শুরুটা করেছিলেন সনির কম্পিউটার সায়েন্স ল্যাবরেটরির গবেষকরা। ১৯৯৭ সালে চালু এই গবেষণাগারের কয়েক বছরের সাধনার ফল হিসেবে ২০১৬ সালে তৈরি হয় ‘ড্যাডি’স কার’ ও ‘মিস্টার শ্যাডো’ নামের দুটি গান। এই কাজের জন্য ফ্লোমেশিনস নামের একটি কম্পিউটার প্রগ্রাম তৈরি করা হয়। তথ্যভাণ্ডারে থাকা অসংখ্য গান থেকে কম্পিউটার প্রগ্রামটি গানের ধরন চিনতে পারে।
বিনোদনেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা!
- শুধু দৈনন্দিন কাজেই নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার শুরু হয়েছে সিনেমা, গান, কবিতায়ও। বদলে যাচ্ছে কাজের এই অঙ্গনের কাজের ধরন। লিখেছেন আনিকা জীনাত
notdefined

এআইয়ের সুর করা এসব গান ‘মৌলিক’ মনে হলেও আসলে তা অন্য কোনো গান থেকে ধারণা নিয়েই তৈরি হয়। যেমন—‘ড্যাডি’স কার’ গানটি তৈরি হয়েছে জনপ্রিয় ব্যান্ড বিটলসের গানের সুরের অনুকরণে। গানটির কথা লিখেছিলেন ফ্রান্সের বেনোত ক্যারে।
এআইয়ের এমন ‘প্রতিভা’য় প্রভাবিত হয়ে একই ধরনের কাজে নেমে পড়েন ইউটিউব সংগীত তারকা টারিয়ান সাউদার্ন। কিছু ওপেন সোর্স প্রগ্রাম ব্যবহার করে ‘ব্রেক ফ্রি’ শিরোনামের একটি গানও তৈরি করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যাকিং ট্র্যাক তৈরিতে তিনি এআইয়ের সহায়তা নেন। ব্যবহার করেন অ্যাম্পার মিউজিক, আইবিএম ওয়াটসন ও গুগল ম্যাজেন্টা নামের কিছু টুল।
এদিকে বিনোদনের নতুন এই কৌশলের জন্য মুখিয়ে আছে অনেক নির্মাতা, বিজ্ঞাপনী সংস্থা ও গেইম স্টুডিও। এই চাহিদার কথা মাথায় রেখে পিরে ব্যারু, ভিনসেন্ট ব্যারু, ড্যানিশ স্টিফেন ও আরনড ডেকার নামের চার উদ্যোক্তা মিলে তৈরি করেছেন ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ভার্চুয়াল আর্টিস্ট’ বা এইভা প্রযুক্তি। লুক্সেমবার্গ ও লন্ডনে এরই মধ্যে এইভার স্টুডিও বসানো হয়েছে। সিনেমা, বিজ্ঞাপন, টিভি সিরিজসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের টাইটেল ট্র্যাক তৈরিতে কাজে লাগবে এইভা। এইভার উদ্যোক্তারা জানান, সিনেমাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চিত্রনাট্য ও দৃশ্যের সঙ্গে সংগতি রেখে সংগীত যুক্ত হয়। প্রচলিত পদ্ধতিতে অনেক সংগীত কয়েক ধাপে ভেঙেচুরে একটি ট্র্যাক তৈরি করা হয়। এতে গবেষণাসহ কাজটি শেষ করতে অনেক সময় চলে যায়। এ ক্ষেত্রে ‘জাদু’র মতো কাজ করবে এইভা। দুই মিনিটেই তৈরি করা যাবে ট্র্যাক। গানগুলো মানুষ নাকি এআইয়ের তৈরি তা কেউ ধরতে পারবে না। এইভা তৈরিতে কম্পিউটার সিস্টেমকে ‘ডিপ নিউরাল নেটওয়ার্কে’ রূপান্তর করা হয়েছে। তথ্যভাণ্ডারে যুক্ত করা হয়েছে অতীতে তৈরি বিখ্যাত সব সংগীত। সেসব সংগীত ভেঙেচুরেই তৈরি হচ্ছে নতুন ট্র্যাক। তবে গানের জগতে এআইকে হুমকি মনে করেন না এইভার উদ্যোক্তারা। বরং সৃষ্টিশীল কাজের মান বাড়াতে সহায়তাকারী টুল হিসেবেই এটি তৈরি করেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
সম্পর্কিত খবর