ফেসবুক পেজে কিভাবে ফলোয়ার বাড়াবেন?

  • প্রতিনিয়তই ফেসবুক তাদের অ্যালগরিদম ও এআইয়ের ডাটাসেট পরিবর্তন করায় ঠিক কিভাবে পোস্ট ভাইরাল করা বা পেজের লাইক ও ফলোয়ারসংখ্যা বাড়ানো যায়, সেটার ধরাবাঁধা কোনো উপায় নেই। তবে ফেসবুকের পরামর্শ অনুযায়ী এটির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন মোহাম্মদ তাহমিদ
শেয়ার
ফেসবুক পেজে কিভাবে ফলোয়ার বাড়াবেন?

বিশ্বে মেটার পাশাপাশি অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়লেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রামই এখনো জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছে, যদিও টিকটকের সেটাকে দ্রুতই ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পণ্য ও সেবাদানকারীরা ফেসবুক মার্কেটিংয়ের মাধ্যমেই সফলতার মুখ দেখছেন বেশি, বিশেষ করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মধ্যে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ব্র্যান্ড সৃষ্টি করা এবং ক্রেতা জোগাড় করা সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায়। তবে ২০১৭ সালের পর থেকেই ফেসবুকে অডিয়েন্স তৈরি করা হয়ে গেছে কষ্টসাধ্য। প্রতিনিয়তই ফেসবুক তাদের অ্যালগরিদম ও এআইয়ের ডাটাসেট পরিবর্তন করায় ঠিক কিভাবে পোস্ট ভাইরাল করা বা পেজের লাইক ও ফলোয়ারসংখ্যা বাড়ানো যায়, সেটার ধরাবাঁধা কোনো উপায় নেই।

এদিকে দেশ থেকে পেজ ও পোস্ট বুস্ট করাও হয়ে যাচ্ছে কঠিন, এইচটিটিপুলের মাধ্যমে যারা বুস্ট করত তাদের দেখতে হচ্ছে অন্য উপায়।

অডিয়েন্স তৈরির ব্যাপারে ফেসবুক যা বলছে

পণ্য ও সেবা প্রদানকারীদের সরাসরি ফেসবুকের মাধ্যমেই ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা না করে আগে ব্র্যান্ডের প্রচার ও প্রসার বাস্তব দুনিয়ায় শুরু করার কথা শুরুতেই বলেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। দৃষ্টিকাড়া লোগো, ছোট ও অন্যূন একটি নাম, সঙ্গে মনে রাখার মতো স্লোগান এবং ব্র্যান্ডটিতে কী কী পণ্য ও সেবা পাওয়া যাবে তার তালিকা নিয়ে ছোটখাটো হলেও ক্যাম্পেইন চালিয়ে ব্র্যান্ডটির ব্যাপারে লোকমুখে প্রচারণা শুরু করে দিয়ে এরপর সেটার পেজ চালু করলে দ্রুতই মানুষ সেটা সার্চ করে বের করে ফলো করতে থাকে—এমনটাই তাদের ভাষ্য। অবশ্য যারা প্রাতিষ্ঠানিক নয়, বরং যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত প্রচারণার জন্য পেজ করতে চাচ্ছে, তাদের জন্য এই নির্দেশনা কাজের নয়।

তবে নজরে পড়ার মতো লোগো, নাম  ও স্লোগান বা ‘অ্যাবাউট’-এ লেখা বিবরণ সব ধরনের পেজের জন্যই জরুরি। সঙ্গে কী ক্যাটাগরিতে পড়ে পেজটি, সে অনুযায়ী পেজের সঠিক লে-আউট করা।

মজার বিষয় হচ্ছে, এরপর তাদের দেওয়া গাইডলাইনে রয়েছে পেজটি বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করা এবং তাদের লাইক ও ফলো দেওয়ার জন্য আহবান করার কথা। পেজ খোলার পর সবাই এ কাজ করে থাকে, যদিও সেটা ফলপ্রসূ হয় কমই।

