<p>নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার কাকৈরগড়া ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে সেতু নির্মাণ করা হলেও তা কাজে আসছে না। নির্মাণের বছরখানেকের মধ্যে বন্যায় ভেঙে যায় সেতুটি। চার বছর পরও ভাঙা সেতু মেরামত হয়নি। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কয়েক হাজার মানুষকে। দীর্ঘদিন ধরেই একটি খালের ওপর দেবে পড়ে আছে সেতুটি।</p> <p>স্থানীয়দের অভিযোগ, অনিয়মের মধ্য দিয়ে সেতু তৈরির ফলে নির্মাণের বছরখানেকের মধ্যে বন্যায় ভেঙে পড়ে। এরপর বছরের পর বছর গেলেও সেতুটি সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের ব্যবস্থা করেনি কেউ।</p> <p>সূত্র জানায়, কাকৈরগড়া ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে গোদারিয়া থেকে জয়নগর বাজার সড়কের গাঁওয়া খালের ওপর সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে সেতুর কাজ শেষ হয়। কিন্তু বছরখানেকের মাথায় ২০২০ সালে সেতুটি দেবে যায়।</p> <p>রবিবার বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, সেতুটির পাশের মাটি সরে মাঝবরাবর দেবে পড়ে রয়েছে। সেতুর পাশ দিয়ে হেঁটে চলাচল করছে লোকজন। কেউবা আশপাশের বাড়ির উঠানের  ভেতর দিয়েই চলাচল করছে।</p> <p>কয়েকজন পথচারীর সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, হাটবাজারে বা উপজেলা শহরে যেতে হলে আট কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হয়। এতে তাঁদের কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। এখন তাঁরা এ পথ দিয়ে কষ্টে হেঁটে চলাচল করতে পারলেও বন্যার পানি এলেই নৌকা ছাড়া সম্ভব হয় না।</p> <p>স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চার বছর আগে বন্যার পানির প্রবল স্রোতে সেতুটির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সেতুটি দেবে গিয়ে সড়কের সংযোগ অংশটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও পুনরায় সেতুটি ঠিক না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ১৫ গ্রামের মানুষকে।</p> <p>রামপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে এখন চলাচল করতে হয় আমাদের। রাস্তাও ভালো না আবার সেতুটি ভাঙা থাকার কারণে বিভিন্ন প্রয়োজনে হাটবাজার বা শহরে যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।’</p> <p>একই গ্রামের কৃষক আব্দুল হাই বলেন, ‘রাস্তার জন্য অনেক আগে থেকেই কষ্ট করে আসতেছি আমরা। আমাদের অনেক আশায় এই ব্রিজটা হয়েছিল, কিন্তু এক বছরও টিকে নাই, ভেঙে গেছে। সবচেয়ে দুঃখের বিষয়, এক মণ ধান বিক্রি করে আর কত টাকা পাই আমরা? আমাদের ধান বাজারে নিয়ে যেতে ১০০ টাকা ভাড়া বেশি গুনতে  হয়।’</p> <p>স্থানীয় বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম বলেন,‘ছেলে-মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একটা রোগীকে চিকিৎসার জন্য গাড়ি দিয়ে শহরে নেওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে।’ </p> <p>স্থানীয় ইউপি সদস্য সেকুল তালুকদার বলেন, ‘সেতুটির জন্য মানুষকে অনেক বেশি কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। আমি কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছি।’</p> <p>দুর্গাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। সেতুটির বিষয়ে আমার জানা নেই, তবে খোঁজ নেব।’</p> <p>দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম রকিবুল হাসান বলেন, ‘সেতুটির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p>