<p>মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থানায় নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে যোগদান করেছেন মোহাম্মদ আলী মাহমুদ। এর আগে তিনি সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) কোতোয়ালি থানায় ওসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে তিনি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ক্যশৈনুর কাছ থেকে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। </p> <p>এদিকে থানায় যোগদানের আগেই ওসি মো. আলী মাহমুদের বিরুদ্ধে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (ইসি) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ও সাবেক এমপি এমএম শাহীনের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট হাবিবুর রহমান। অপর অভিযোগকারী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি একেএম সফি আহমদ সলমান। গত ১০ ও ১১ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে পৃথকভাবে আবেদন দুটি জমা দেওয়া হয়।  </p> <p>লিখিত অভিযোগে ওসি আলী মাহমুদকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের ঘনিষ্ঠজন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর নির্বাচনের স্বার্থে ওসিকে কুলাউড়া থেকে অন্যত্র বদলি করার জন্য দুই প্রার্থী প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। </p> <p>স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএম সফি আহমদ সলমান লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে ও নির্বাচন কমিশনের অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের ঘোষণায় তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। কুলাউড়া আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রাথী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের জন্ম ও রাজনৈতিক কর্মস্থল সিলেট শহর। এ জন্য তাঁর সহযোগিতায় সিলেট কোতোয়ালী থানার ওসি আলী মাহমুদকে কুলাউড়া থানায় বদলি করা হয়েছে।’</p> <p>সফি আহমদ আরো অভিযোগ করেছেন, ‘এই ওসির সঙ্গে নাদেলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় জনমনে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। ওসির কুলাউড়া আগমনের সংবাদে নাদেলের কর্মী সমর্থকরা আনন্দ উল্লাস ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন। সিলেট শহরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজরা ইতোমধ্যে কুলাউড়া শহরে অবস্থান নিয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সভা সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন।’</p> <p>এদিকে তৃণমুল বিএনপির প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট হাবিবুর রহমান লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, কুলাউড়া আসনে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী একজন প্রার্থীর অত্যন্ত প্রিয়ভাজন ওসি মো. আলী মাহমুদ। তাদের দুজনের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক চমৎকার। নির্বাচন কমিশন তদন্ত করলেই অভিযোগের বিষয়টি সত্য প্রমাণিত হবে। তাঁর আশঙ্কা আলী মাহমুদকে ওসি হিসেবে বদলি করা হলে প্রশাসনের প্রভাব খাটিয়ে তিনি প্রার্থীর পক্ষাবলম্বন করতে পারেন। এতে ওই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী অন্যান্য প্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। </p> <p>এ বিষয়ে কুলাউড়া থানার নবাগত ওসি আলী মাহমুদ মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ওনার (নাদেল) বাড়ি কুলাউড়া। ওনার প্রতি আমার কোনো আলাদা দুর্বলতা নেই। তাছাড়া আমি সিলেটে পড়াশোনা করিনি। চাকরি করেছি সিলেটে। পুলিশে যারা ওসি হিসেবে চাকরি করে তাদের সমাজের সবার সঙ্গে পরিচয় থাকে। ওসির চেয়ারটা সবার জন্য উন্মুক্ত।’</p> <p>দুই প্রার্থীর আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে ওসি বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত নই। আমাদের বদলিটা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে পুলিশ হেডকোয়াটার্স থেকে।’</p> <p>আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘সম্পর্ক তো অনেকের সঙ্গে থাকতেই পারে। সিলেট কিংবা ঢাকায় কাজ করার সুবাদে দেশের অনেকের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে। ওসি কি নির্বাচনে পাশ করানোর ক্ষমতা রাখেন? ভোট তো দেবে জনগণ। বদলির বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। এটা তাদের ডিপার্টমেন্টের বিষয়। ওই দুই প্রার্থী যদি মনে করেন ওসি নির্বাচনে কাউকে পাশ করাতে পারেন তাহলে তারা তাদের পক্ষের ওসি এনে পাশ করিলাউক্কা।’</p>