<p>নারী দিবসে মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের নাটক ‘বিদিশা’ প্রচারের পর আলোচিত হয়েছেন সাবিলা নূর। এই নাটক ও সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন হৃদয় সাহা।</p> <p><strong>বিদিশার ভালো-মন্দ</strong><br /> অভিনয়ে ১০ বছরের ক্যারিয়ার। এবারই প্রথমবারের মতো মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের নাটকে অভিনয় করলেন সাবিলা নূর। রাজের এক সহকারীর কাছে প্রথমে শুনেছিলেন এই নাটকের গল্প। ‘গল্প শুনে আমি সংকোচবোধ করেছিলাম। পরে রাজ ভাইয়ের নির্মাণ, গল্পের বার্তা সব মিলিয়ে রাজি হয়ে যাই। প্রচারের পর ভালো সাড়া পেয়েছি। কিছু অপ্রাপ্তি তো থাকেই। যেমন—এই নাটকের মেকআপে আমি সন্তুষ্ট ছিলাম না। কারিগরি দিক আরো উন্নত হলে ভালো হতো। আমাদের নাটকের বাজেটের যে স্বল্পতা, সব সময় সব কিছু সম্ভব হয় না। তবু রাজ ভাই সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। আশা করছি, দর্শক এই বিষয়গুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতেই দেখবেন’, বললেন সাবিলা।</p> <p><strong>ফরসা ত্বকের অভিনেত্রী যখন পর্দায় কৃষ্ণবর্ণে</strong><br /> ‘বিদিশা’ নাটকের বিদিশা কৃষ্ণবর্ণের। নাটকটি প্রচারের পর নতুন করে আলোচনায় সেই পুরনো বিতর্ক।  শোবিজে কৃষ্ণবর্ণের অভিনেত্রী থাকার পরও কেন বারবার ফরসা ত্বকের অভিনেত্রীদেরই এসব চরিত্রে নেওয়া হয়। সাবিলা বলেন, “আসলে ‘বিদিশা’র প্রস্তাব পাওয়ার পর আমি নিজেও এ বিষয় নিয়ে সংকোচবোধ করছিলাম। নাটকটা করা ঠিক হবে কি না ভাবছিলাম। ঠিক এ প্রশ্নটাই আমি রাজ ভাইকে করেছিলাম। রাজ ভাই বলেছিলেন, ‘আমরা তো রং বা চেহারা দেখে অভিনেত্রী নির্বাচন করি না, অভিনয় দেখি। গল্পটা তোমাক ভেবেই করা হয়েছে।’ তবে আমার কাছে গ্ল্যামারাস বা কৃষ্ণবর্ণ মূল ব্যাপার নয়, মেকআপ বা কারিগরি দিকটা আসল। তা ছাড়া প্রযোজনা সংস্থারও চাহিদা থাকে। যার কারণে আমাকে বা মেহজাবীন চৌধুরী আপু, তাসনিয়া ফারিণ বা সাফা কবিরদের করতে হয়।” </p> <p><strong>গল্পকার সাবিলা</strong><br /> অভিনয়ের পাশাপাশি বেশ কিছু নাটকের গল্প লিখেছেন সাবিলা। ‘পারাপার’, ‘রিদিকা’ তাঁর গল্পেই নির্মিত। গল্পকার সাবিলার নতুন কিছু আসছে? ‘আসলে অনেক গল্প জমে আছে, যেগুলো আমি পর্দায় দেখাতে চাই। কিন্তু তার জন্য চিত্রনাট্যকার ও পরিচালকের সঙ্গে সময় নিয়ে বসতে হবে। ব্যস্ততা কেটে গেলেই বসব।’</p> <p><strong>প্রগতির পথে নারী </strong><br /> নারী দিবসে ‘প্রগতির পথে নারী’ সম্মাননা পেয়েছেন সাবিলা নূর। এই সম্মাননা প্রাপ্তিতে দারুণ খুশি অভিনেত্রী। বলেন, ‘আমি ছাড়া আরো যে ১০ জন এই সম্মাননা পেয়েছেন তাঁদের পাশে নিজের নাম শুনে ভীষণ গর্ব হচ্ছিল। এই সম্মাননা মাকে উৎসর্গ করেছি। আমার অভিনেত্রী হওয়ার পেছনে মায়ের অবদান বেশি। যারা আমাকে এই সম্মাননা প্রদান করেছে, তাদের কাছেও কৃতজ্ঞ।’</p> <p><strong>সাম্প্রতিক ব্যস্ততা</strong><br /> একটি ওয়েব সিরিজের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত আছেন। চলছে কর্মশালা। সিরিজটির নাম এখনই বলতে মানা। ‘তবে একটি ক্লু দিচ্ছি, যে নির্মাতা সিরিজটি বানাচ্ছেন, তাঁর সঙ্গে আমার প্রচুর জনপ্রিয় কাজ রয়েছে’, বললেন সাবিলা। শিগগিরই শুটিং শুরু হবে, টানা ১৫-১৬ দিন শুটিং করতে হবে। এ কারণে এবার ঈদের নাটকে কম দেখা যাবে তাঁকে। পুরনো দুটি প্রচারিত হবে আর সিরিজের শুটিংয়ের ফাঁকে যদি সময় মেলাতে পারেন তাহলে আরো কিছু নাটকে অভিনয় করবেন।</p> <p><strong>অপূর্ব-আলফা আই প্রসঙ্গ</strong><br /> অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বর বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গ ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে মামলা করেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আলফা আই। এই অভিযোগ শুনে হতবাক সাবিলা! বলেন, ‘অপূর্ব ভাই ও শাহরিয়ার শাকিল ভাই দুজনই খুব ভালো বন্ধু, এমন হওয়ার কথাই না আসলে। অপূর্ব ভাই আর আমি আলফা আইয়ের অনেক কাজ করেছি, সামনেও করব। যদিও খুঁটিনাটি কিছু থেকে থাকে, সেটা নিজেদের মধ্যেই মিটিয়ে ফেলা উচিত ছিল। আমরা যারা তৃতীয় পক্ষ তারা তো আর আসল সত্য জানি না। এই খবর মিডিয়ায় আসাটা ভালো হয়নি। দর্শক আমাদের এই ধরনের খবর জানুক, এটা চাই না। এসব ভালো দেখায় না।’</p> <p><strong>নারীকেন্দ্রিক গল্পে স্বাচ্ছন্দ্য</strong><br /> পাশের বাড়ির মিষ্টি মেয়ের চরিত্রে বরাবরই সাবিলাকে পছন্দ করে দর্শক। তবে অভিনেত্রীর পছন্দ নারীকেন্দ্রিক গল্প। কারণটাও বললেন, “আমরা তো থিয়েটার থেকে অভিনয় শিখে আসিনি। টিভিনাটকে অভিনয় করতে করতেই শিখছি। তাই নারীকেন্দ্রিক গল্প বা যেসব চরিত্রে অভিনয় দেখানোর সুযোগ থাকে, সেসব চরিত্রে অভিনয় করতে বেশি আগ্রহী। দর্শক যেহেতু আমাকে পাশের বাড়ির মেয়ে হিসেবে বেশি পছন্দ করে, সেটাও করব। এই যেমন ভালোবাসা দিবসে ‘তুমিহীনা’ করে অপ্রত্যাশিত সাড়া পেয়েছি। দর্শকের কারণেই তো আমি আজকের সাবিলা নূর।”</p>