সেটা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী যারা ফেসবুকে ব্যক্তিগতভাবে তেমন পোস্ট করে না, বন্ধুতালিকার মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ তেমন ভালো নয়, তাদের জন্য এভাবে অডিয়েন্স তৈরি করাটা অত্যন্ত কঠিন। শুরুতেই নিজের প্রফাইলের রিচ বাড়াতে হবে, এবং পেজে কী কী থাকবে মেটার ওপর সুন্দর করে আলাদা পোস্ট লিখে এরপর সেটা শেয়ার করে অডিয়েন্স দ্রুত তৈরি করা সম্ভব, অন্তত মেটার তথ্য সেটাই বলছে। পেজ অ্যাডমিনের বাইরেও অন্য ব্যবহারকারীরা সেটা শেয়ার করছে কি না, সেটার ওপরও মেটা অনেক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাই বন্ধুদের পেজ শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করাও সমীচীন। নিউজফিডের চেয়েও আজকাল স্টোরির রিচ আরো বেশি হওয়ায় পেজের বিষয়বস্তু ও লিংক দিয়ে চোখ আটকে যাওয়ার মতো আকর্ষণীয় স্টোরি তৈরি করে শেয়ার করেও অডিয়েন্স তৈরি করা যেতে পারে, বলছে মেটা।
 

সব শেষে মেটা বলছে, পেজের সঙ্গে মিল আছে এমন বিষয়বস্তুর গ্রুপে নিজের প্রফাইল ব্যবহারের বদলে পেজ থেকেই সরাসরি পোস্ট করে বা কমেন্ট করেও পেজের অডিয়েন্স বাড়ানো সম্ভব। বিশেষ করে যারা এর মধ্যেই বড়সড় গ্রুপ তৈরি করেছে, তারা সেই গ্রুপের সঙ্গে পেজ যুক্ত করে সেখান থেকেও দ্রুত লাইক ও ফলোয়ার পেতে পারে।

ব্যাবসায়িক পেজের ক্ষেত্রে রিকমেন্ডেশন ফিচারটি চালু রাখার কথা বলছে ফেসবুক, যাতে ব্যবহারকারীরা পেজটির সেবা মানসম্মত কি না, সেটার রিভিউ দিতে পারে। যেসব পেজে রিকমেন্ডেশন বেশি, সেগুলো বুস্টিং ছাড়াও ব্যবহারকারীদের সামনে তুলে ধরে ফেসবুক। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের সময়সূচি এবং ঠিকানা ও যোগাযোগের ফোন নম্বর ও ওয়েবসাইট যুক্ত করার জন্যও পরামর্শ দিয়েছে মেটা। রেস্টুরেন্টের ক্ষেত্রে খাবারের মেন্যু এবং পণ্য বিক্রেতাদের জন্য শপ ফিচারগুলোও কার্যকর।

পেজের রিচ ধরে রাখতে করণীয়

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, প্রথম কয়েক শ লাইকের পর পেজের রিচ কমতে থাকে। সেটার মূল কারণ হিসেবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটাররা দায়ী করেছেন মানহীন পোস্ট ও নিয়মানুবর্তিতার অভাবকে। প্রতিদিন অন্তত দুটি পোস্ট করা উচিত বলে মনে করেন তাঁরা, কিছু ক্ষেত্রে পাঁচ-ছয়টিও করা যেতে পারে, কিন্তু অতিরিক্ত পোস্ট করলে সেটা স্প্যামিং হিসেবেও ধরতে পারে ফেসবুকের অ্যালগরিদম, সে ক্ষেত্রে উল্টা রিচ কমে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। লিখিত পোস্টের চেয়ে নজরকাড়া ছবি বা রিলস রিচ বেশি পায়। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রতিটি পোস্টের ছবি বা ভিডিওর ফরম্যাট কাছাকাছি হতে হবে, যাতে সেটা ব্র্যান্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য ধরে রাখতে পারে এবং অডিয়েন্সের মনে জায়গা করে নিতে পারে সহজেই। একই ফ্রেমিং ও কালার গ্রেডিংয়ে করা ছবি বা ইনফোগ্রাফের ক্ষেত্রে কালার প্যালেট ও ডিজাইন ফরম্যাট ধরে রাখা, ভিডিওর ক্ষেত্রে সেটা ইন্ট্রো, সেট ও থাম্বনেইলের ডিজাইন এক ফরম্যাটে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে আছে লেখার ভাষা ও টোন সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখা, বাংলা ও ইংরেজি দুটি ভাষায়ই পোস্ট করা যেতে পারে, কিন্তু মিশ্রিত ভাষা বা ‘মুরাদ টাকলা’ ভাষা ব্যবহার একেবারেই কাম্য নয়।

