<p>বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার অভিযোগ করেছেন, বহুজাতিক কম্পানি সিন্ডিকেট করে বছরে ফিড ও মুরগির বাচ্চায় অতিরিক্ত পাঁচ হাজার ৯২০ কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করে লোপাট করছে। এতে করে ক্ষতি হচ্ছে প্রান্তিক খামারিদের। অনেকেই খামার বন্ধ করে দিচ্ছেন। ফলে একচেটিয়াভাবে ডিম ও মুরগির বাজার বহুজাতিক কম্পানির হাতে চলে গেছে।</p> <p>আজ সোমবার (১৯ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বিপিএ আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।</p> <p>সুমন হাওলাদার বলেন, ‘বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) দীর্ঘদিন ধরে প্রান্তিক পোলট্রি খামারিদের নিয়ে কাজ করে আসছে। আমরা ডিম মুরগির বাজারে স্বস্তি রাখার চেষ্টা করেছি। সব সময় করপোরেট গ্রুপের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। প্রতিবেশী দেশ ভারতে এক কেজি ফিডের দাম ৪০-৫০ টাকা, একটি মুরগির বাচ্চার দাম ২৫-৩৫ টাকা। তাদের একটি ডিমের উৎপাদনে খরচ ৫ টাকা। আর  এক  কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ৭৬-৮৬ টাকা। কিন্তু বর্তমানে ডিম মুরগির উৎপাদন খরচ প্রতিবেশী দেশের তুলনায় আমাদের দেশে দ্বিগুণ। বাংলাদেশে এক  কেজি ফিডের দাম ৬০-৭২ টাকা, একটি মুরগির বাচ্চার দাম ৬০-১০০ টাকা, ডিমের উৎপাদন খরচ ১০.২৯ টাকা, এক কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৫৫-১৭০ টাকা, আর এক কেজি সোনালি মুরগির উৎপাদন খরচ ২৪০-২৬০ টাকা। এখন বর্তমানে উৎপাদন খরচের বিপরীতে প্রতি কেজি মুরগিতে ৪০-৬০ টাকা পর্যন্ত লস গুনতে হচ্ছে।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দেশে বছরে ফিডের চাহিদা এক কোটি ২০ লাখ টন। সেখানে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৮০-৮৭ লাখ টন। আমরা যদি সর্বনিম্ন প্রতি কেজিতে পাঁচ টাকা বেশি ধরে হিসাব করি তাহলে প্রতি টনে পাঁচ হাজার টাকা হয়। আর ৮০ লাখ টনে বছরে প্রায় ৪০০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করছে ফিড সিন্ডিকেট। আর এর খেসারত দিচ্ছে ভোক্তা ও প্রান্তিক খামারিরা।’</p> <p>আন্তর্জাতিক বাজারে ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দফায় দফায় ফিডের উপাদানের দাম কমলেও বাংলাদেশের বাজারে কোনো কারণ ছাড়াই দাম বেড়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।</p> <p>এ সময় প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদনে টিকিয়ে রাখতে ও ভোক্তা পর্যায়ে ন্যায্য মূল্যে ডিম ও মাংস সরবরাহের জন্য সাত দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে পোলট্রি ব্যবসায়ী ও খামারিকে বাংলাদেশের সব ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে ঋণ সুবিধা দিতে হবে। এক দিন বয়সের সব মুরগির বাচ্চার সর্বোচ্চ খুচরা দাম ৩০-৫০ টাকার মধ্যে রাখতে হবে। সব ধরনের পোলট্রি ফিডের ৫০ কেজি বস্তার মূল্য ২৫০০-৩০০০ টাকার মধ্যে রাখতে হবে। করপোরেট গ্রুপকে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং, ডিম ও মুরগির বাণিজ্যিক উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। সব পোলট্রি ব্যবসায়ী ও খামারিকে প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে আইডি কার্ড দিতে হবে। সরকারিভাবে বাণিজ্যিক ফিড মিল ও বাচ্চা উৎপাদনের জন্য হ্যাচারি চালু করতে হবে।</p> <p>এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহসভাপতি বাপ্পি কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস খন্দকারসহ অন্যরা।</p>