<p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যার তিন মাসের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেলখানায় আটক জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। ৪৮ বছর আগে সংঘটিত এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচারে হওয়া মামলাটি </span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জেলহত্যা মামলা</span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামে পরিচিত। প্রায় এক দশক আগে সর্বোচ্চ আদালতে এই মামলার চূড়ান্ত রায় হলেও দণ্ডিত ১১ আসামির মধ্যে ১০ জনই এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০১৪ সালে সর্বোচ্চ আদালত তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। দণ্ডিতদের মধ্যে আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পেয়েছিলেন। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২০ সালের ১১ এপ্রিল তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। জেলহত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া তিন আসামি হলেন রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও দফাদার মো. আবুল হাশেম মৃধা। এই তিন আসামি কোথায় আছেন, সে ব্যাপারে সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া কর্নেল (অব.) এম বি নূর চৌধুরী কানাডায় এবং লে. কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে আছেন বলে সরকার জানতে পেরেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় এ দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নূর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আইনি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে কানাডার আদালতে বাংলাদেশ একটি আবেদনও করেছিল। অন্যদিকে রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরাতে মার্কিন সরকারের বিভিন্ন স্তরে অনুরোধ জানিয়ে আসছে সরকার। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইনমন্ত্রী আনিসুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জেলহত্যা মামলার রায় আংশিক কার্যকর হয়েছে। পলাতক আসামিদের মধ্যে যাঁরা বিদেশে আছেন, তাঁদের খুঁজে বের করে দেশে ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।</span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর একদল বিপথগামী সদস্য বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পরপরই তৎকালীন কর্তৃপক্ষ তাঁর ঘনিষ্ঠ চার সহকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা হলেন মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামান। গ্রেপ্তারের আড়াই মাসের মাথায় ৩ নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে তাঁদের হত্যা করা হয়। ঘটনার পরদিনই তৎকালীন কারা উপমহাপরিদর্শক কাজী আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছিলেন। সেটিই জেলহত্যা মামলা নামে পরিচিত। মামলায় সেনাবাহিনীর রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, মোসলেহ উদ্দিনের নেতৃত্বে চার-পাঁচজন সেনা সদস্য কারাগারে ঢুকে চার নেতাকে হত্যা করেন। গুলি করার পর বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। মনে করা হয়, মূলত রাজনৈতিক কারণেই এই মামলার তদন্ত থেমে ছিল দীর্ঘ ২১ বছর। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হয়। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিচার শেষে ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তিন আসামি রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও দফাদার মো. আবুল হাশেম মৃধাকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১২ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মেজর (অব.) বজলুল হুদা, মেজর (অব.) এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশিদ, লে. কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম, কর্নেল (অব.) এম বি নূর চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরী, মেজর (অব.) আহম্মদ শরিফুল হোসেন, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ, ক্যাপ্টেন (অব.) কিশমত হাশেম এবং ক্যাপ্টেন (অব.) নাজমুল হোসেন আনসার। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড হলে রায় কার্যকর করতে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে। এ জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ মামলার নথিপত্র হাইকোর্টে পাঠাতে হয়, যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত। জেলহত্যা মামলার রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। অন্যদিকে বিচারের সময় কারাগারে থাকা সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা এবং এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ (ল্যান্সার) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স ও আপিলে শুনানির পর ২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। এ রায়ে মৃত্যুদণ্ডের তিন আসামির মধ্যে রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে মারফত আলী শাহ ও দফাদার আবুল হাশেম মৃধাকে খালাস দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে চার আপিলকারীকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে খালাস দেন উচ্চ আদালত। জাতীয় চার নেতার পরিবারের সদস্যরা রায়টিকে </span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত</span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ও </span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রহসনের রায়</span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বলে প্রত্যাখ্যান করেন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল এ আপিলের রায় হয়। রায়ে আপিল বিভাগ দফাদার মারফত আলী শাহ ও দফাদার মো. আবুল হাশেম মৃধাকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দেওয়া হাইকোর্টের রায় বাতিল করে বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন। অন্যদিকে জেলহত্যা মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা এবং এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ (ল্যান্সার) যাবজ্জীবন থেকে খালাস পেলেও বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি তাঁদের ফাঁসি কার্যকর হয়। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"> </p>