ছবি ও ভিডিওতে বিশেষ করে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে পোস্টের রিচ অর্গানিকভাবেই বাড়ানো সম্ভব। পোস্টের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল রেখে কিছু হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করার পাশাপাশি নিজস্ব কিছু হ্যাশট্যাগ তৈরি করলে পরবর্তী সময়ে পোস্টগুলো নিজেরও যেমন খুঁজে পেতে সহজ হবে, তেমনি অডিয়েন্সও চাইলে নতুন পোস্টের সঙ্গে সম্পর্কিত পুরনো পোস্টগুলো হ্যাশট্যাগে ক্লিক করে পেয়ে যাবে। এ ছাড়া ছবি আপলোড করলে তার অল্ট-টেক্সটে অবশ্যই ছবি ও পোস্টের বিষয়বস্তু ঠিকঠাকভাবে দিতে হবে, কেননা অল্ট-টেক্সট থেকেই ছবিটি কী লিখে সার্চ করলে পাওয়া যাবে সেই তথ্য সার্চ ইঞ্জিন ইনডেক্স করে থাকে।

ঠিকঠাক পোস্ট ও কনটেন্ট তৈরি করলেই চলবে না, সেটা কোন সময় পোস্ট করতে হবে, সেটারও রুটিন তৈরি করা জরুরি। পেজের ইনসাইটস থেকে দেখতে হবে অডিয়েন্স কোন বয়সী, কোন সময় তারা অনলাইনে থাকে, কোন সময়ের পোস্টগুলোতে তারা বেশি লাইক ও কমেন্ট করেছে। যেমন—রেস্টুরেন্টের পোস্ট সকালে করার চেয়ে দুপুরে করলেই রিচ বেশি পাওয়া যায়, আবার রাতে জীবনধর্মী পোস্ট বেশি রিচ পেলেও সকালে খবরজাতীয় পোস্টের রিচ থাকে বেশি—এমন বহু কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি রয়েছে।

পোস্টের কমেন্টের উত্তর দেওয়া পেজের ইন্টার-অ্যাকশন বাড়াবে, পেজের পোস্টগুলো কমেন্টকারীর বন্ধুদের ওয়ালেও হাজির হয়ে যাবে। ইনবক্সে আসা মেসেজের সঠিক সময়ে উত্তর দেওয়াও খুবই জরুরি। এ দুটি জিনিসকেই ফেসবুক পেজের অ্যাক্টিভিটি হিসেবে দেখে থাকে। অ্যাক্টিভিটি বাড়ানোর চমৎকার উপায়, পোস্টে কমেন্ট করার জন্য উৎসাহিত করা এবং পোল ফিচারটির ব্যবহার। লাইভ ভিডিওতেও দ্রুত পেজের ইন্টার-অ্যাকশন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

বুস্ট ক্যাম্পেইন

ফেসবুকে অর্গানিক রিচের ওপর ভরসা করে ব্যবসা চালানো সম্ভব নয়, চাই টাকা দিয়ে সেটা বুস্ট করা। বুস্টেরও আছে রকমফের, তাই আগে চিন্তা করতে হবে বুস্ট থেকে কী আশা করা হচ্ছে। যদি পেজে লাইক বাড়ানো হয়ে থাকে লক্ষ্য, সে ক্ষেত্রে পেজের সারমর্মধারী পোস্ট বুস্ট করা কার্যকর। একইভাবে পণ্য ও সেবার পোস্টগুলো বুস্ট করেও আরো বেশি অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানো যাবে। আবার এদিকে শুধু ব্র্যান্ড সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য পোস্ট নয়, পেজ বা ওয়েবসাইট বুস্ট করা অধিক কার্যকর। অনেক সময় বাস্তব দুনিয়ার অ্যাক্টিভেশন ক্যাম্পেইনের ইভেন্ট ফেসবুকে বুস্ট করে ভার্চুয়াল ও বাস্তব—দুই দুনিয়ায়ই নতুন ফ্যান পাওয়া সম্ভব।

