<p style="text-align:justify">মুসলিমদের কাছে পোষা প্রাণী হিসেবে জনপ্রিয় একটি প্রাণী বিড়াল। সবচেয়ে বেশি হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) বিড়াল খুব পছন্দ করতেন। রাসুলের দরবারে থাকা অবস্থায় একবার তাঁর চাদরের আস্তিন থেকে একটি বিড়ালছানা বেরিয়ে পড়ে। তখন আল্লাহর রাসুল (সা.) তাকে মজা করে বলেন, ‘ইয়া আবু হুরায়রা !’ অর্থাৎ ‘হে বিড়ালের পিতা!’ আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, বিড়াল নামাজ বিনষ্ট করে না। কারণ তা ঘরের জিনিসপত্রের অন্তর্ভুক্ত। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৬৯)</p> <p style="text-align:justify">বিশেষজ্ঞদের মতে, বাড়িতে বিড়াল পালনের বহু উপকারিতা রয়েছে। পোষা প্রাণী হিসেবে কুকুর বিড়ালের চেয়ে বেশি প্রভুভক্ত হলেও উপকারিতার দিক থেকে বিড়াল উপকারী ও পরিচ্ছন্ন। বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে তা প্রমাণিতও হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">ব্রিটিশ লেখক মারলন বলেন, ‘বিড়াল চমৎকার এক পোষা প্রাণী! এটি বুদ্ধিমান, স্বাধীন, স্নেহশীল, অনুগত এবং তুলনামূলকভাব বেশ শান্ত। বিড়াল নিজেই খুব পরিষ্কার থাকে। অন্য অনেক পোষা প্রাণীর তুলনায় প্রতিদিন একে রক্ষণাবেক্ষণে ও যত্নে খুব কম সময় দিতে হয়। তাদের থাকার জন্য বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না; ছোট বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টে বসবাসকারী লোকেদের জন্যও এটি বেশ উপযোগী।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, ‘অ্যালার্জিতে ভুগছেন এমন লোকদের জন্য বিড়ালও একটি দুর্দান্ত পছন্দ হতে পারে। বিড়াল অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় কম অ্যালার্জেন উৎপাদন করে।’</p> <p style="text-align:justify">পোষা প্রাণী হিসেবে বিড়াল পালন মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতেও বেশ অবদান রাখতে পারে। ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারিতে-‘Medium ’-এ প্রকাশিত Amelia Carpenter-এর লেখা আর্টিকল ‘Cats are better than dogs, even science says so’ -তে উল্লেখ করেন—‘বিড়াল নাটকীয়ভাবে আপনার স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে। আমি বলতে চাচ্ছি কুকুরও হয়তো পারে, কিন্তু তুলনামূলকভাবে কুকুরের গায়ে দুর্গন্ধ বেশি থাকে। বিড়ালের সঙ্গে আদরে ভালোবাসায় সময় কাটানো মানুষের হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা ৪০ শতাংশ কমে যায়।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, ‘তুলতুলে ছোট বন্ধুসুলভ বিড়ালের সাহচর্যে আপনি আপনার রক্তচাপ ও নিত্যদিনের চাপ (Stress) কমাতে পারেন। বিড়াল কুকুরের চেয়ে বেশিদিন বাঁচে বলে আপনি সত্যিই বিড়ালের প্রদত্ত স্বাস্থ্য সুবিধাগুলো সবচেয়ে বেশি নিতে পারেন।’</p> <p style="text-align:justify">মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক তাঁদের এক গবেষণায় চার হাজার ৫০০ জন পুরুষ ও মহিলাকে পর্যবেক্ষণ করে দেখেন যে যারা কখনো বিড়ালের সঙ্গে সময় কাটায়নি তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার আশঙ্কা ৪০ শতাংশ বেশি ছিল, যারা বিড়াল পালন করেছে তাদের  তুলনায়। </p> <p style="text-align:justify">পরিশেষে বলা যায়, বিড়ালকে ভালোভাবে তত্ত্বাবধান করলে এটি আমাদের অনেক উপকারে আসতে পারে। এটি আমাদের একাকিত্ব দূর করে আমাদের চাপ মুক্ত ও সুস্থ থাকতে সহায়তা করতে পারে। আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।</p> <p style="text-align:justify">তাই তো উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতেও বাড়িতে পোষা প্রাণী হিসেবে বিড়াল রাখার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। রাসুলের প্রিয় সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) বিড়ালের সঙ্গে সব সময় আনন্দঘন মুহূর্ত কাটাতেন। ইসলামী জীবনযাপনের পাশাপাশি হয়তো বিড়ালের নিরবচ্ছিন্ন সাহচর্যেই তিনি সব সময় প্রাণবন্ত ছিলেন।</p> <p style="text-align:justify"><em>রেফারেন্স :</em></p> <p style="text-align:justify"><em>1) https://www.clevelandheartlab.com/</em></p> <p style="text-align:justify"><em>2) https://medium.com/</em></p> <p style="text-align:justify"><em>3) https://tree-nation.com/projects/inside-tree-nation/article/8759-what-are-the-co2-emissions-of-cats-and-dogs</em></p> <p style="text-align:justify"><em>4) https://gillesberdugo.medium.com/environmental-impact-having-pet-32f3dc5e9e77</em></p>