<p style="text-align: justify;">ইসলাম মানুষের জীবন-জীবিকার সমস্যা সমাধানের জন্য সর্বপ্রথম উপার্জনে উদ্যমী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কোরআন ও হাদিসে নানাভাবে মানুষকে জীবিকার অনুসন্ধানে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নামাজ আদায় শেষে তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) অনুসন্ধান কোরো।’ (সুরা : জুমা, আয়াত : ১০)</p> <p style="text-align: justify;">রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ফজরের নামাজ আদায়ের পর জীবিকার সন্ধান না করে তোমরা ঘুমিয়ে থেকো না।’ (কানজুল উম্মাল, হাদিস : ৪১৬৮)</p> <p style="text-align: justify;">সম্পদ উপার্জনের পর তার নিজের প্রয়োজন ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ব্যয় করার প্রথম নির্দেশ এসেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তি নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী খরচা দেবে আর যার জীবিকা সংকীর্ণ করে দেওয়া হয়েছে (অর্থাৎ যে গরিব) সে আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তা থেকে খরচা দেবে। আল্লাহ যাকে যতটুকু দিয়েছেন তার বেশি ভার তার ওপর অর্পণ করেন না। আল্লাহ সংকটের পর স্বাচ্ছন্দ্য সৃষ্টি করে দেবেন।’ (সুরা : আত-তালাক, আয়াত : ৭)</p> <p style="text-align: justify;">আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘একটি দিনার তুমি আল্লাহর পথে ব্যয় করলে, একটি দিনার গোলাম আজাদ করার জন্য এবং একটি দিনার মিসকিনদের দান করলে এবং আর একটি তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করলে। এর মধ্যে (সওয়াবের দিক থেকে) ওই দিনার উত্তম, যা তুমি পরিবারের লোকদের জন্য ব্যয় করলে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২২০১)</p> <p style="text-align: justify;">অর্থ ব্যয়ে ইসলাম মানুষকে সংযমী, বাস্তববাদী, মধ্যপন্থী ও উদার হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মুমিন প্রয়োজনে উদারতার সঙ্গে ব্যয় করবে এবং প্রয়োজন না হলে সংযত হবে। অপচয় ও অপব্যয় থেকে বেঁচে থাকবে। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা খাও ও পান করো; অপচয় কোরো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীকে ভালোবাসেন না।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩১)</p> <p style="text-align: justify;">অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি তোমার হাত তোমার গ্রীবায় আবদ্ধ করে রেখো না এবং তা সম্পূর্ণ প্রসারিতও কোরো না, তা হলে তুমি তিরস্কৃত ও নিঃস্ব হয়ে পড়বে।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৯)</p> <p style="text-align: justify;">এ ক্ষেত্রে অনেকেই বাড়াবাড়ি করে থাকেন। এ জন্য সম্পদ যত বেশিই থাকুক না কেন, কোনোক্রমেই অপচয়, অপব্যয় করা যাবে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং যারা ব্যয় করার সময় অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্য করে না; বরং তা হয় উভয়ের মাঝখানে ভারসাম্যমান।’ (সুরা : আল-ফুরকান, আয়াত : ৬৭)</p>