পোস্ট বুস্ট করার আগে অবশ্যই পেজ ইনসাইটস দেখে সেখান থেকে টার্গেট ডেমোগ্রাফিক বেছে নিতে হবে। কী ধরনের অডিয়েন্স এর মধ্যেই বেশি ফলো করছে, তেমন অডিয়েন্সকে লক্ষ করে তবেই বুস্ট করা উচিত। আর অবশ্যই নির্ভরযোগ্য এজেন্সি ছাড়া পেজ বুস্ট করা উচিত নয়, তা না হলে পেজ হারানোর আশঙ্কাই থাকবে সবচেয়ে বেশি। তবে দিনশেষে অর্গানিক রিচের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টার পরই বুস্টিংয়ে যাওয়া উচিত, তা না হলে অল্প কিছু ফলোয়ারের পেজ থেকে পণ্য ও সেবা বুস্ট করা হচ্ছে দেখে উল্টা অডিয়েন্সের আস্থা হারানোর আশঙ্কা রয়ে যাবে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, গোপনে সমঝোতায় পৌঁছালেন জাকারবার্গ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, গোপনে সমঝোতায় পৌঁছালেন জাকারবার্গ
মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। ছবি : এএফপি

ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় অবহেলার দায়ে দায়ের করা আট বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা নিয়ে গোপন সমঝোতায় পৌঁছেছেন মার্ক জাকারবার্গ ও মেটা প্ল্যাটফরমের বর্তমান ও সাবেক পরিচালকরা। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়ার চ্যান্সারি কোর্টে মামলার শুনানির দ্বিতীয় দিনে এ তথ্য জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, সমঝোতার শর্তগুলো আদালতে প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি বিবাদীপক্ষের আইনজীবীরাও এই বিষয়ে মুখ খোলেননি।

শুনানি শুরুর ঠিক আগে হঠাৎ বিচারক ক্যাথলিন ম্যাককরমিক মামলাটি মুলতবি ঘোষণা করেন এবং উভয় পক্ষকে অভিনন্দন জানান।

বাদীপক্ষের আইনজীবী স্যাম ক্লসিক জানিয়েছেন, সমঝোতায় পৌঁছাতে তাদের খুব বেশি সময় লাগেনি। ওই দিনই আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল মেটার পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও ধনকুবের বিনিয়োগকারী মার্ক অ্যান্ড্রিসেনের। 

এই মামলায় মূল অভিযুক্ত ছিলেন মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ, সাবেক প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শেরিল স্যান্ডবার্গসহ বর্তমান ও সাবেক মিলিয়ে মোট ১১ জন কর্মকর্তা।

বাদী শেয়ারহোল্ডারদের অভিযোগ, এসব ব্যক্তি কোম্পানির গোপনীয়তা লঙ্ঘনের দায়ে ফেসবুককে বিপুল অঙ্কের জরিমানার মুখে ফেলেছেন। ফলে তাদের ব্যক্তিগত সম্পদ থেকেই সেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যদিও অভিযুক্তরা অভিযোগগুলো ‘অযৌক্তিক’ বলে দাবি করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ফেসবুককে পাঁচ বিলিয়ন ডলার জরিমানা করে।

২০১২ সালে ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষাসংক্রান্ত যে চুক্তি হয়েছিল, তা লঙ্ঘনের অভিযোগেই এই জরিমানা। এই মামলায় মেটা করপোরেশনকে সরাসরি আসামি করা হয়নি।

মামলার বিষয়ে মেটা কোনো মন্তব্য করেনি। এমনকি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেননি বিবাদীপক্ষের আইনজীবীরাও।

ডিজিটাল কনটেন্ট নেক্সটের প্রধান জেসন কিন মনে করেন, এই সমঝোতা হয়তো সংশ্লিষ্টদের কিছুটা স্বস্তি দেবে, কিন্তু জনস্বার্থে দায় স্বীকার করার সুযোগ হারাল।

তার মতে, মামলাটি চালিয়ে নেওয়া হলে ফেসবুকের ভেতরের অনেক অজানা তথ্য প্রকাশ্যে আসত।

মামলার পরবর্তী পর্যায়ে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল জাকারবার্গের (সোমবার) ও স্যান্ডবার্গের (বুধবার)। এ ছাড়া সাবেক বোর্ড সদস্য পিটার থিল ও রিড হেস্টিংসেরও সাক্ষ্য দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল।

বাদীপক্ষের অভিযোগ, মেটার পরিচালনা পর্ষদ ২০১২ সালের এফটিসি চুক্তির শর্ত মানা হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি জাকারবার্গ ও স্যান্ডবার্গের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ফেসবুককে পরিকল্পিতভাবে একটি ‘অবৈধ তথ্য সংগ্রাহক প্ল্যাটফরমে’ পরিণত করেছেন।

