<p>দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বিদ্যমান উচ্চ খেলাপি ঋণের হার (এনপিএল) আর্থিক খাতের অগ্রগতিতে বিরাট হুমকিস্বরূপ বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। উচ্চ খেলাপি ঋণ থাকলে ব্যাংকগুলোকে প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি বাড়াতে হয়, যা মূলত মূলধন ঘাটতির জন্য অন্যতম কারণ। খেলাপি ঋণ হ্রাস ছাড়া ব্যাংকিং ব্যবস্থার মূলধনের পর্যাপ্ততা উন্নতি সম্ভব হবে না বলেও মনে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।</p> <p>বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে গ্রাহকদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৮.১৬ শতাংশ। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯.৯৩ শতাংশ। ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ কিছুটা কমে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকায় নামে, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ শতাংশ।</p> <p>ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংক আরো বলেছে, ব্যাংকিং খাত ২০২৩ সালজুড়ে বেশ কিছু সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম হলো ডলার সংকট, টাকার মান হ্রাস, ব্যাংকিং খাতে তারল্যের সংকট এবং খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি। ফেড রেট বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে আমদানি ব্যয়ের অতিবৃদ্ধি, বৈদেশিক বিনিয়োগের অন্তঃপ্রবাহ হ্রাস, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় প্রবাহ হ্রাসের কারণে সার্বিক লেনদেন হিসাবে ঘাটতি হয়। এতে অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ডলার বিক্রি করে, যা টাকার বিনিময়ে বৈদেশিক মুদ্রাহারকে বৃদ্ধি করে এবং সামগ্রিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তারল্য সংকট দেখা যায়। ১০ বছর ধরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো (যাদের খেলাপি ঋণ গড়ে ২০ শতাংশের বেশি রয়েছে) ন্যূনতম মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির ফলে আমানতের ঋণাত্মক প্রকৃত সুদের হার আমানতকারীদের ব্যাংকে টাকা রাখতে নিরুৎসাহ করে।</p>