<article> <p style="text-align: justify;">আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে গুরুত্ব দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তারা চাইছে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক। এ জন্য দলের নেতাদের অধিক হারে প্রার্থী হওয়ার জন্য উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। দলের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে এমনটা জানিয়েছেন।</p> <p style="text-align: justify;"><img alt="ভোটে হস্তক্ষেপ রোধে কঠোর আ. লীগ" height="360" src="https://www.kalerkantho.com/_next/image?url=https%3A%2F%2Fcdn.kalerkantho.com%2Fpublic%2Fnews_images%2F2024%2F04%2F03%2F1712085544-ae7e0ee6ff36340922ec15a9e5fce510.jpg&w=1920&q=100" width="600" /></p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, বিভিন্ন সময়ে জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে সমালোচনায় পড়েছে আওয়ামী লীগ। এ সমালোচনার বড় বিষয় হলো প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন এবং ভোটার উপস্থিতি কম হওয়া। ফলে বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীসংখ্যা বাড়ানোয় গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। এ জন্য তারা নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">তারা দলের নেতাকর্মীদের জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত রেখেছে। আওয়ামী লীগের যে কেউ চাইলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একাধিক নেতার মতে, দলের প্রার্থিতা উন্মুক্ত রাখার উদ্দেশ্য হলো নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়। বেশিসংখ্যক প্রার্থী থাকলে ভোটার উপস্থিতি বাড়ারও সম্ভাবনা বাড়বে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">কিন্তু অনেক উপজেলায় মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্যরা নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার ফন্দি করছেন। এ বিষয়ে নানা অভিযোগ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কাছে আসায় তারা ক্ষুব্ধ।</p> <p style="text-align: justify;">আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, দলের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা ও মন্ত্রিসভার সদস্যের বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থীকে প্রকাশ্য সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকেও এসব অভিযোগের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">গত রবিবার আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও টাঙ্গাইল-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। উপজেলা নির্বাচনে আব্দুর রাজ্জাক তাঁর খালাতো ভাইকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">সম্প্রতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব তালুকদারকে প্রার্থী ঘোষণা করেন। এমন ঘোষণায় প্রার্থী হতে আগ্রহী অন্য নেতারা ক্ষোভ জানিয়েছেন।</p> <p style="text-align: justify;">আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা কালের কণ্ঠকে জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি চান না মন্ত্রিসভার কোনো সদস্য, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতা উপজেলা পরিষদে কারো পক্ষে কাজ করুন। এ বিষয়ে তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে কঠোর বার্তা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। শেখ হাসিনার নির্দেশনা পেয়ে ওবায়দুল কাদের একাধিকবার মন্ত্রী, এমপিদের উপজেলা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করতে বলেছেন। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি মন্ত্রী, এমপি ও দলের নেতাদের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অবৈধ হস্তক্ষেপ না করতে কঠোর নির্দেশনা দেন।</p> <p style="text-align: justify;">আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে উপজেলা নির্বাচনে কাউকে সমর্থন দেবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনেক জায়গায় মন্ত্রী, এমপি, সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এসেছে। আমরা সেগুলো পর্যবেক্ষণ করছি। যারা দলকে খণ্ডিত করার চেষ্টা করবে, নিজের মতো করে দল চালানোর চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।’</p> <p style="text-align: justify;">আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, এমন বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য আছেন যাঁরা বিগত জাতীয় নির্বাচনের আগে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নেন। ওই সংসদ সদস্যরা যখন উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন তখন স্থানীয় সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলতেন। কিন্তু এখন তাঁরা নিজেরাই উপজেলা নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছেন। তাঁদের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আসছে।</p> <p style="text-align: justify;">আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর একাধিক নেতা জানান, দলের পক্ষ থেকে প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে প্রার্থী হতে আগ্রহী অনেকেই দোয়া চাইতে আসছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা সবাইকেই প্রার্থী হতে উৎসাহ দিচ্ছেন। দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, প্রার্থীর সংখ্যা বাড়লে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে।</p> <p style="text-align: justify;"><b>মন্ত্রী, এমপিদের প্রতি ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনা</b></p> <p style="text-align: justify;">গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যসহ দলীয় এমপি ও নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সাংগঠনিক নিদের্শনা প্রদান করেন।</p> <p style="text-align: justify;">বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন দুটি ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে এবং ধাপে ধাপে উপজেলা পরিষদগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এখানে মন্ত্রী-এমপিদের কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করার সুযোগ থাকবে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীসহ নির্বাচন পরিচালনার কাজে নিয়োজিত প্রশাসনও শতভাগ নিরপেক্ষতা বজায় রাখবে। কেউ কোনো ধরনের অবৈধ হস্তক্ষেপ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।</p> <p style="text-align: justify;">আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করলেও দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জনগণের মতামতের সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটবে এবং ভোটাররা নির্বিঘ্নে নিজেদের ভোট প্রদান করবেন। নির্বাচনে কোনো প্রকার অবৈধ হস্তক্ষেপ এবং নির্বাচনের নিরপেক্ষতা বিনষ্ট করার কর্মকাণ্ডে জড়িত না থাকার জন্য মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের দলীয় এমপি ও নেতাকর্মীদের প্রতি সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।</p> </article>