২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নেয়। এরপরই এই কেলেঙ্কারির সূত্র ধরে মামলার সূত্রপাত হয়।

গতকালের শুনানিতে বাদীপক্ষের একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ফেসবুকের গোপনীয়তা নীতিতে গুরুতর ঘাটতি রয়েছে। যদিও তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি, প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালের চুক্তি ভেঙেছে কি না।

ফেসবুক জানিয়েছে, ২০১৯ সালের পর থেকে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষায় তারা বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।

তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষক জেসন কিন মনে করেন, ফেসবুক কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কাণ্ডকে ‘খারাপ কিছু ব্যক্তির কাজ’ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পুরো প্রতিষ্ঠানটির নজরদারিমূলক ব্যাবসায়িক মডেলই ভেঙে পড়েছে এবং সেটি এখনো সংশোধিত হয়নি।

তার মতে, মামলাটি অব্যাহত থাকলে আদালতে হয়তো ফেসবুকের আসল চেহারাটা দেখা যেত—কিন্তু সেই সুযোগটা হারিয়ে গেল। 

মন্তব্য

ব্রিস্টলে চালু যুক্তরাজ্যের শক্তিশালী সুপার কম্পিউটার ‘ইসামবার্ড-এআই’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ব্রিস্টলে চালু যুক্তরাজ্যের শক্তিশালী সুপার কম্পিউটার ‘ইসামবার্ড-এআই’
সংগৃহীত ছবি

ব্রিস্টলে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলো যুক্তরাজ্যের অত্যাধুনিক সুপার কম্পিউটার ‘ইসামবার্ড-এআই’। দেশটির প্রযুক্তিসচিব পিটার কাইল এটি চালু করেন সরকারের নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে।

এই কম্পিউটারটি কেমব্রিজের ‘ডন’ নামের আরেকটি সুপার কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যের পাবলিক এআই শক্তিকে আরো উন্নত করবে। এর লক্ষ্য—ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের অপেক্ষমাণ তালিকা কমানো, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নতুন উপায় খোঁজা, ওষুধ উদ্ভাবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা।

ইসামবার্ড-এআই ইতিমধ্যে জানুয়ারিতে একটি ওষুধ গবেষণা প্রকল্পে ব্যবহার শুরু হয়। এখন এটি সম্পূর্ণরূপে চালু হওয়ায় আরো অনেক সরকারি প্রকল্পে ব্যবহার করা যাবে। এই মেশিনে রয়েছে ৫,৪০০-এরও বেশি এনভিডিয়া গ্রেস হপার সুপারচিপ। এটি হিউলেট-প্যাকার্ডের প্রযুক্তিতে তৈরি এবং সরকারি অর্থায়নে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় এটি নির্মাণ করেছে।

যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে এ ধরনের সুপার কম্পিউটার ব্যবস্থার সক্ষমতা ২০ গুণ বাড়ানো হবে।

পাশাপাশি স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসেও এআই উন্নয়নে বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ করা হবে। সরকার বলছে, ১০ লাখ শিক্ষার্থীকে এআই শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে এবং আরো ৭৫ লাখ মানুষকে এটি নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিশ্বজুড়ে এআই প্রতিযোগিতার মধ্যে যুক্তরাজ্য নিজেকে শুধু ব্যবহারকারী নয়, বরং উদ্ভাবক হিসেবেও গড়ে তুলতে চাইছে।

ইতিমধ্যেই ‘ইসামবার্ড-এআই’ বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ সুপার কম্পিউটারের তালিকায় ১১তম স্থানে উঠে এসেছে।

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

স্পেসএক্সের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছে কাল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
স্পেসএক্সের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছে কাল

বিশ্বখ্যাত মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের ব্যবসা পরিচালনা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ারের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল আগামীকাল শুক্রবার (১৮ জুলাই) ঢাকায় আসছেন। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্য হলেন আন্তর্জাতিক কৌশল ও সরকারি সম্পর্ক পরিচালক রিচার্ড গ্রিফিথস।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশ সফরে তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে স্টারলিংকের সম্ভাব্য বিনিয়োগ ও অংশীদারিত্বের দিকগুলো মূল্যায়ন করবে এবং সরকার ও নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেবে।

