<p>বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকরা নানা দেশে বঞ্চনা, হয়রানি, অপমান ও অপমৃত্যুর শিকার হচ্ছেন। এখন পর্যন্ত অভিবাসীকর্মীদের ন্যায্য অধিকার সুপ্রতিষ্ঠা হয়নি। অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতে রাষ্ট্রকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে।</p> <p>আজ শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে অভিবাসীকর্মীদের মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।</p> <p>এ সময় তিনি বলেন, ‘অভিবাসীকর্মীরা আমাদের সোনার সন্তান। বাংলাদেশে বৈদেশিক আয়ের ক্ষেত্রে অভিবাসীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স সরাসরি রিজার্ভে যোগ হচ্ছে। প্রবাস আয়ে অন্যান্য রপ্তানি খাতের মতো ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ নাই। তবে বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছে না। নারী শ্রমিকদের প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধে দূতাবাসগুলোকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘প্রবাসে কারাগারে আটক বাংলাদেশিদের মুক্তির বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কাজ করছে। সৌদি আরবে দুজন অভিবাসী নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও মানবাধিকার কমিশনের প্রচেষ্টায় রক্তপণ হিসেবে ৩০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়া গেছে। কাজ হারিয়ে যেসব অভিবাসী শ্রমিক দেশে ফিরেছে তাদের সামাজিক সুরক্ষা ও রিইন্টিগ্রেশনের ওপর আরো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কর্মী প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে স্বচ্ছতা, জবাবদিহির মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে হবে।’</p> <p>অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘নানা প্রতিকূলতার মধ্যে আমাদের অভিবাসীকর্মীরা তাদের শ্রমে ঘামে উপার্জিত অর্থ দেশে প্রেরণ করে থাকেন। কিন্তু আমরা তাদের সামাজিক মর্যাদা ও স্বীকৃতি এখনো নিশ্চিত করতে পারিনি। সরকারের নীতি কৌশল, প্রবাস আয়ে প্রণোদনা বৃদ্ধি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ প্রেরণ প্রক্রিয়া সহজ করা হলে প্রতিবছর প্রবাস আয় থেকে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৩৫ থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘শোভন কর্মপরিবেশের অভাব, ন্যায্য মজুরি না পাওয়া, অদক্ষতা, অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয়ই নিরাপদ অভিবাসনের বড় অন্তরায়। বিদেশ থেকে পাসপোর্টবিহীন আউট পাস নিয়ে বিপুলসংখ্যক কর্মী দেশে আসার বিষয়টি উদ্বেগ তৈরি করেছে। কেন এসব কর্মীরা বিনা পাসপোর্টে আউট পাস নিয়ে দেশে ফিরে এলো তা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা উচিত। আমরা যদি নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করে দক্ষ কর্মী পাঠাতে পারি, তাহলে আমাদের কৃষি যেভাবে বিপ্লব ঘটিয়েছে ঠিক একইভাবে প্রবাস আয় দেশের অর্থনীতিতে বিপ্লব ঘটাতে পারবে।’</p> <p>‘প্রবাসী কর্মীদের প্রেরিত অর্থ বৈদেশিক আয়ের মূল চালিকাশক্তি’ শীর্ষক ছায়া সংসদে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে সরকারি বাঙলা কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন। এই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন। প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক মো. তৌহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক ঝুমুর বারী ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ মো. আবুল বাশার। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।</p>