<p>বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মাদরাসাছাত্র ফাহমিদ হাসান শুভকে (১৪) শ্বাসরোধে হত্যার পর মৃতদেহ ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। শুভর মৃত্যুর ছয় মাস পর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে হত্যার আলামত পেয়ে নিহতের বাবা সুলতান সেখ আজ সোমবার বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।</p> <p>থানা পুলিশ এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ধুনট উপজেলার উল্লাপাড়া গ্রামের তোরাব সেখের ছেলে আব্দুল মান্নান (৫০), তাঁর স্ত্রী মদিনা খাতুন (৩৮), ছেলে মারুফ সেখ (২০) ও একই গ্রামের ফরহাদ সেখের স্ত্রী খাদিজা খাতুনকে (৪৫) নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ সোমবার দুপুরের পর ধুনট থানা থেকে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।</p> <p>মামলা সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খন্দকারটোলা গ্রামের সুলতান সেখের ছেলে ফাহমিদ হাসান শুভ লেখাপড়ার উদ্দেশে ধুনট উপজেলার উল্লাপাড়া গ্রামে তার নানা ফরিদ সেখের বাড়িতে অবস্থান করত। প্রায় পাঁচ বছর ধরে নানার বাড়িতে থেকে পার্শ্ববর্তী মাটিকোড়া গ্রামে ইলহাম এলোমানি অরফান কওমি মাদরাসায় লেখাপড়া করছিল।</p> <p>এ অবস্থায় ২০২৩ সালের ৯ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ফাহমিদ হাসান শুভর মৃতদেহ গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার নানার ঘরের ভেতর তীরের সাথে ঝুলতে থাকে। এ সময় শুভর নানা-নানিসহ অন্য কেউ বাড়িতে ছিলেন না। ফরিদ সেখ দুপুর ১২টার দিকে বাড়িতে ফিরে শুভর ঝুলন্ত লাশ দেখে থানা পুলিশসহ তাঁর স্বজনদের খবর দেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু (ইউডি) মামলা রেকর্ড করা হয়। পুলিশ শুভর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।</p> <p>এ অবস্থায় ১১ জানুয়ারি থানা পুলিশের হাতে পৌঁছে শুভর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন। ওই প্রতিবেদনে শুভকে শ্বাসরোধে হত্যার পর মৃতদেহ ঝুলিয়ে রাখার আলামত পাওয়া গেছে। এরপর পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের অনুসন্ধান করতে থাকে। একপর্যায়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শনিবার নিজ বাড়ি থেকে আব্দুল মান্নান, মারুফ, মদিনা ও খাদিজাকে আটক করে।</p> <p>এ বিষয়ে নিহত মাদরাসাছাত্রের বাবা সুলতান সেখ বলেন, ‘আমার শ্বশুরের (ফরিদ) সাথে আব্দুল মান্নানের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধের জের ধরে আমার ছেলেকে (শুভ) শ্বাসরোধে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে প্রচার করতে ঘরের ভেতর তীরের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছিল। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে হত্যার বিষয়টি জানা গেছে। আমার ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’</p> <p>মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধুনট থানার এসআই অমিত বিশ্বাস বলেন, ‘মাদরাসাছাত্র হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আটক চারট আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা চলছে।’ </p>