পাশাপাশি তারা বাংলাদেশে স্টারলিংকের অফিসিয়াল যাত্রা শুরুর ঘোষণা দেবে।

লরেন ড্রেয়ারের নেতৃত্বে আগত দলটি ব্যবসায়িক সম্ভাবনা যাচাই, নতুন প্রযুক্তির স্থানীয় বাস্তবায়ন এবং গ্রামীণ ও দুর্গম অঞ্চলে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগে বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দেখছে।

স্পেসএক্স ও স্টারলিংকের এই সফর বাংলাদেশের ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনের লক্ষ্য পূরণে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আগামীকাল প্রতিনিধিদলটি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।

পরে হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে প্রেস কনফারেন্সে বক্তব্য রাখবে। রাতে ঢাকার হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং আগামী ১৯ জুলাই প্রতিনিধিদল দেশে ফিরে যাবেন।

মন্তব্য

তথ্য অধিকার নিয়ে নতুন অভিযোগের মুখে টিকটক

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
তথ্য অধিকার নিয়ে নতুন অভিযোগের মুখে টিকটক
ফাইল ছবি : এএফপি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জেনারেল ডেটা প্রটেকশন রেগুলেশনের (জিডিপিআর) বিধি-নিষেধ না মানার অভিযোগে অনলাইন গোপনীয়তা নিয়ে কাজ করা কর্মীরা বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্ট টিকটক ও আরো চীনা মালিকানাধীন দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ করেছেন। বিধি-নিষেধ অনুযায়ী একজন ব্যবহারকারী তার ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে প্রক্রিয়া করা হচ্ছে তা জানার অধিকার রাখেন। তবে প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিধি-নিষেধ অনুসরণ করে নি বলে জানিয়েছে অভিযোগকারীরা। 

অস্ট্রিয়াভিত্তিক প্রখ্যাত গোপনীয়তা সংগঠন নোইব (নান অব ইওর বিজনেস) জানুয়ারিতেও এই তিনটি প্রতিষ্ঠানসহ ছয়টি চীনা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল।

তাদের অভিযাগ ছিল—‘অবৈধভাবে’ ইউরোপীয় নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চীনে পাঠানো হয়েছে।

নোইব জানিয়েছে, শেইন, টেমু ও শাওমি অভিযোগকারীদের বাড়তি তথ্য সরবরাহ করলেও টিকটক, আলিএক্সপ্রেস ও উইচ্যাট ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিডিপিআর বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করেই চলেছে। টিকটকের বিরুদ্ধে গ্রিসে, আলিএক্সপ্রেসের বিরুদ্ধে বেলজিয়ামে ও উইচ্যাটের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডসে ডেটা সুরক্ষা কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগে তাদের ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে প্রক্রিয়া হচ্ছে তা জানানো ও জরিমানা করার নির্দেশ দেওয়ার কথা বলা হয়।

নোইব বলেছে, ‘এই তিনটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানই ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে প্রক্রিয়া হচ্ছে সেই তথ্য প্রদানের অনুরোধ মানেনি। এতে করে ইউরোপীয় ব্যবহারকারীদের মৌলিক গোপনীয়তার অধিকার চর্চা ও তাদের ব্যক্তিগত ডেটা কিভাবে প্রক্রিয়া হচ্ছে তা জানার সুযোগ নেই। টিকটক অভিযোগকারীর তথ্যের শুধু কিছু অংশ এলোমেলো ভাবে সরবরাহ করেছে, যা বোঝা অসম্ভব।’

ইউরোপে তদন্ত শুরু হওয়ার পর গত সপ্তাহে বেইজিং দাবি করেছে, তারা কোনো প্রতিষ্ঠানকে অবৈধভাবে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ কিংবা সংরক্ষণের নির্দেশ দেয়নি।

ব্যক্তিগত ডেটা চীনে পাঠানোর দায়ে গত মে মাসে আয়ারল্যান্ডের ডেটা সুরক্ষা কমিশন টিকটককে ৫৩০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করেছিল।

নোইব জিডিপিআর লঙ্ঘনের কারণে মেটা ও গুগলের মতো বহু মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও মামলা করেছে। তারা বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেছে, ‘চীনা অ্যাপগুলো মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়েও খারাপ।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