<p>রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে যে কয়েকজন নারী ব্যবসায়ীর নাম জানা যায়, তাঁদের একজন কায়লা উম্মে বনি আনমারিয়া (রা.)। রিজালশাস্ত্রের গ্রন্থগুলোতে তাঁর জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায় না। কেউ কেউ বলেছেন, তিনি বনি আনমারের সদস্য এবং মক্কার অধিবাসী ছিলেন। দ্বিনদারিতে অত্যন্ত অগ্রগামী ছিলেন।</p> <p>আর কেউ কেউ বলেছেন, একজন আনসারি সাহাবি ছিলেন। বনি আনমারের বোন বা কন্যা ছিলেন। সুনানে ইবনে মাজাহতে ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ে তাঁর একটি হাদিস উল্লেখ করা হয়েছে। যে হাদিসের বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, তিনি নবীজি (সা.)-এর যুগে বাজারে ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন।</p> <p>নবীজি (সা.) ওমরাহ করতে মক্কায় গেলে তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে নিজের পেশার কথা জানান এবং ব্যবসার পদ্ধতি তুলে ধরেন। নবীজি (সা.) তাঁকে ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে নিষেধ না করে সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবসা করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো ওমরাহ আদায়কালে মারওয়া পাহাড়ের পাদদেশে আমি তাঁর কাছে উপস্থিত হলাম।</p> <p>আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি একজন ব্যবসায়ী নারী। আমি কোনো জিনিস কিনতে চাইলে আমার কাঙ্ক্ষিত  মূল্যের চেয়ে কম দাম বলি। এরপর দাম বাড়িয়ে বলতে বলতে আমার কাঙ্ক্ষিত মূল্যে গিয়ে পৌঁছি। আবার আমি কোনো জিনিস বিক্রয় করতে চাইলে কাঙ্ক্ষিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য চাই। এরপর দাম কমাতে কমাতে অবশেষে আমার কাঙ্ক্ষিত মূল্যে নেমে আসি।</p> <p>রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, হে কায়লা! এরূপ কোরো না। তুমি কিছু কিনতে চাইলে তোমার কাঙ্ক্ষিত মূল্যই বোলো, হয় তোমাকে দেওয়া হবে, নয় দেওয়া হবে না। তিনি আরো বলেন, তুমি কোনো কিছু বিক্রি করতে চাইলে তোমার কাঙ্ক্ষিত দামই চাও, হয় তুমি দিলে অথবা না দিলে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২২০৪)</p> <p>অবশ্য হাদিসের বর্ণনা থেকে এই ধারণা হতে পারে যে, কায়লা (রা.) সাধারণ ব্যবসায়ীদের মতো সারা বছর ব্যবসা করতেন না, বরং হজ-ওমরাহ বা বিশেষ মৌসুম ব্যবসা করতেন। কেননা তিনি ওমরাহ সফরকালে মক্কার ব্যস্ত এলাকায় নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আর মক্কার বহু মানুষ এমন মৌসুমি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।</p> <p><em>সূত্র : তাহজিবুল কামাল : ৩৫/২৮৮; আত-তাবাকাতুল কুবরা : ৮/২৩৯</em><br />  </p>