<p>দীর্ঘ বিরতির পর আবারও যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে এবার যুগপত্ভাবে ভারতের সঙ্গে ‘দেশবিরোধী’ চুক্তি, দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে গুচ্ছ কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। তবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এককভাবে কর্মসূচি পালন করতে চায় দলটি।</p> <p>গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।</p> <p>৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর যুগপৎ আন্দোলনের জন্য শরিকদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করলেও যৌথভাবে কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। কয়েক মাস আগে শরিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেন দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। ওই সব বৈঠকে আবারও যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।</p> <p>স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্র জানায়, কর্মসূচি প্রণয়নে দু-এক দিনের মধ্যে মিত্র দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবে বিএনপি।</p> <p>এর আগে আজ বুধবার দলের যুগ্ম মহাসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁদের কাছ থেকে কর্মসূচির বিষয়ে মতামত নেওয়া হবে। </p> <p>বৈঠক সূত্র জানায়, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এই সময় সমমনাদের নিয়ে বিএনপি অন্তত তিনটি ইস্যুতে আন্দোলন করতে চায়। দলের নেতারা মনে করেন, বর্তমানে সার্বিকভাবে দেশের ক্রান্তিকাল চলছে। দুর্নীতির নানা চিত্র গণমাধ্যমে উঠে আসছে। এই ক্রান্তিকালে দেশের সমস্যা নিয়ে বিএনপির সরব থাকা উচিত বলে মত দেন নেতারা।</p> <p>বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের পাশাপাশি আরো কয়েকটি ইস্যুতে কর্মসূচি দেওয়া হবে। এবার যুগপত্ভাবে এসব কর্মসূচি পালন করা হতে পারে।’</p> <p>বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মহানগর ও জেলা সদরে তিন দিনের সমাবেশ কর্মসূচি শেষে গত সোমবার রাতে দলের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে বৈঠকে বসে স্থায়ী কমিটি।</p> <p>এ পর্যায়ে জেলা, মহানগর ও উপজেলা পর্যায়ে গণ-অনশন, স্বেচ্ছা কারাবরণসহ কয়েকটি কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়। আজ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কর্মসূচির বিষয়ে তাঁদের পরামর্শ নেবেন তিনি।</p> <p>জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বুধবার আমাদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠক আছে। ধারণা করছি, আন্দোলন কর্মসূচির বিষয়ে মতামত নিতেই বৈঠক ডাকা হয়েছে।’  </p> <p>নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দুই দেশের মধ্যে ১০টি সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। প্রতিটি চুক্তিই দেশের স্বার্থবিরোধী। একতরফাভাবে ভারত লাভবান হয়েছে। এই চুক্তি-সমঝোতার প্রতিবাদে কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও দুর্নীতিবিরোধী কর্মসূচি গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত হয়।</p> <p>গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ সফল করায় স্থায়ী কমিটি সন্তোষ প্রকাশ করেছে। এ ইস্যুতে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণের জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।</p> <p>বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সভায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, নজিরবিহীন দুর্নীতি, ব্যাংকগুলো থেকে ঢালাও ঋণ গ্রহণের ফলে ঋণ ফাঁদ সৃষ্টি হচ্ছে। এতে জনগণের ওপর চাপ বাড়ছে। এ বিষয়গুলোকে নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে জনগণের সামনে তুলে ধরতে লিফলেট বিতরণ, সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।</p> <p>সভায় সম্প্রতি ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক লালমনিরহাট ও ঠাকারগাঁও সীমান্তে দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার নিন্দা জানানো হয়। সীমান্তহত্যা বন্ধে সরকারের উদ্যোগ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।</p>