<p>“নুহাশপল্লী ভালো আছে। হুমায়ূন আহমেদ সবুজ প্রান্তর ও বৃক্ষ পছন্দ করতেন। এখানে সবুজে সেই বৃক্ষ-ছায়া মাখামাখি হয়ে আছে। তিনি বৃষ্টি ভালোবাসতেন। তাই এখানে বানিয়েছিলেন ‘বৃষ্টিবিলাস’ কটেজ। তাঁর বৃষ্টিবিলাসও ভালো আছে।”</p> <p>বাংলা সাহিত্যের রাজপুত্র হুমায়ূন আহমেদের পঞ্চম প্রয়াণ দিবসে গতকাল বুধবার গাজীপুরের নিভৃত নুহাশপল্লীতে এসে এসব কথা বলেন তাঁর পত্নী মেহের আফরোজ শাওন। তিনি বলেন, ‘নুহাশপল্লীতে হুমায়ূন আহমেদ স্মৃতি জাদুঘর হবে। সে লক্ষ্যে শিগগিরই আমরা কাজ শুরু করব। আশা করছি আগামী ১৩ নভেম্বর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনে স্মৃতি জাদুঘরের একটা অংশের উদ্বোধন হবে।’</p> <p>লেখক-পত্নী বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের আরেকটি স্বপ্ন ছিল ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ। এটি আমার একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। দেশের গুণীজন ও নীতিনির্ধারকদের প্রতি আমি অনুরোধ জানাচ্ছি, সবাই মিলে উদ্যোগ নিন।’</p> <p>শাওন বলেন, ‘নিজ গ্রাম নেত্রকোনার কেন্দুয়ার কুতুবপুরে গড়া শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ নিয়ে হুমায়ূন আহমেদের অনেক স্বপ্ন ছিল। স্কুলটাকে নতুন আঙ্গিকে শুরু করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি এখন ভালো অবস্থানে আছে। স্কুলের শিক্ষার্থীরা এ বছর জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল করেছে। এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পাস করেছে। বেশির ভাগ ছেলে-মেয়ে এ প্লাস পেয়েছে।’</p> <p>হুমায়ূন আহমেদের পঞ্চম প্রয়াণ দিবসে গতকাল সকাল থেকেই যেন নতুন করে জেগে ওঠে নুহাশপল্লী। গাজীপুরের পিরুজালী গ্রামে হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতিবিজড়িত নুহাশপল্লীতে গতকাল মরহুমের কবর জিয়ারত ছাড়াও সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিলসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।</p> <p>সকাল পৌনে ১১টার দিকে দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিতকে নিয়ে নুহাশপল্লীতে আসেন মেহের আফরোজ শাওন। কিছু সময় ঘরের ভেতরে অবস্থান করে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তিনি সন্তানদের নিয়ে স্বামী হুমায়ূন আহমেদের কবর জিয়ারত করেন। এ সময় শাওনের বাবা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী, মা তহুরা আলী, নুহাশপল্লীর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও হুমায়ূনভক্তরা উপস্থিত ছিলেন।</p> <p>নুহাশপল্লীতে এসে কবর জিয়ারত করেন হুমায়ূন আহমেদের তিন বোন সুফিয়া হায়দার, মমতাজ শহীদ ও রোকসানা আহমেদ।</p> <p>সকালে কবর জিয়ারত করতে আসেন বেশ কয়েকজন প্রকাশক ও নাট্য অভিনেতা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অন্যপ্রকাশের কর্ণধার মাজহারুল ইসলাম, অবসর প্রকাশনীর আলমগীর রহমান ও প্রতীক প্রকাশনীর নূর-ই-মোস্তাকিন আলমগীর, নাট্য অভিনেতা সৈয়দ হাসান সোহেল, মাজনুন মিজান প্রমুখ।</p> <p>এ ছাড়া ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হলুদ পোশাক পরে আসে শতাধিক ‘হিমু’। তারা হুমায়ূন আহমেদের কবর জিয়ারত করে ও কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।</p> <p>সকাল থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে শত শত ভক্ত ভিড় জমাতে শুরু করে নুহাশপল্লীতে। তারা এই লেখক-নির্মাতার আত্মার মাগফিরাত কামনায় কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। অনেকে নুহাশপল্লীতে লেখকের বৃষ্টিবিলাস, ভূতবিলাস, ঔষধি বাগান, দিঘি লীলাবতী, মৎস্যকন্যা সরোবর, দাবাঘর, গাছবাড়িসহ বিভিন্ন সৃষ্টি ঘুরে ঘুরে দেখে।</p>