<p>কেরাটোকোনাস হলো চোখের একটি সমস্যা, যেখানে আক্রান্ত অংশ কর্নিয়া। কর্নিয়া হলো চোখের সামনের স্বচ্ছ একটি অংশ, যা ‘চোখের মণি’ নামেও পরিচিত। কেরাটোকোনাসের ক্ষেত্রে, কর্নিয়ার আকৃতি পরিবর্তন হয়ে শঙ্কু আকৃতি নেয় (তার স্বাভাবিক গোলাকার আকৃতির পরিবর্তে) এবং ক্রমবর্ধমান পাতলা এবং অনিয়মিত হয়ে যায়। এই রোগটি ছোঁয়াচে নয় এবং ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে দুটি চোখকে প্রভাবিত করে। এতে চোখের দৃষ্টি শক্তি কমে যায়।</p> <p><strong>কাদের বেশি হয়? :</strong> এই অসুখ প্রতি দুই হাজার জনের মধ্যে একজনের হতে পারে। রোগের লক্ষণ খুব অল্প বয়সে দেখা যায় এবং রোগ বৃদ্ধির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি হয় ১০ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে।</p> <p><strong>কারণ :</strong> সাধারণত বিশ্বাস করা হয় যে পরিবেশগত এবং জেনেটিক উভয় কারণই এটি বিকাশে ভূমিকা পালন করে।</p> <p><strong>পারিবারিক ইতিহাস :</strong> কেরাটোকোনাসে আক্রান্ত কিছু মানুষ জিন বহন করতে পারে, যা তাদের কিছু পরিবেশগত কারণের সংস্পর্শে এলে তারা এটি বিকাশের প্রবণতা তৈরি করে।</p> <p><strong>প্রধান ব্যাধি :</strong> কিছু কিছু রোগের সঙ্গে কেরাটোকোনাস রোগটি সম্পর্কিত। যেমন— ডাউন’স সিনড্রোম, স্লিপ অ্যাপনিয়া, হাঁপানি, মারফানের সিনড্রোম এবং লেবারের জন্মগত অ্যামাউরোসিসসহ নির্দিষ্ট সংযোগকারী টিস্যু রোগ।</p> <p><strong>পরিবেশগত ঝুঁকির কারণ :</strong> অত্যধিক চোখ ঘষা এবং কন্টাক্ট লেন্স পরিধানসহ বেশ কয়েকটি পরিবেশগত ঝুঁকির কারণ কেরাটোকোনাসের বিকাশে অবদান রাখতে পারে।</p> <p><strong>কী করে বুঝবেন? :</strong> কিশোর বয়সে বারবার, খুব কম সময়ের ব্যবধানে চোখের পাওয়ার পাল্টাতে থাকলে সতর্ক হতে হবে। সাধারণত ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সের মধ্যে চোখের পাওয়ার স্থির হয়ে যায়। সেটা যদি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে, তাহলে সেটি কেরাটোকোনাসের প্রাথমিক পর্ব হতেও পারে। যেসব ব্যক্তির উচ্চ সিলিন্ড্রিক্যাল কিংবা মাইনাস পাওয়ার থাকে, তাদের কেরাটোকোনাস হওয়ার আশঙ্কা বেশি।</p> <p><strong>লক্ষণ : *</strong> বারবার চোখের চশমার পাওয়ার পরিবর্তন হওয়া * চশমা পরেও চোখে পুরোপুরি না দেখা * চোখে দুইটা দেখা * বাচ্চাদের ক্ষেত্রে চোখ অনেক বেশি চুলকানো * মণিতে দাগ হওয়া * চোখের ব্যথা এবং দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা * রাতের দৃষ্টিতে অসুবিধা * উজ্জ্বল আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা</p> <p><strong>চিকিৎসা :</strong> এই রোগের চিকিৎসা হিসেবে চশমা ব্যবহার, কন্ট্যাক্ট লেন্সের ব্যবহার, নতুন কর্নিয়া বা চোখের মণি সংযোজন।</p> <p>পরামর্শ দিয়েছেন</p> <p><strong>ডা. মো. আরমান হোসেন রনি</strong></p> <p>কনসালট্যান্ট (চক্ষু)</p> <p>দীন মোহাম্মদ আই হসপিটাল, সোবহানবাগ, ঢাকা</p>