ব্যাংকারদের দায়িত্বহীনতায় দুর্যোগে ব্যাংক খাত উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ব্যাংকের ব্যর্থতা বা বর্তমান নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার দায় কোনো ব্যাংকার এড়াতে পারেন না।
গতকাল শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরায় ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (আইইউবি) ২৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. মনসুর আরো বলেন, ‘আমানতকারীদের আস্থা হারালে চলবে না। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে প্রত্যেক আমানতকারী টাকা ফেরত পাবেন।
ধৈর্য ধরতে হবে। কিন্তু তার আর প্রয়োজন হবে না। এরই মধ্যে ব্যাংক খাত স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে। দুর্বল ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বিদেশি মুদ্রার বাজারও স্থিতিশীল। বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি হিসাব এখন উদ্বৃত্ত। সুতরাং এখন ভয়ের আর কোনো কারণ নেই।’
গভর্নর আরো বলেন, ‘আমরা একটা বড় ধাক্কা সামাল দিয়েছি।
সরকার গঠনের শুরুতে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি, মূল্যস্ফীতি, ভাঙাচুরা ব্যাংকিং খাত ও দুর্বল অর্থনীতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছি। কিন্তু এরই মধ্যেই চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত দেখা দিয়েছে। চলতি হিসাব ও আর্থিক হিসাব—দুটিই এখন উদ্বৃত্ত। লেনদেনের ভারসাম্যও শক্তিশালী। বিদেশি মুদ্রার বাজারও স্থিতিশীল। রিজার্ভ ভালো, প্রবাস আয়ও (রেমিট্যান্স) ভালো। এ জন্য আমি বিদেশে থাকা আমাদের বাংলাদেশি ভাইদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাঁরা কঠোর পরিশ্রম করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠান।’
গভর্নর বলেন, ‘ব্যাংক খাত সংস্কারে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেসব কাজ এখনো চলমান। এর ফলে ইতিবাচক ফল আসা শুরু করেছে। জানুয়ারিতে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কের ঘরে নেমে এসেছে। আশা করি, এ বছরের জুনের মধ্যে দেশের মূল্যস্ফীতি ৭ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যে নেমে আসবে। তবে আগামী বছরে (২০২৬) মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের নিচে নিয়ে আনা সম্ভব।’
রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং সনদ দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. এম আমিনুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান, আইইউবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান দিদার এ হোসেইন; এডুকেশন, সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকারিয়া খান, উপাচার্য অধ্যাপক ম. তামিম প্রমুখ।
আইইউবির কোষাধ্যক্ষ খন্দকার মো. ইফতেখার হায়দার, রেজিস্ট্রার মো. আনোয়ারুল ইসলামসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।