<p style="text-align:justify">রিমান্ডে বেরিয়ে আসছে ভয়ংকর সব তথ্য। গ্রেপ্তার হওয়ারা বলছেন, দেশের বড় বড় দুর্নীতির সবকটির সঙ্গেই জড়িত ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা। বিশেষ করে তার আত্মীয়-স্বজনদের কারণে ব্যস্ত সময় পার করতে হতো বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের। তবে তাদের বেশির ভাগই  কমিশনের বড় একটি অংশ নিজেদের পকেটে রেখে দিতেন। </p> <p style="text-align:justify">আবার অনেক কর্তাব্যক্তি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের কথা বলে নিজেরাই বাগিয়ে নিতেন বড় বড় কাজ। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতদের এমন তথ্যে রীতিমতো চোখ কপালে উঠেছে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের। </p> <p style="text-align:justify">তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হলেও তাদের বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে তাদের দেওয়া সব তথ্য এখনই আমলে নেওয়া হচ্ছে না। এগুলো যাচাইবাছাইয়ের কাজ চলছে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সম্পর্কে আগে আসা অভিযোগগুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। </p> <p style="text-align:justify">সূত্র বলছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির বিষয়ে এখনো মুখ না খুললেও বেশির ভাগ সময়ই তিনি নীরব থাকছেন। সালমান এফ রহমানের ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি দাবি করেছেন, বিষয়টিতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশনা ছিল। আমি কেবল ম্যাসেঞ্জার ছিলাম মাত্র।</p> <p style="text-align:justify">সালমান দাবি করেছেন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত নির্বাচনের বিষয়ে যাবতীয় নীলনকশা করেছিলেন। কেবল নির্বাচনের জন্যই তারা কয়েকজন শত কোটি টাকা নিজেদের পকেটে ভরেছেন। জ্বালানি সেক্টরের সবকিছুই নিজে ডিজাইন করতেন নসরুল হামিদ বিপু। বাপেক্সকে দেশের কল্যাণের বাইরে নিজের কল্যাণে ব্যবহার করতেন বিপু।</p> <p style="text-align:justify">গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের দাবি, সরকারের নির্দেশেই তিনি অপরাধে জড়িয়েছেন। তিনি একজন ব্যবসায়ী ছিলেন, তার কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে মনোনয়ন দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কাকে, কীভাবে এবং কত টাকা দিয়েছেন তা সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন তিনি।</p> <p style="text-align:justify">একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে পলক লোপাট করেছেন কয়েক হাজার কোটি টাকা। এর বড় একটি অংশ নানা কায়দায় পাচার করেছেন বিদেশে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তার নাম ভাঙিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন তথ্য প্রযুক্তি খাতে। শুধু পলক নন, হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তার স্ত্রী আরিফা জেসমিন কণিকাও। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া আমেরিকায় গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।</p> <p style="text-align:justify">তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের নামে একের পর এক প্রকল্প বানিয়ে বাজেট থেকে শত শত কোটি টাকা লোপাট করেন। সজীব ওয়াজেদ আইসিটির উপদেষ্টা হওয়ায় এ খাতে ছিল না কোনো জবাবদিহি। পলকের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলার সাহস করেনি।</p> <p style="text-align:justify">সবশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় হলফনামায় দেওয়া তথ্যমতে, পলকের গত পাঁচ বছরে সম্পদ ও আয় বাড়ে অস্বাভাবিক হারে। নিজের অবৈধ আয়ের অর্থ বৈধ করতে স্ত্রীকে বানিয়েছেন উদ্যোক্তা। তার স্ত্রীর নামে সিংড়ায় রয়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ বিঘা জমি। ঢাকায় কমপক্ষে ১৫টি ফ্ল্যাট। পলক ও তার স্ত্রীর নামে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও আমেরিকায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়ি আছে।</p> <p style="text-align:justify">অভিযোগ রয়েছে, নামে-বেনামে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে পলক ও তার স্ত্রীর কণিকার। মাত্র ১০ বছরে তিনি কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।</p> <p style="text-align:justify">বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিউমার্কেট এলাকায় হকার শাহজাহান হত্যা মামলায় এনটিএমসির সাবেক ডিজি বরখাস্তকৃত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে গোয়েন্দা দপ্তরে গত তিন দিন ধরে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে খুন, গুম ও অসংখ্য ব্যক্তির ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ। </p> <p style="text-align:justify">তবে জিয়াউল আহসানের দাবি, তিনি সবকিছুই করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকের নির্দেশে। এনটিএমসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে হলেও তা চলত তারিকের ইশারায়।</p>