<p>পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) পরিবহন পুলে তিনটি গাড়ি দীর্ঘদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে। এই গাড়ি তিনটির ক্রয়মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে গাড়িগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এগুলোর মেরামত নিয়ে প্রশাসনের তেমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা বলছেন, গাড়িগুলো মেরামতের উদ্যোগ না নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেমন অর্থের অপচয় হচ্ছে, তেমনি খোলা আকাশের নিচে নষ্ট হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সম্পদ।</p> <p>সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো এবং নতুন প্রশাসনিক ভবনের মাঝের জায়গায় শিক্ষার্থীদের ১ নম্বর বাসটি পড়ে আছে। দীর্ঘদিন ধরে বাসটি পড়ে থাকায় এর বডিতে মরিচা ধরে গেছে। বাসের পাশেই টয়োটা কম্পানির একটি অ্যাভেঞ্জা গাড়ি এবং এর একটু সামনে কালো রঙের পাজেরো কম্পানির একটি গাড়ি পড়ে আছে। গাড়িগুলোকে যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারণে বডি, ইঞ্জিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে।</p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের বাসটি ২০২১ সাল থেকে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। এই বাসটির ইঞ্জিন এবং ফিটনেসে সমস্যা রয়েছে। ২০২২ সালে গাড়িটি মেরামতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে বরাদ্দ পায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু সেই অর্থ পর্যাপ্ত না হওয়ায় গাড়িটি মেরামত করা সম্ভব হয়নি। পাজেরো গাড়িটিও ২০২১ সালে নষ্ট হয়ে যায়। অন্যদিকে টয়োটার অ্যাভেঞ্জা গাড়ির গিয়ার বক্সের সমস্যার কারণে ২০২২ সাল থেকে এটি বসিয়ে রাখা হয়েছে।</p> <p>শিক্ষার্থী আবু বকর বলেন, ‘এই গাড়িগুলো অনেক দিন ধরে পড়ে আছে। এগুলো মেরামত করা হচ্ছে না, আবার ভালো একটা জায়গায় রাখাও হচ্ছে না। খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ছে ও বৃষ্টিতে ভিজছে।’ এদিকে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ১ নম্বর বাসটি বন্ধ এবং আরো দুটি বাস বসিয়ে রেখে পরিবহন পুল শিক্ষার্থীদের জন্য বিআরটিসির দুটি দোতলা বাস ভাড়ায় ব্যবহার করছে। এতে বিপুল পরিমাণ অর্থ নষ্ট হচ্ছে। পাবনা বিআরটিসি ডিপোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য বিআরটিসির একটি বাস দিনে ছয়টি ট্রিপ দেয়। বিআরটিসির প্রতি ট্রিপের জন্য ভাড়া নেওয়া হয় তিন হাজার ২০০ টাকা।</p> <p>তবে পরিবহন পুল বলছে, ২০২২ সালে সরকারের জ্বালানি সংকোচন নীতির কারণে ইউজিসি থেকে বাসের জ্বালানি বরাদ্দ ২০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়। তখন কয়েকটি বাস বন্ধ রাখার উপক্রম হয়। তবে জ্বালানি বরাদ্দ অর্ধেক করে দিলেও যানবাহন ভাড়ার বরাদ্দ ঠিকই রাখে সরকার। পরিবহন পুলের প্রশাসক ড. রাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ইউজিসি থেকে টাকা বরাদ্দ পেলে গাড়িগুলো মেরামত করতে পারব। সরকার যেহেতু ভাড়া বাসের জন্য বরাদ্দ রেখেছে, তাই আমাদের ভাড়া বাস চালাতে অসুবিধা হচ্ছে না।’</p>