংশেরও কম দূরত্বে বুধ গ্রহের অবস্থান। অত্যন্ত কাছাকাছি অবস্থানের ফলে সূর্যের উত্তাপে বুধ গ্রহের তাপমাত্রা দিনের বেলায় ৪৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। অথচ রাতের বেলায় তাপমাত্রা নেমে আসে মাইনাস ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। প্রচণ্ড তাপমাত্রার প্রভাবে বুধ গ্রহের স্থায়ী কোন বায়ুমণ্ডল নেই। কিন্তু বুধ গ্রহের উর্ধাকাশে অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম পরমাণুর একটি হালকা গ্যাসীয় আবরণ রয়েছে। </p> <p>মজার ব্যাপার হলো, বুধ গ্রহ যখন সূর্যের কাছাকাছি চলে আসে তখন প্রবল সৌরবায়ুর প্রভাবে এই হালকা গ্যাসীয় আবরণটি থেকে সোডিয়াম গ্যাসের একটি দীর্ঘ লেজের সৃষ্টি হয়। সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে বুধ গ্রহের সময় লাগে ৮৮ দিন। এর মধ্যে ১৬ দিন বুধ গ্রহ সূর্যের কাছাকাছি অবস্থান করে। সৌর পরিক্রমায় কক্ষপথে কোন গ্রহ যখন সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে চলে আসে, তখন তাকে বলে পেরিহেলিয়ন বা অণুসূর। এই সময় বুধ গ্রহের লেজের দৈর্ঘ্যটি হয় সবচেয়ে বেশি। তখন এই লেজের দৈর্ঘ্য হয় প্রায় ২৪ মিলিয়ন কিলোমিটার। </p> <p>কিন্তু দীর্ঘ এই লেজটি খালি চোখে দেখা যায় না। বুধ গ্রহের লেজের ছবি তুলতে হলে ক্যামেরায় ন্যানো ব্যান্ডের ফিল্টার ব্যবহার করতে হয়। অ্যাস্ট্রো ফটোগ্রাফাররা এজন্য তাদের ক্যামেরায় ৫৮৯ এনএম ব্যান্ডের বিশেষ ধরনের ফিল্টার ব্যবহার করেন। এই ফিল্টারে হালকা সোডিয়াম গ্যাসের আলো ধরা পড়ে। এই পদ্ধতিতে ছবি তুললে বুধ গ্রহকে একটি ধুমকেতুর মত দেখায়। </p> <p>১৯৮০ সালে বিজ্ঞানীরা সর্বপ্রথম বুধ গ্রহের লেজের বিষয়টির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ২০০১ সালে বুধ গ্রহের লেজের ছবি তোলা সম্ভব হয়েছিলো। বর্তমান সময়ে ক্যামেরা প্রযুক্তির উন্নতির ফলে বিশ্বব্যাপী অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফাররা বুধ গ্রহের লেজের ছবি তোলার ব্যাপারে মুন্সিয়ানার পরিচয় দিচ্ছেন।</p>